শুরু করছি আল্লাহর নামে যিনি পরম করুণাময়, অতি দয়ালু

যাবতীয় প্রশংসা আল্লাহ তা' আলার যিনি সকল সৃষ্টি জগতের পালনকর্তা।

মুহাম্মদ (সাঃ)-আল্লাহর রাসূল

মুহাম্মদ (সাঃ)-সকল মানুষের জন্য উদাহরন, সর্বশ্রেষ্ঠ মানুষ, ও আল্লাহর রাসুল

আল কোরআন - মহান আল্লাহ প্রদত্ত কিতাব

এ সেই কিতাব যাতে কোনই সন্দেহ নেই। পথ প্রদর্শনকারী পরহেযগারদের জন্য,

আমাদেরকে সরল পথ দেখাও

আমরা একমাত্র তোমারই ইবাদত করি এবং শুধুমাত্র তোমারই সাহায্য প্রার্থনা করি।

আল্লাহ নিতান্ত মেহেরবান ও দয়ালু

সে সমস্ত লোকের পথ, যাদেরকে তুমি নেয়ামত দান করেছ। তাদের পথ নয়, যাদের প্রতি তোমার গজব নাযিল হয়েছে এবং যারা পথভ্রষ্ট হয়েছে।

Labels: ,

মুঠোফোনে পুলিশি সেবাঃ ডিএমপি-এর এ্যান্ড্রয়েড এ্যাপ

রানা প্লাজা দুর্ঘটনার অল্প ক'দিন পরের কথা, তখন আমি উত্তরা ক্রাইম ডিভিশনে কর্মরত। শুক্রবারে সাধারণত আমি অফিস করিনা,তবুও ওদিন গিয়েছিলাম আলিয়স ফ্রসেসে।ফ্রেঞ্চ স্পিকিং দেশগুলোতে ইউ এন মিশন করতে গেলে ফ্রেঞ্চ জানা বাধ্যতামূলক- এটা শুনে খোঁজ খবর করতেই যাওয়া। ফেরার পথে হঠাৎ শুনি আমার মোবাইল ফোনে কে জানি বার বার চেষ্টা করছে। কিঞ্চিৎ বিরক্ত হয়ে কয়েকবার রিসিভ করলাম, কথা ঠিকমত শোনা যাচ্ছিলনা। তবুও খানিকটা সন্দেহ হওয়ায় যা শুনলাম তাতে আত্মারাম খাঁচাছাড়া হয়ে যাবার দশা!

"স্যার, আমি উত্তরার লেক রোড থেকে বলছি। আমরা আটজন লিফটে উঠেছিলাম, লিফট ছিঁড়ে আমরা সবাই এখন আটকা পড়েছি।বাসায় কেউ নেই,মোবাইল ফোনে আপনার নাম্বার ছিলো- এখন প্লিজ স্যার আমাদেরকে বাঁচান"।

দ্রুত ওয়্যারলেস হ্যান্ডসেটে নিকটস্থ মোবাইল প্যাট্রোল টিমকে ঘটনাস্থলে যেতে বললাম। সেবার স্রষ্টার অপরিসীম দয়ায় আটজনকেই অক্ষত অবস্থায় উদ্ধার করতে পেরেছিলাম।

লিফটের ওই ভদ্রলোক দুদিন পরে আমার অফিসে এসেছিলেন বড়সড় একটা ফুলের তোড়া নিয়ে। অল্প কিছুদিন আগে উত্তরার ছয়টি থানা কভার করে এরকম একটি এ্যান্ড্রয়েড এ্যাপ রিলিজ করা হয়েছিলো উত্তরা ক্রাইম ডিভিশনের পক্ষ থেকে। ওই চরম বিপদের মুহূর্তে ওটা ব্যবহার করেই তিনি আমার সাথে যোগাযোগ করতে পেরেছিলেন, যার ফলে রক্ষা পেয়েছিল আটটি অমূল্য প্রাণ।

এই এ্যাপটি আমাদেরকে সম্পূর্ণ বিনামূল্যে তৈরি করে দিয়েছিলো বুয়েটের কম্পিউটার ইঞ্জিনিয়ার তারিক ও তন্ময়। ক্যাডেট কলেজের ছোটভাই হিসেবেই ওদের সাথে আমার পরিচয়, আর দেশের জন্যে কিছু করার তাগিদ থেকেই ওদের এই "ঘরের খেয়ে বনের মোষ তাড়ানো"-র ব্যবস্থা।

উত্তরার সাফল্ল্যে উজ্জীবিত হয়ে আমরা ঢাকা মেট্রোপলিটন এলাকার সবকটি পুলিশ স্টেশনকে এধরণের একটি এ্যাপের অধীনে নিয়ে আসার সিদ্ধান্ত নিই, যেটি অনুমোদন করেন ডিএমপি কমিশনার জনাব বেনজীর আহমেদ। মাসখানেকের প্রচেষ্টায় সমগ্র ঢাকার জন্যে একটি এ্যান্ড্রয়েড এ্যাপ দাঁড়ায়, যেটি এবছরের শুরুর দিকে আনুষ্ঠানিকভাবে উদ্বোধন করা হয়। বর্তমানে প্রায় ৫০,০০০ ব্যক্তি এটি ব্যবহার করছেন।পাঠকদের জন্যে এই এ্যাপটির বিশেষ বিশেষ ফিচারগুলোর বর্ণনা দিচ্ছিঃ

১) ঢাকার সকল থানার ওসি এবং ডিউটি অফিসারের নম্বর সহ এতে রয়েছে প্রতিটি থানার ঠিকানা এবং ম্যাপ। এই অ্যাপ্লিকেশনটি ব্যবহার করে ঢাকার যে কোন স্থান থেকে আপনি আপনার সবচেয়ে কাছের থানাটি সহজেই খুঁজে বের করতে পারবেন; সেই সাথে গুগল ম্যাপে আপনাকে সেই থানায় যাওয়ার পথও দেখিয়ে দেবে এটি। ওসি এবং ডিউটি অফিসার যেন আপনার ডাকে সাড়া দেন সেজন্যে সব ওসিদের ডেকে স্বয়ং কমিশনার অফিস থেকে নির্দেশনা জারি করা হয়েছে।


২) ডিএমপির ফেসবুক পেইজে সহজেই যে কোন পোস্ট বা মেসেজ দেয়ার জন্যে এতে রয়েছে একটি ‘ফেসবুক বাটন’ যা আপনাকে সরাসরি ডিএমপির সর্বশেষ তথ্য ও সেবা সম্পর্কে জানতে সাহায্য করবে।




উপরের ছবিতে ইংরেজি "এ" লেখা বাটনটি ল্যঙ্গুয়েজ বাটন, এর মাধ্যমে বাংলা বা ইংরেজি যে কোন ভাষায় পুরো এ্যাপটি দেখা যাবে। এর নীচেই ফেসবুক বাটন, তারপর ম্যাপ বাটন, যেটি আপনার অবস্থান থেকে নিকটস্থ থানার ম্যাপ দেখিয়ে দেবে।

৩) ডিএমপির একটি নিজস্ব ব্লাড ব্যাঙ্ক রয়েছে, যেটির সাহায্যে পুলিশ সদস্যরা সাধারণ মানুষের প্রয়োজনে রক্তদান করে থাকেন।জরুরী প্রয়োজনে ডিএমপির ব্লাড ব্যাংক থেকে রক্ত সংগ্রহ এবং এ সম্পর্কিতে অন্যান্য তথ্য জানার জন্যে এতে সংযোজন করা হয়েছে একটা ‘ব্লাড বাটন’।


৪) ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশের একটি বিশেষায়িত ইউনিটের নাম উইমেন সাপোর্ট এ্যান্ড ইনভেস্টিগশন ডিভিশন। এই ইউনিটটিতে কন্সটেবল থেকে ডেপুটি কমিশনার পর্যন্ত সবাই নারী, এবং এদের মূল উদ্দেশ্য নারী ভিকটিমদের সহায়তা দেয়া। এদের ২৪ ঘন্টা হেল্পলাইন রয়েছে। কোন নারী ভিকটিম এই ইউনিটের সাথে সরাসরি যোগাযোগ করতে ব্যবহার করতে পারেন নারী বাটন।


৫) ডিএমপি-ম্যাপ থেকে খুব সহজেই আপনি যে কোন থানার অবস্থান ছবি তুলে পাঠাতে পারবেন আপনার কোন বন্ধু বা নিকটজনকে। জরুরী প্রয়োজনে এই অ্যাপ্লিকেশনে থাকা যে কোন ফোন নম্বর আপনার কোন বন্ধুকে এসএমএস করতে পারবেন মাত্র এক ক্লিকেই।


৬) হঠাৎ রাস্তায় ঘটা কোন দুর্ঘটনায় ডিএমপির হটলাইনে জানানোর জন্যে এতে রয়েছে একটি ‘কুইক কনটাক্ট বাটন’ যা ব্যবহার করে সহজেই ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশকে যে কোন তথ্য দেয়া যাবে সরাসরি ফোনে বা ইমেইলে। কোন অপরাধী সম্পর্কে পুলিশকে কোন তথ্য দেয়া বা ছবি পাঠানো কিংবা আপনার এলাকার কোন অপরাধ পুলিশকে জানাতে এখন আর কষ্ট করে থানায় আসতে হবে না, মাত্র একটি ক্লিকই যথেষ্ট।


৭) ট্রাফিক সম্পর্কিত তথ্য ও সহায়তার জন্যে রয়েছে ট্রাফিক বাটন, যেটির মাধ্যমে ট্রাফিক বিভাগে কর্মরত অফিসারদের সাথে সরসরি কথা বলতে পারবেন এবং ট্রাফিক আপডেট জানতে পারবেন। নীচের ছবিতে আরো কয়েকটি বাটন আছে, যেমনঃ বিদেশী নাগরিকদের সহায়তার জন্যা "চ্যান্সেরি বাটন", সবগুলো থানার ঠিকানা, ম্যাপে অবস্থান ও ফোন নম্বর নিয়ে বিল্ডিং-আকৃতি বাটন ইত্যাদি।


৮) এছাড়াও এই অ্যাপ্লিকেশনটিতে ডিএমপির বিভিন্ন সেবা সম্পর্কে বিস্তারিত তথ্য দেয়া হয়েছে।


৯) ঢাকাবাসীর ব্যবহারের জন্যে এই মোবাইল ফোন অ্যাপ্লিকেশনটি আনুষ্ঠানিকভাবে গত ১৩ জানুয়ারি উদ্বোধন করেন ঢাকা মহানগর পুলিশ কমিশনার বেনজির আহমেদ। এর পরেই গুগল প্লো স্টোরে সর্বসাধারণের জন্যে উন্মুক্ত করে দেয়া হয় এটি। যে কেউ সম্পূর্ণ বিনামূল্যে নিচের ঠিকানা থেকে এটি ডাউনলোড করতে পারবেন।


ডাউনলোড লিংক: http://goo.gl/UkdJoZ

গুগল প্লে স্টোরে গিয়ে "ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশ" লিখলেও পেয়ে এটি সহজেই পেয়ে যাবেন।

অ্যাপ্লিকেশনটি সম্পর্কে আরও বিস্তারিত তথ্য জানা যাবে ফেসবুকের এই পেইজ থেকে এবং আগ্রহীরা এখানে সরাসরি নির্মাতাদের সাথে কথা বলার এবং বিভিন্ন মতামত শেয়ার করারও সুযোগ পাবেন:

https://www.facebook.com/mobileappofdmp

এবার একটি মজার তথ্য দিই, এই এ্যাপটি তৈরি করতে তারিক আর তন্ময় ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশের কাছ থেকে মজুরী হিসেবে নিয়েছে মাত্র ৫০০ টাকা।তাদের বক্তব্যঃ

ছয় বছর ক্যাডেট কলেজ আর ৪ বছর বুয়েট- দেশের টাকাতেই আমাদের এতদূর আসা।তাই দেশমাতৃকার প্রতি আমাদের এই ক্ষুদ্র নিবেদন। আমরা চাই আমাদের মত আরো অনেক মানুষ নিজেদের জায়গা থেকে দেশকে এগিয়ে নিয়ে যেতে কিছু একটা করুক।

তারিক আর তন্ময় আমার ক্যাডেট কলেজের ছোটভাই- এই গর্বে আজকাল আমি মাটির তিন হাত উপর দিয়ে হাঁটি। ওদের এই বক্তব্যের পরে আমাকে কি খুব একটা দোষ দেয়া যাবে?


পরিশিষ্টঃ

ক) উত্তরার এ্যাপটি বাংলাদেশ সরকারের যে কোন প্রতিষ্ঠানের প্রথম এ্যাণ্ড্রয়েড এ্যাপ, আর ডিএমপি এ্যাপটি দ্বিতীয়।ডিএমপি এ্যাপটির মূল কাজ পুলিশ ও জনগণের মধ্যে দ্রুত যোগাযোগ ঘটানো এবং তথ্য দিয়ে পুলিশি সেবা সরাসরি নাগরিকদের হাতের মুঠোয় পৌঁছে দেয়া। আমরা জানি, পুলিশের পক্ষ থেকে নানারকম সমস্যা হতে পারে, হয়ত কেউ কেউ ফোন করেও আশানুরূপ সেবা পাওয়া থেকে বঞ্চিত হতে পারেন। সেক্ষেত্রে অভিযোগ করার ব্যবস্থা রয়েছে।এসব সমস্যা নিয়েও আমরা আশাবাদী, কারণ অন্ততঃ শুরু তো হল!

খ) এই এ্যাপটির অন্যান্য প্ল্যাটফর্মের ( আই ফোন, উইন্ডোজ ইত্যাদি ) কাজ শেষের পথে, মাসখানেকের মধ্যে রিলিজ দেয়া হবে। এছাড়াও, মাননীয় প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয় থেকে সারা দেশের সবগুলো থানা, ফায়ার সার্ভিস স্টেশন এবং হাসপাতাল একত্রিত করে একটি এ্যাপের কাজ শুরু হয়েছে, যেটি এবছরের মাধ্যমে রিলিজ দেয়া হবে।

গ) জানি, হাজারটা সীমাবদ্ধতা আছে। তাই বলে কি আমরা থেমে থাকব? বাংলাদেশ পুলিশের মত "ভাঙ্গাচুরা" (??!!) বিভাগ যদি এ্যাপ বের করে ফেলতে পারে, বাকিদের পক্ষে কি কি করা সম্ভব সেটা চিন্তা করলে ইচ্ছে করে আকাশে উড়ে বেড়াই।

আমাদের দেশটাকে আমরা স্বপ্নের দেশ হিসেবে দেখতে চাই, এবং সেটা খুব তাড়াতাড়ি।

চলুন, হাত লাগাই!

মাসরুফ হোসেন
সহকারী পুলিশ কমিশনার
(ক্যান্টনমেন্ট জোন)
গুলশান অপরাধ বিভাগ
ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশ
০১৭১৩৩৯৮৩৪২

0 comments

সুরা ফাতিহা, সুরা হুমাজা, সুরা ইখলাস বাংলা

এক বোন (Sara Nowreen) তিনটি সূরার অনুবাদ দিয়েছেন, আলহামদুলিল্লাহ। আল্লাহ আমাদের এই বোনকে উত্তম প্রতিদান দিক। আমিন।

Surah Fatiha
https://drive.google.com/file/d/0B5cANnNgIKAcM09JTjRqSzJpeTA/edit?usp=sharing

Surah Humazah
https://drive.google.com/file/d/0B5cANnNgIKAca2RoWjdXUWZTcmc/edit?usp=sharing

Surah Ikhlas
https://drive.google.com/file/d/0B5cANnNgIKAca1lxTFpSM0YxMEE/edit?usp=sharing


Source:Nouman Ali Khan Collection In Bangla
https://www.facebook.com/NAKBangla

0 comments
Labels: ,

বাংলাদেশের যুদ্ধের প্রেক্ষাপটে ইসলামের ইতিহাসের প্রেক্ষাপট


বাংলাদেশের যুদ্ধের প্রেক্ষাপটে ইসলামের ইতিহাসের প্রেক্ষাপট বিবেচনা : বাংলাদেশকে পাকিস্তান আক্রমন করেছিল বাংলাদেশ করেনি, পাকিস্তানিরা এদেশে এসে হত্যা চালিয়ে ছিল তাই না।

এবার ইসলামের ইতিহাসে যুদ্ধ গুলো দেখুন কোথায় হয়েছে মদিনায় বা মক্কার বাইরে , কারা আক্রামন করেছে মক্কার কোরাইশরা তাই না, কারা যুদ্ধ শুরু করেছে মক্কার কোরাইশ রা তো যখন আপনি কউকে আক্রমন করতে যাবেন তখন যেই নারীদের নিয়ে যাচ্ছেন যুদ্ধ পরবতীতে তাদের কি হবে তা ভেবেছেন? সেই নারীরা কি সেচ্ছেয় যু্দ্ধে যায় নি? মুসলমানরা কি কখনো আগে আক্রমন করেছে?

বাংলাদেশের নারীরা এখানেই ছিল তারা এসে আমাদের আক্রমন করেছে আমাদের নিজেদের বাচাতে আমাদের নারীরা যুদ্ধে সহায়তা করেছে বলে পাকিরা আমাদের নারীদের এমন করে এখানে দোষ পাকিদের আর সেখানে দোষ কি সেই মক্কার কোরাইশদের নয় যারা নারীদের যুদ্ধে ব্যবহার করেছে ?

আর সবার শেষে যখন মক্কা বিজয় হলো তখন কতজন যুদ্ধ বন্দিনি ধরা হয়ে ছিল কতজন কে ধর্ষন করা হয়েছিল? তখন কি বলা হয়নি ..।

মোহাম্মদ (সঃ) মক্কা বিজয়ের পর কোরআইশদের উদ্দেশ্যে বলেন : " যে আবু সুফিয়ান এর বাসায় প্রবেশ করবে সে নিরাপদ, যে অস্ত্র ফেলেদিবে\সারেন্ডার করবে সে নিরাপদ, যে ঘরের দরজা বন্ধ করেছে সেও নিরাপদ " এমন ক্ষমার দৃস্টন্ত পৃথিবীতে আজো বিরল, অতুলনীয়, শুধু তাই নয় মোহাম্মদ (সঃ) আরো বলেন :

আমি তোমাদের জন্য সেই কথাই বলবো যেমনটি ইউসুফ তার ভাইদের বলেছিল " আজ তোমাদের বিরুদ্ধে কোন অভিযোগ নেই। আল্লাহ তোমাদের কে ক্ষমা করুন। তিনি সব মেহেরবানদের চাইতে অধিক মেহেরবান। "

সুবহানাল্লাহ এরচেয়ে সুন্দর , ক্ষমার, ভ্রাতৃত্বের, বন্ধনের, আদর্শের উদাহরন আর কোথায় পাবেন ইসলাম ছারা।

0 comments
Labels: , , ,

সত্য প্রত্যাখ্যানের কৌশল

সত্য মিথ্যার চিরকালীন দ্বন্দ্বে মিথ্যাবাদীরা কি কৌশলে প্রভাব খাটিয়ে কিছুদিনের জন্য টিকতে পারে তার নিয়ে ওস্তাদ নোমান আলী খান কুরআন হাদীস ঘেটে তাদের ৫টি কৌশলের ব্যাখ্যা দিয়েছেন এক খুৎবাতে। লিখা একটু বড় হতে পারে একটু ধৈর্য ধরে পড়ার অনুরোধ রইলো।

মিথ্যাবাদীদের কৌশল গুলো বলার আগে দেখি আল্লাহ সত্যকে কিভাবে চিত্রায়িত করেছেন কুরআনে।  সত্য সবসময় আগ্রাসী আর মিথ্যাকে সামনে পেলেই চুরমার করে ফেলে:

“আমরা সত্যের দ্বারা মিথ্যার উপর আঘাত হানি, ফলে তার মগজ চুরমার হয়ে যায়, তখন দেখো! তা অন্তর্হিত হয়। আর ধিক তোমাদের প্রতি! তোমরা যা আরোপ কর সেজন্য।“
সুরা আম্বিয়া ১৭

সত্যের নিজের কোন অস্ত্র লাগেনা। মিথ্যাকে মারার জন্য সত্য নিজেই এক অস্ত্র। কোন বিষয়ের সত্য মিথ্যা একসাথে রাখলে সত্য একদম নিঃশেষ করে দেয় মিথ্যা কে। সত্য খুবই আগ্রাসী এ ব্যাপারে।
সত্যের আগমনে সবচেয়ে ক্ষতিগ্রস্ত তারাই হয় যারা এতদিন মিথ্যা কিছু তথ্য আর বিশ্বাসের উপর ভর করে বিশাল বিশাল ইমারত তৈরি করে নিয়েছে আর প্রজন্মের পর প্রজন্ম অন্ধ ভাবে তা মেনে চলছে।

এইসব অহংকারী মিথ্যাবাদীরা কিভাবে সত্যকে নিশ্চিতভাবে জানার পরও প্রথম যে কৌশল এর আশ্রয় নেয় তা হল By Force  বা পেশী শক্তি আর ক্ষমতার প্রভাব খাটিয়ে। যেমন

ছোট দুর্বল এক ছেলে তার এক বড় ভাইকে বির বির করে বলল:
২+২=৪
বড়ভাই বলে উঠল ভারী গলায় “না ২+২ =৫”
“কিন্তু দেখেন দুই হচ্ছে এক যোগ এক আর...”
“থাম, আমি বলছি ৫ , তাই ৫ এখন অফ যাও”

ইব্রাহীম (আঃ) যখন তাদের গোত্রদের বলল তোমরা ভুল ইলাহদের প্রার্থনা করছে আর জবাবে ওরা বলে
তাই না? ওকে জীবন্ত পুড়াও।
শুধু জোর খাটিয়ে পেশী শক্তি আর হুংকার দিয়ে সত্যকে দূরে ঠেলে দেয়।

দ্বিতীয় কৌশল হল চরিত্র হনন। আগের উদাহরণে আসি।

-“জান ভাইয়া ২+২=৪”
“তাই না?  তুমি তো বাইট্টা, ঠিকমত হাটতেও পারনা আর আমারে শিখাইতে আইসো না?”

মুসা (আঃ) যখন সত্যের দাওয়াত নিয়ে আসল তখন ফিরআউন বলত - ও আর কি দাওয়াত দিতে আসছে? ও নিজেও একজনকে খুন করে পালিয়ে গেছিল আর এখন যাদু করে বেড়ায়। কি আশা কর আর ওর থেকে?

এইভাবে যখন কেউ সত্য কথা সম্মুখে বলে তখন যে লোকটি কথাটি বলল তাকে নিয়ে, তার চরিত্র নিয়ে এরা ব্যস্ত হয়ে পড়ে।

তৃতীয় কৌশল হল বিশাল এক জনসমাগমের আয়োজন করা আবেগী মানুষদের নিয়ে।

এটি হল ফিরাউনের কৌশল। মুসা (আঃ) কে হেনেস্তা করার জন্য নিজের মানুষদের নিয়ে বিশাল এক জনসমাগম করেছিল।মুসা(আঃ) তার মোজেজা দেখাবেন আর ফিরাউনের যাদুকরেরা যাদু দেখাবে।  মুসা (আঃ) যাই বলবেন আর যাই করবেন আর তখনই লোকেরা Boooooooooo করে উঠবে। সত্য কথা হলেও। মোটামুটি এই হল কৌশল।

পরে অবশ্য যাদুকরেরা ঐ জনসমাগমেই ঈমান আনলেন আর ফিরাউন যাদুকরদের বলল আমি জনতাম তোমরা এইখানে আসার আগে মুসার সাথে গোপন আলাপ করে এসেছিলা!

যখনই যুক্তিতে পেরে উঠেনা, তখনই এই সমমনা জনতার প্রয়োজন হয় আর এতেই প্রমান হয় তাদের যুক্তির দৌড় কতদুর। এই জনতার কোন একজনের সাথে যদি ব্যক্তিগত কথা বলা যায় দেখা যাবে যুক্তিসহ কথা বার্তা হচ্ছে কিন্তু ঐ যখনই জনসমুদ্রে যায় তখন আর কিছুর ধার ধারে না, যা বলছি তাই, তুমি ভণ্ড!

চতুর্থ কৌশলটা একটু গভীর আর ভয়ংকরও বটে। তা হল সে দাওয়াত নিয়ে আসছে সত্যের উপর তার নিজের আনুগত্যের প্রশ্ন তুলবে তারা। ইমোশনাল ব্ল্যাক-মেইল করা।  যেমন

একজন তার বাবাকে বলল, বাবা তোমার আয়ে তো সুদ জড়িত একটু ...
এইতো শুরু হল বাবার,

“তোমাকে বড় করছে কে? এতদিন দিনের পর দিন কষ্ট করে খাওয়ছি পড়াইছি আর এইসব কথা শুনাও না এখন? কি পালতেছি আমি!!?? খুব ইসলাম পালন করতেছ তাই না? দেখতেছিত কেমন ইসলাম। ইসলাম এই শিখাইছে না? বাবা মাদের সাথে এই আচরণ শিখছ না?......”

যাই হোক ছেলে যে সুদের প্রসঙ্গ তুলে আনলে সেটি এই কৌশলে ঢাকা পড়ে গেল।

নবী (স) কে উদ্দেশ্য করে কাফেররাও বলত যে সে নাকি শান্তি আনতে চাচ্ছে অথচ আমরা স্পষ্ট দেখতে পাচ্ছি ইসলামের দাওয়াত নিয়ে আসার পর অশান্তি আরও বেড়ে গেছ। ভাই-ভাই, স্বামী স্ত্রী, বাবা-ছেলে বন্ধন ভেঙ্গে যাচ্ছে ইত্যাদি ইত্যাদি।

আর সর্বশেষ আর সবচেয়ে জনপ্রিয় কৌশল হল ভুলভাবে উদ্ধত করা। সোজা বাংলায় তেনা পেঁচানো। ফেসবুকের জামানায় এটা তো আরও বেশি হয়।
যেমন কেউ একজন বলল তুমি যেটা করছ ঐটা তো হাদীসে নিষেধাজ্ঞা আছে।
অন্যজন বলল ঐ হাদীসটা কে বর্ণণা করেছে?
জানি না
ও, জানও না? (দলবল নিয়ে হেসে উঠল) আর হাদীসের কথা বল না??

আর কেউ একজন কমেন্ট করল। আর অন্যজন আসে মুল কমেন্ট নিয়ে কিছু না বলে কমেন্টের বানানে কি ভুল হল আর অন্য প্রসঙ্গ টেনে এনে মুল কথা থেকে অনেক দূরে সরে এসে পেঁচাল পাড়ে।

এই হল মোটামুটি কৌশল গুলো। সত্য আসার পর মানুষ কেন তা অস্বীকার করে এই সব কৌশলের আশ্রয় নেয় তার কারণ বিশ্লেষণ করলে একটাই উপসংহার আসে। তা হল মানুষের Ego বা অহংকার।


##নোমান আলী খানের Quranic Imagery লেকচার অবলম্বনে। 

0 comments