শুরু করছি আল্লাহর নামে যিনি পরম করুণাময়, অতি দয়ালু

যাবতীয় প্রশংসা আল্লাহ তা' আলার যিনি সকল সৃষ্টি জগতের পালনকর্তা।

মুহাম্মদ (সাঃ)-আল্লাহর রাসূল

মুহাম্মদ (সাঃ)-সকল মানুষের জন্য উদাহরন, সর্বশ্রেষ্ঠ মানুষ, ও আল্লাহর রাসুল

আল কোরআন - মহান আল্লাহ প্রদত্ত কিতাব

এ সেই কিতাব যাতে কোনই সন্দেহ নেই। পথ প্রদর্শনকারী পরহেযগারদের জন্য,

আমাদেরকে সরল পথ দেখাও

আমরা একমাত্র তোমারই ইবাদত করি এবং শুধুমাত্র তোমারই সাহায্য প্রার্থনা করি।

আল্লাহ নিতান্ত মেহেরবান ও দয়ালু

সে সমস্ত লোকের পথ, যাদেরকে তুমি নেয়ামত দান করেছ। তাদের পথ নয়, যাদের প্রতি তোমার গজব নাযিল হয়েছে এবং যারা পথভ্রষ্ট হয়েছে।

Labels: , ,

ক্ষমার মাস রামাদান - যখন তারা আমার সম্পর্কে জিজ্ঞাসা করে, তখন আমি একদম কাছে

●|● ক্ষমার মাস রামাদানঃ পর্ব ০৫ ●|●
এক্ষেত্রে তারা হচ্ছে আল্লাহর দাস। এমন হতে পারে এরা হয়তো আল্লাহর ইবাদত করেই না, কিন্তু তারপরও তারা ইবাদ। এখন তারা কার কাছে জিজ্ঞাসা করেছিল, দেখি আপনাদের মনোযোগ কেমন আছে, তারা কি আল্লাহর কাছে সরাসরি জিজ্ঞাসা করেছিল নাকি রাসূল (সাঃ) এর কাছে জিজ্ঞাসা করেছিল। তারা রাসূলুল্লাহ (সাঃ) এর কাছে জিজ্ঞাসা করেছিল। এখন আমি অর্থ টা আবার বলি, যখন তারা আমার সম্পর্কে জিজ্ঞাসা করে তাহলে তাদেরকে বল, আমি নিকটে। আয়াতে কিন্তু বলা হয়নি তাদেরকে বল, আয়াতে বলছে ‘ফাইন্নি কারীব’, যখন তারা আমার সম্পর্কে জিজ্ঞাসা করে, তখন আমি একদম কাছে, তখন আমি একদম কাছে। কোন জিনিসটা বলা হয়নি? তাদেরকে বল, ফাকুল্লাহুম ইন্নি কারীব। কিন্তু এখানে কোন ফাকুল্লাহুম নেই, কোন তাদেরকে বলও নেই। কেন? লোকজন রাসূলুল্লাহ (সাঃ) এর কাছে জিজ্ঞাসা করতে এসেছিল, হয় না আমাদের সময়ে লোকজন আলেমের কাছে গিয়ে জিজ্ঞাসা করে আল্লাহ কি আমার দুয়া শুনবে? আমার অনেক ভুল হয়, আমার অনেক নামাজ বাদ গেছে, আল্লাহ কি তারপরও আমার দুয়া শুনবে? আল্লাহ কি আমাকে জাহান্নামে নিক্ষেপ করবে? এগুলো মানুষ আলেমকে জিজ্ঞাসা করে, আর ওই ক্ষেত্রে সাহাবীরা রাসুলুলাহ (সাঃ) কে জিজ্ঞসা করেছিলেন। আল্লাহ নিজেই সরাসরি উত্তর দিলেন রাসূলুল্লাহ (সাঃ) কে দিয়ে বলালেন না। উনি রাসূলুল্লাহ(সাঃ) কে দিয়ে নয়, উনি আপনার সাথে, আমার সাথে সরাসরি কথা বলা শুরু করেছেন। ফাইন্নি কারীব। আমি কাছেই। আমি এত কাছে যে আমি তোমার সাথে কথা বলছি। আমি এমনকি রাসূলুল্লাহ (সাঃ) কেও বলছি না তোমার সাথে কথা বলতে, আমি সরাসরি তোমার সাথে কথা বলবো। এখানেই কুরআনের সৌন্দর্য।
লোকজন রাসূলুল্লাহ (সাঃ) এর কাছে আসলো জিজ্ঞাসা করতে আর আল্লাহ বলেননি যে আপনি ওদেরকে গিয়ে বলুন, বরং উনি ঠিক করলেন যে উনি নিজেই বলবেন। আমি খুব কাছে, তুমি আমাকে বিশ্বাস কর না? কেন আমি বললাম তুমি বিশ্বাস কর না? বললাম ইন্নি শব্দটার কারণে, ইন্নি মানে বাংলায় অবশ্যই, কোন কিছু নিঃসন্দেহে বোঝাতে ইন্নি ব্যবহার হয়। তাই কেউ যদি কোন ব্যাপারে সন্দেহ পোষণ করে তখন ইন্না ব্যবহার করা হয়। আল্লাহ এখানে বলছেন কক্ষনোই আমি কাছে নেই এই সন্দেহ করো না।। কেন তুমি সন্দেহ করছ যে আমি কাছে নেই। কেন তুমি ভাবছ যে আমি তোমার থেকে দূরে সরে যাব, তুমি আমার থেকে সরে গেছ, আমি না, তুমি সরেছো। তুমি আমার অবাধ্য হয়েছ, তুমি আমাকে ভালবাসা বন্ধ করেছো, আমি কক্ষনো তোমাকে ভালবাসা বন্ধ করিনি। তুমি দূরে সরেছো, আমি সবসময় কাছেই ছিলাম। আবার কারীব শব্দটাও, কারীব হচ্ছে ইসম সিফাহ, যার অর্থ আমি সবসময় আছি, পুরো বাক্যটা দাঁড়ায় অবশ্যই আমি সবসময় আছি কাছেই, আমার দাস এটা জানুক। আরেকটা ব্যাপার হচ্ছে আলাহর কতগূলো নাম আছে? অন্তত ৯৯ টি। কত সুন্দর সুন্দর নাম আল্লাহর। তাই যখন মানুষ জিজ্ঞেস করল আল্লাহ সম্পর্কে, তখন তাদেরকে আল্লাহর কোন নামটা বলা সবচেয়ে বেশি জরুরী? উনার কোন গুনটা? যে উনি একদম কাছেই। কেন? কারণ যখন উনি কাছে আছেন আমাদের জন্য উনার সাথে কথা বলা সহজ হয়। কেউ যখন দূরে থাকে তখন আমরা তার সাথে কথা বলিনা। আর কেউ যখন কাছে থাকে আপনি তার সাথে কথা বলতে পারেন, যখন কেউ কাছে থাকে আপনি তাকে সম্মান পারেন।
আচ্ছা, এখানের কয়জন বাচ্চা স্কুলে আছে? ৪ জন। বাকীরা কি করে? আচ্ছা যাই হোক, যদি আপনি স্কুলে থাকেন আর টিচার ক্লাসরুমের বাইরে দিয়ে হেঁটে যায়, তখন কি আপনার আচরণে কোন পরিবর্তন আসে? নাকি আসে না? মিথ্যা বলবেন না আপনি মসজিদে আছন। বাইরে গিয়ে মিথ্যে বলুন...না না আমি মজা করছি। যখন টিচার কাছে থাকে আপনার ব্যবহার এরকম হয়, ধরুন আপনি একটি পরীক্ষা দিচ্ছেন, টিচার হেঁটে বেড়াচ্ছেন, আপনি কি আপনার পরীক্ষার খাতা একটু ঢেকে ফেলেন না? এমনকি ছাঁয়া দেখলেও কেঁপে উঠেন। বিশেষত যদি উনি আপনার টেবিলে হাত রাখে আর আপনার খাতারদিকে তাকিয়ে একটু ‘হুমম’ করেন ... মালাকুল মাউত (যমদূত) মনে হয়। আমি আমার স্টুটেন্ডদের সাথে এরকম করি, কারণ আমি তাদেরকে মানসিকভাবে টর্চার করতে পছন্দ করি। এটাই টিচিং এর সবচেয়ে বড় মজা, আপনি তাদেরকে নিয়ে খেলতে পারেন। আল্লাহ বলছেন যদি আমার দাস আমার সম্পর্কে জানতে চায় তাহলে বলুন আমি একদম কাছেই আছি। কেউ যখন কাছে থাকে আপনি অন্য রকম আচরণ করেন, আপনি যখন আশেপাশে পুলিশ অফিসার দেখেন আপনি অন্যরকম আচরণ করেন। আপনি যখন দেখেন আপনার বস আশে পাশে আছে আপনি ভিন্ন আচরণ করেন, যখন জানেন টিচার কাছে, আপনি ভিন্ন আচরণ করেন, যখন আপনি দেখেন আপনার মা আশেপাশে আছে আপনি তখন আপনার বন্ধুদের সাথে ভিন্ন ভাবে কথা বলেন, যখন সে অন্য রুমে যায় তখন হয়তো আপনি বন্ধুর মুখে ঘুষি মারেন বা এই ধরনের কিছু করেন, কাছে থাকলে ভিন্নভাবে কথা বলেন। যখন আপনি অনুধাবন করবেন যে আল্লাহ নিকটে তখন আপনি সবসময়ের জন্য একদম ভিন্ন মানুষ হয়ে যাবেন। কারণ উনি সবসময় কাছে, ফাইন্নি কারীব। এখন উনি যদি সবচেয়ে কাছেই হন, এরপর উনি কি বলছেন? ‘উজিবু’ আরবিতে আজাবা মানে, উত্তর দেওয়া। এছাড়াও আরেকটি শব্দ আছে, ইস্তেজাবা, কুরআনের অন্য এক জায়গায় আল্লাহ বলেছেন - فَاسْتَجَابَ لَهُمْ رَبُّهُمْ তিনি আজাবা লাহুম বলেননি, তিনি বলেছেন ফাস্তাজাবা লাহুম। তাদের প্রভু তাদের ডাকে সাড়া দিলেন। তাহলে দেখা যাচ্ছে দুইটা শব্দ আছে আরবীতে আজাবা, আর ইস্তেজাবা। আজাবা দিয়ে বুঝায় যেটা সাথে সাথে হবে, যখন আপনি কোন দেরী করার ছাড়াই কাউকে জবাব দেন সেটাকে বলা হয়, ইজাবা। আর যখন আপনি সময় নিয়ে জবাব দেন সেটাকে বলা হয় ইস্তেজাবা। আল্লাহ বলছেন উজিবু এর মানে উনি কিভাবে দুয়ার উত্তর দেন? সাথে সাথে। কেউ কেউ দুয়া করে আর বলে, কখন আল্লাহ জবাব দিবেন? কখন আল্লাহর সাহায্য আসবে? আমি অসুস্থ, কখন আল্লাহ আমাকে সুস্থ করবেন? আমি চাকরী পাচ্ছি না, কখন আল্লাহ আমার চাকরী দিবেন। আমার বিয়ে হচ্ছে না, কখন আল্লাহ আমার বিয়ে দিবেন। আমার মা একের পর এক বিয়ের প্রস্তাব নাকচ করছে, কখন আল্লাহ তার অন্তর টা পরিবর্তন করবেন। এর নাক লম্বা, তার চোখ বেশি ছড়ানো, এ জানেনা কিভাবে ঠিক মত চা বানাতে হয়, এসব করে আমার বিয়ে হচ্ছে না। আমার মা সব নষ্ট করে দিচ্ছে। ইয়া আল্লাহ কেন আমার মা এরকম করছে, আপনি তখন আল্লাহর কাছে দুয়া চান, আর আল্লাহ কি বলছেন? তিনি কখন সেটার জবাব দিবেন? সাথে সাথে।
ও আরেকটি কথা। এগুলো সব রামাদানের আয়াত, তাই না? তাই আপনি যদি সত্যি সত্যি চান আল্লাহ সাথে সাথে আপনার দুয়ার জবাব দিবেন, তাহলে কখন দুয়া করতে হবে? রামাদানে। আর আপনি যদি চান যে আল্লাহ আপনার কাছে আসবেন তাহলে আগে নিজে আল্লাহর কাছাকাছি হন, বেশি বেশি কুরআন পড়ুন, আর তারপর দুয়া করুন, কুরআন পড়ুন আর দুয়া করুন। কুরআন পড়ুন আর দুয়া করুন। রামাদানে আপনার এরকমটিই করা উচিত। যখন আপনি বেশি বেশি দুয়া করা শুরু করবেন, তখন রামাদান মাসটা উপভোগ করা শুরু করবেন। আর যদি আপনি বেশি দুয়া না করেন তাহলে আপনি রামাদান উপভোগ করবেন না। রামাদানের আনন্দটাই হচ্ছে দুয়ার মাঝে। অর্থাৎ উনি বলছেন উজিবু। আমি জবাব দিব। তারপর উনি বলেছেন دَعْوَةَ الدَّاعِ কি শক্তিশালী শব্দচয়ন!! পূর্বে বলেছিলাম কুরআন মাজিদে 'আমি' কখন ব্যবহার করা হয়? মনে আছে? অনেক বেশি ভালোবাসা এবং অনেক বেশি রাগ প্রকাশ করার সময়। এখানে কোনটা? অনেক বেশি ভালোবাসা। আমি জবাব দেই, আমি নিজে জবাব দেই, আর তা তাৎক্ষণিক ভাবেই দেই। এখন কার দোয়ার জবাব দেয়া হয়? আপনি ভাবতে পারেন যে অনেক বেশি দোয়া করে তার। আমি বছরে একবার দুইবার দোয়া করি। যখন আপনার পরীক্ষা থাকে তখন দোয়া করেন, ইয়া আল্লাহ আমার পরীক্ষা ...। আমিন। অথবা গাড়ি চালানোর সময় লালবাতি অতিক্রম করে গেলেন, আর বিশাল জরিমানা দিতে যাচ্ছেন, তখন দোয়া করেন এই বলে, ইয়া আল্লাহ ক্যামেরা এবং লাইসেন্স প্লেটের মাঝে কভার সৃষ্টি করে দাও। আমি যেন অথরিটি থেকে কোন মেসেজ না পাই, ইয়া আল্লাহ। তখন আপনার আল্লাহকে স্মরণ হয়। কেউ যদি অনেকবার দোয়া করে তাহলে 'দুয়া' শব্দটি ব্যবহার করা হয়। কিন্তু কেউ যদি শুধু একবার দোয়া করে, সেটা প্রকাশ করতে ব্যবহার করা হয় ''দা'ওয়াতুন'' শব্দটি। دعوة শব্দটির শেষে তা মারবুতা নির্দেশ করে যে এটা মাত্র একবার ঘটে। যেমন ضرب এর অর্থ হলো প্রহার করা, কিন্তু ضربة মানে একবার প্রহার করা। أكل মানে খাবার, কিন্তু أكلة অর্থ একবারের খাবার। ة তা মারবুতা এটাকে একবারের জন্য বানিয়ে দেয়। আল্লাহ বলেছে, دَعْوَةَ الدَّاعِ প্রার্থনাকারীর একবারের প্রার্থনাতেও আমি সাড়া দেই। লোকটি মাত্র একবারই দোয়া করল, আল্লাহ বলেন না যে সারা বছর কোথায় ছিলে? তুমি জীবনে কখনো সালাত আদায় করনি, মাত্র একবার দোয়া করলে, ভুলে যাও যে তোমার ডাকে সাড়া দিব।
আপনি যদি কোন অফিসের কর্মচারী হোন আর বছরে মাত্র একবার অফিসে নিজের চেহারা দেখালেন, আপনার চাকরি থাকবে না। তারা বলবে, কে আপনি? আমি এখানে চাকরি করি। কখন? আমি গত বছর চাকরি পেয়েছি। তো এখানে কি করছেন? আমি অ্যাঁ...অ্যাঁ ... এখন তো আসলাম! আমি কি আবার শুরু করতে পারি? আপনার বস কি বলবে, হ্যাঁ, সিওর। হ্যাঁ, এক্ষুনি আপনি শুরু করতে পারেন। আপনার জন্য কি একটা প্রমোশনের ব্যবস্থা করবো? না এটা হবে না। دعوة শব্দের মাধ্যমে আল্লাহ বলছেন যে, জীবনে একবার দোয়া করা ব্যক্তির জন্যও তিনি সাড়া দিবেন। নিজেকে এটা বলে বোঝাবেন না যে, আমার তো দাঁড়ি নেই, আল্লাহ আমার ডাকে সাড়া দিবেন না। কেবল গোঁফ রয়েছে, আল্লাহ আমার দু'আ কবুল করবেন না'। রামাদানে মুভি দেখতে পারব না, তাই আগে থেকেই তিনটির মত মুভি দেখে ফেলেছি। এখন আমি দু'আ করব? আল্লাহ তারপরও সাড়া দিবেন আপনার ডাকে। এটা শুনে আবার কেউ মুভি দেখতে যাবেন না। কখনও মনে করবেন না যে আল্লাহ আপনার দু'আয় সাড়া দিবেন না। যে কিনা একটিও দু'আ করে, আল্লাহ তার ডাকেও সাড়া দেন। এবার আপনি বলতে পারেন, আচ্ছা, লোকটি একটি দু'আই করেছে কিন্তু হতে পারে যে সে একজন খুব ভাল মানুষ। হতে পারে সে একজন সালেহ, একজন মু'মিন, হতে পারে তার অনেক তাক্বওয়া আছে কিংবা তার ইলম বেশি। এও হতে পারে যে সে তওবা করেছে। 'উজিবুদ্‌ দা'ওয়াত্‌তায়িবি', আমি তার আহ্বানে সাড়া দেই যে তওবা করে। আল্লাহ তা বলেননি। তিনি বলেছেন, আমি সেই মানুষটিকে সাড়া দেই, 'দা'ওয়া', তার একটি দু'আতেই সাড়া দেই, 'আদ-দা'আ', যে ডেকেছে। এই মানুষটির উদাহারণ কীরূপ? সে কি করেছে? সে ডেকেছে। অন্যকথায়, আল্লাহ কি তার কাছ থেকে অন্য কোন গুণ আশা করেছেন? তিনি কি বলেছেন, দা'ওয়াতুল মুসল্লি? দা'ওয়াতুল মুত্তাক্বি? দা'ওয়াতুল মু'মিন? না! তিনি বলেননি যে আপনার তাক্ব্ওয়া থাকতে হবে, আপনার ইমান থাকতে হবে, বলেননি আপনার ইলম থাকতে হবে। এই দু'আয় বলেননি। কেন? কারণ, আল্লাহ এখানে সেইসব মানুষের সাথে কথা বলছেন যারা আল্লাহ-এর থেকে বহু দূরে চলে গেছে। এবং তিনি প্রথমেই তাদের বলছেন যে, দেখো আমি কাছেই, তুমি দূরে, আমি তোমার নিকটেই। এরপর তিনি তাদের বলেন, দেখো আমি জানি এই একটি দু'আ ছাড়া তোমাদের কাছে এই মুহুর্তে আর কিছুই নেই। ঠিক আছে। দাও, ঠিক আছে। দাও, আমাকে এই একটি দু'আই দাও। যদিও তুমি একজন দা'আ, শুধুই একজন আহ্বানকারী। তোমার জন্য আমার কাছে আর কোন বিবরণ নেই। আমি তোমাকে এখনো পর্যন্ত একজন সালেহ ডাকতে পারি না, মুসলিম ডাকতে পারি না, মু'মিন ডাকতে পারি না। আমি তোমাকে কিছুই ডাকতে পারি না। আমি শুধু তোমাকে ডাকছি একজন দা'আ, একজন আহ্বানকারী। সেটি কোন যোগ্যতাই নয়। শুধু তাই। তাই যথেষ্ট। শুধু আমাকে ডাকো। সুবানাল্লাহ! আল্লাহ এর পক্ষ থেকে কত বড় একটি আমন্ত্রণ!
আর এগোনোর আগে বলে রাখি, আমি বলেছিলাম, কখনো একজন বসের ৫০০ জন কর্মচারী থাকে। সে কি তাদের সকলের নাম জানে? না। বিশেষ করে সেই কর্মচারীকে যে তাকে পুরো জীবনে মাত্র কয়টি ই-মেইল পাঠিয়েছে? একটি ই-মেইল। কিভাবে সে তাকে মনে রাখবে? কর্মচারীটি যদি তাকে টেক্সট মেসেজ পাঠায়, তার তো ওর নাম সেইভ করা নেই। সে জানবে না নাম্বারটি কোথা থেকে এসেছে। আল্লাহ বলেননি, 'উজিবুদ্‌ দা'ওয়াতাদ্‌ দা'য়িন' তিনি বলেছেন, 'উজিবুদ্‌ দা'ওয়াতা আদ দা'য়ি'। এই শব্দটির মধ্যে থাকা আলিফ লাম, তাকে মা'রিফা বানিয়ে দেয়। অর্থাৎ,যথাযথ এবং নির্দিষ্ট করে দেয়। অন্যভাবে বলা যায়, যে কেউ আল্লাহকে ডাকে, আল্লাহ বলেননা যে কোন একজন শুধুই ডেকেছে। তিনি বলেন সেইজন আমাকে ডেকেছে, সেই নির্দিষ্ট মানুষটি। আপনি আল্লাহ এর কাছে নির্দিষ্ট। তিনি আপনাকে বিশেষভাবে, ব্যক্তিগতভাবে চিনেন। কোন ডাক্তার আপনার নাম মনে রাখতে পারবে না যদি তাকে দিনে ১০০টি রোগী দেখতে হয়। সে আপনার নাম জানবে না। সে এভাবে বলে চেষ্টা করবে, "মুহাম্মাদ, কেমন আছ? চলে এস।" হাহাহা। সবাই মুহাম্মাদ, অন্তত সম্ভাবনা তো রয়েছে। সে আপনাকে নামে চিনতে পারবে না, আপনি জানেন। আমি মানুষের সাথে মিশি, ওয়াল্লাহি, আমি তাদের সাথে মিশি। তখন আমি বোল্টামোরে ছিলাম। একজন বয়স্ক ব্যক্তি আমার কাছে এলেন। বললেন, "বেটা কেমন আছ? আমার মনে পড়ে, তুমি যখন খুব ছোট ছিলে, তখন মসজিদের ভিতর ছোটাছুটি করতে।" আমি তখন মনে মনে ভাবছি, হায় আমি তো টেক্সাস থেকে। কিন্তু মুখে বললাম, "জ্বী, আমারও মনে আছে।" আমি কথা চালিয়ে গেলাম। হাহাহা। তার আসলে মনে নাই। মানুষ মনে রাখে না। আল্লাহ আয্‌ওয়াজ্জাল নির্দিষ্টরূপে পর্যন্ত চিনেন। আপনি হয়তো বলবেন, কোম্পানির সি.ই.ও কিভাবে আমার নাম জানবে। আমি তো শুধুই একজন নিরাপত্তাকর্মী। তার অবস্থান কত উঁচুতে আর আমি কত নিচু পর্যায়ে। কিভাবে সে আমার নাম জানবে? কিভাবে একজন প্রেসিডেন্ট তার দেশের একজন অধিবাসীকে চিনবে? কিভাবে সেটি সম্ভব! আপনারা সবাই যদি আমার কাছে এসে নিজেদের নাম বলেন, আমার কি মনে থাকবে? আমি জানি না। আমি জানি না। কারো কাছে যদি আমার ফোন নাম্বার থাকে,(প্লিজ আমার ফোন নাম্বার নিবেন না), কিন্তু যদি থেকে থাকে যদি আমাকে একটি এস.এম.এস পাঠান। আমার কাছে নাম্বারটি সেইভ করা নেই। আমি কি জানবো কে এটি পাঠিয়েছে? আমি জানব না কে পাঠিয়েছে। আমার কাছে শুধু একটি নামার রয়েছে। কোন নাম নেই। আমার কাছে কিছুই নেই। যখন আপনি আল্লাহকে ডাকেন, আল্লাহ বিশেষভাবে জানেন যে এক্স্যাক্টলি আপনি কে। এবং তিনি তৎক্ষণাৎ আপনাকে সাড়া দিতে চান। তিনি আপনার সাথে তখনই নতুন সম্পর্ক শুরু করতে চান। গতকাল যা হয়েছে, তা হয়ে গেছে। আজ থেকে শুরু করুন। আপনি আজই মুসলিম হয়ে উঠুন। আজ থেকেই আল্লাহকে ডাকতে থাকুন। 'উজিবুদ দা'ওয়াতাদ্‌দা'য়ি।'

0 comments