Labels: ,

ইসলামে পীর তন্ত্র, সুফীজম বলতে কিছু নাই।

[***] পীরভক্তরা কোন কোন পীরকে 'গওস' নামে অভিহিত করে থাকে। কেবল তাই নয়, শয়খুল-মাশায়েখ আব্দুল কাদের জিলানীকে অনেকে গওসুস্-সাকালায়িন বলে আখ্যায়িত করে থাকে।

'গওস' শব্দের আভিধানিক অর্থ হচ্ছে 'আকুল ফয়িাদ শ্রবণকারী, বিপদআপদ থেকে মুক্তকারী ও উদ্ধারকারী। সাকালায়িন মানে জিন ও ইনসান। গওসুস্-সাকালায়িন মানে মানব ও দানবের আকুল ফরিয়াদ শ্রবণকারী, মানব ও দানবের বিদহন্তা ও উদ্ধারকারী।

যেখানে তাওহীদের মূল শিক্ষাই হচ্ছে, আল্লাহ ছাড়া পতিত পাবন, উদ্ধারকর্তা, বিপদহন্তা ও আকুল ফরিয়দ শ্রবণকারী কেউ নেই, সেখানে পাঠক একবার চিন্তা করুন, মানুষ কেমন করে এসব গুণের অধিকারী হতে পারে। কিন্তু পীর ভক্তরা আল্লাহর এসব গুণে মানুষের অধিকারী সাব্যস্ত করে ছেড়েছে।

পীরদের কিতাবে লেখা আছে, সমস্ত জীবজন্তু যাঁর মাধ্যমে সাহায্য ও আহার পায়, এমনকি ফেরেশতাগণও যাঁর মাধ্যমে সাহায্য পায়, তাঁকেই বলা হয় 'গওস'। পীরদের কিতাবে আরও লেখা আছে, পৃথিবীতে তিনশ উনিশজন নজির আছেন, তন্মধ্যে সত্তরজন নকিব আছেন, চল্লিশজন আব্দাল আছেন, সাতজন কুতুব, চারজন আওতাদ এবং একজন 'গওস' আছেন।

দুনিয়াতে যুদ্ধবিগ্রহ, খাদ্য সংকট, অশান্তি ও মহামারী দেখা দিলে তামাম জীবজন্তুর প্রতিনিধি তিনশ উনিশজন নজিবের কাছে ছুটে যান, নজিবরা তখন সত্তরজন নকিবের কাছে ফরিয়াদ জানান, সত্তরজন নকিব তখন চল্লিশজন আব্দালের কাছে আবেদন পেশ করেন, চল্লিশজন আব্দাল তখন সাতজন কুতুবের দ্বারস্থ হন, সাতজন কুতুব তখন চারজন আওতাদের কাছে দৌড়ে যান, চারজন আতাদ কখন 'গওস'- এর কাছে সাহায্যের জন্য আকুল ফরিয়াদ পেশ করেন। 'গওস' তখন সব সমস্যার সমাধান করে দেন।

'গওস' সম্পর্কে এই যে ধারণা, খৃষ্টানরা ঠিক ঈসা (আঃ) সম্পর্কে এই ধারণাই পোষণ করে থাকে, আর সীমালঙ্ঘনকারী রাফেযীরা আলী সম্পর্কেও অনুরূপ ধারণা পোষণ করে থাকে।

কোন কোন মানুষ সম্পর্কে এরূপ ধারণা পোষণ করা যে, কুরআন ও হাদীসের মতে শির্ক- এতে কোন সন্দেহ নাই। কারণ আল্লাহই হচ্ছেন অন্নদাতা, আল্লাহই হচ্ছেন বিপদমুক্তকারী, আকুল ফরিয়াদ শ্রবনকারী, সরাসরি সাহায্যকারী, এক কথায় আল্লাহই হচ্ছেন 'গওস'।

নজিব, নকিব, আব্দুল, কুতুব, আওতাদ ও গওস প্রভৃতি কথা কুরআন ও হাদিসের কোন জায়গায় উল্লেখ নেই। পীর ও পীর ভক্তদের এই প্রমাণহীন ধারণা ও উক্তি সম্পর্কে ইমাম ইবনু তায়িমিয়া বলেছেন- "গওস, কুতুব সম্পর্ক সবই বাতিল'। আল্লাহর কিতাব ও তাঁর রাসুল (সাঃ) এর সুন্নাতে এ সবের কোনই প্রমাণ নেই। পূর্ববর্তী উম্মতদের মধ্যে সাহাবা ও তাবেয়ীগণ এমন কথা বলেননি। 


মহামতি ইমামগণ যেমন ইমাম আবু হানিফা, ইমাম শাফেয়ী, ইমাম মালেক, ইমাম আহমদ বিন হাম্বল, ইমাম সওরী, ইমাম আওযায়ী, ইমাম জহরী, ইমাম বুখারী, ইমাম মুসলিম, ইমাম নাসায়ী ও ইমাম তিরমিযী (রহঃ) প্রভৃতি কেউ একথা মুখে উচ্চারণ করেননি। বড় বড় শাইখগণ, যেমন জুনায়েদ বাগদাদী, হাসান বসরী, ইবরাহীম বিন আদহাম, মারুফ কর্খী ও আব্দুল কাদের জিলানী (রহঃ) ইনারাও কেউ এসব কথা বলেননি। হাদীস শাস্ত্র-বিশারদগণের কেউই এ মর্মের কোন হাদীস রিওয়ায়াত করেননি। আল্লাহর রাসূল (সাঃ) বলেছেন, যে ব্যক্তি আমার নামে হাদীস বর্ণনা করে অথচ সে জানে যে, একথা আল্লাহর নবী (সাঃ) বলেননি, তাহলে সে হবে মিথ্যাবাদীদের অন্যতম।

এই জন্র বলা হয় তিনটি জিনিষ মিথ্যা- ১) নাছিরীদের তোরণ, ২) রাফেজীদের প্রতীক্ষ্যমান, ৩) মুর্খদের 'গওস'। একদাল পীর এরূপ ধারণা পোষণ করে থাকেন যে, গওস ও কুতুব যিনি- তিনি আল্লাহর ওলীদের সাহায্য করেন আর তাদেরকে তিনি ভালভাবে চিনেন। বলা বাহুল্য- এ ধারনাও বাতিল। কোন মানুষকে 'গওস' কুতুব বলা বিদ'আত- আল্লাহর আদেশের খিলাপ। এ ব্যাপারে সাহাবা, তাবেয়ী ও ইমামগণ কেন কথাই বলেননি। (ফতোয়া ইবনু তাইমিয়াহ)

মোটকথা পীরতন্ত্র এমন এক আজব চিজ যা মানুষকে 'গওস' বানিয়ে একেবারে আল্লাহর আসনে বসিয়ে ছেড়েছে। নাউযুবিল্লাহ !!

তাই মুসলমান ভাইয়দের কাছে অনুরোধ; আপনারা বেশী বেশী করে আল্লাহর কিতাব ও রাসূল (সাঃ) সহীহ হাদীস পড়ুন। অহেতুক পীর দের মুরিদ হবার জন্য এদিক সেদিক ছোটাছুটি করবেন না। আপনার সমস্যার সমাধান একমাত্র আল্লাহ পাকই করতে পারেন, অন্য কেউ না। বান্দার সাথে আল্লাহর সম্পর্ক সরাসরি, এখানে কোন মাধ্যম প্রয়োজন নাই। আল কোরআনে অসংখ্য বার একথা বলা হয়েছে।

সূরা ইউনুসের ১৮ নং আয়াতে আল্লাহ পাক বলেন, "তারা আল্লাহ ব্যতিত যাদের পুজায় লিপ্ত রয়েছে, তারা তাদের লাভ ও ক্ষতি কিছুই করতে পারে না, আর এই অপকর্মের কৈফিয়ত স্বরূপ তারা বলে থাকে, ওরা আল্লাহর কাছে আমাদের জন্য সুপারিশকারী মাত্র।"

সূরা আয-যুমারের তৃতীয় আয়াতে বর্ণিত আছে, আল্লাহ পাক বলেন, "উপসনাকে শুধু আল্লাহর জন্য নির্ধারিত কর। যারা আল্লাহকে ছেড়ে আরও পৃষ্ঠপোষকের দল গ্রহণ করেছে, তারা বলে থাকে আমরা ওদের পূজা অর্চনা এই আশাতে করি যে, তারা 'ওসীলা' হযে আমাদেরকে আল্লাহর কাছে পৌঁছে দিবে।"



[***]ইসলামে পীর তন্ত্র, সুফীজম বলতে কিছু নাই। যেখানে এসব দেখবেন চোখ বুজে ধরে নিবেন এসব ভন্ডামী। পারলে প্রতিহত করুন, মানুষকে এসব ভন্ডামী থেকে সর্তক করুন। অসল পীর বা নকল পীর ‌দূরে থাক, এদেরকে মুসলমান বলা যাবে কিনা সন্দেহ আছে। এরা মানুষকে আথিরাতে পার করানোর কথা বলে, কিন্তু এরা যে নিজেদের জায়গা জাহান্নাম করে নিয়েছে।

পীরদের মধ্যে যে নিজেকে হক্কানী পীর বলে দাবী করেন মাওলানা সৈয়দ মোহম্মদ এছহাক সাহেবর আক্বীদা দেথুন:

১. আল্লাহর আন্দাজ নাই... (ভেদে মারেফাত, ১৫পৃ:)
২. শরিয়ত কামেল পীর সাহেব যদি এমন হুকম দেন যাহা প্রকাশ্যে শরিয়তের খেলাফ হয়, তবুও তা নিরাপত্তিতে আদায় করিবে.... (আশেক মাশুক, ৩৫পৃ.)
৩. আমি এতবড় আলীশান খোদা, আমি জমিন ও আসমানে সামাই হই না, একমাত্র মোমেনের কলবে সামাই হই.... (ভেদে মারেফাত, ২১পৃ:)
৪. মনসুর হাল্লাজ আল্লাহপাকের মোরাকাবা করিতে করিতে আল্লাহর নূরের মধ্যে গরক হইয়া হঠাৎ একদিন বলিতে লাগিলেন আনাল হক (আমি খোদা)... (আশেক মাশুক, ৪২পৃ.)
৫. পীর সাহেব হলেন আখেরাতের উকিল স্বরূপ... (ভেদে মারেফাত, ৬০পৃ:)
৬.যেই ব্যক্তির পীর নাই, তাহার পীর শয়তান... (ভেদে মারেফাত, ২৩পৃ:)
৭. বান্দা অসংখ্য গুনাহ করার ফলে আল্লাহপাক তাহাকে কবুল করিতে চান না। পীর সাহেব আল্লাহপাকের দরবারে অনুনয় বিনয় করিয়া ঐ বান্দার জন্য দোয়া করিবেন, যাহাতে তিনি কবুল করিয়া নেন।... (ভেদে মারেফাত, ৩৪পৃ:)
৮. কাফন চোরের হাত আমার হাতের সঙ্গে লাগিয়াছে, এখন কেয়ামত দিবসে ওকে ছাড়িয়া আমি কেমনে পুলছেরাত পার হইয়া যাইব? (ভেদে মারেফাত, ২৭-২৮পৃ:)
৯. পীরের মুরীদ হওয়া ফরজ। (মাওয়াযেজ এসহাকিয়া)
১০. যদি কারো দুইজন পীর হয় তবে দুই পীর তোমার দুই ডানা ধরে বেহেশতে নিয়ে যাবেন, কোনই ক্ষতি নেই। (মাওয়াযেজ এসহাকিয়া, ৫৫-৫৬পৃ:)


এগুলো কি মুসলমানের আক্বীদা? কোরাআন হাদীসের সাথে এসবের সম্পর্ক আছে কি? কয়েকটি উপমা দিলাম মাত্র। এরূপ হাজারটা দেয়া যাবে। হিন্দুরা তো না জেনে শিরক করে, কিন্তু এরা কেন করে জানেন? এক কথাই, এসব শুধুই ধান্দা। কারণ- ইরি ধান, বুরো ধান, মুরিদান, আয়ের শ্রেষ্ঠ তিন উপদান। সব ধান্দা ভাইয়েরা। কেও অজ্ঞনতার সহিত কুফরী করলো, আল্লাহপাক তাহাকে লগু শাস্তি দিবেন, হয়তো মাফও করতে পারেন। কিন্তু যে জেনে শুনে কুফরী করলো, সে মাফ পা্ওয়া তো দূরে থাক, তার শাস্ত হবে দ্বিগুন। কারণ সে ইচ্ছাকৃত কুফরী করলো।

যার আমল তার সাথে যাবে, কাউর কোন আমল কাউর কোন উপকারে আসবে না। ভালো কাজ করলে ভালো কাজের প্রতিদান হিসেবে জান্নাত, বিপরীতে জাহান্নাম অরধারিত। আল্লাহ পাক এরশাদ করেন: "যে ব্যক্তি গুনাহ করে, তা তারই দাযিত্বে থাকে। কেউ অপরের বোঝা বহন করিবে না।" (সূরা আনআম: ১৬৪) হযরত আবু হুরাইরা (রা:) থেকে বর্ণিত:

قَامَ رَسُولُ اللهِ صلى الله عليه وسلم حِينَ أَنْزَلَ اللهُ عَزَّ وَجَلَّ (وَأَنْذِرْ عَشِيرَتَكَ الأَقْرَبِينَ)، قَالَ: يَا مَعْشَرَ قرَيْشٍ, اشْتَرُوا أَنْفُسَكُمْ مِنَ اللهِ، لاَ أُغْنِي عَنْكُمْ مِنَ اللهِ شَيْئًا يَا بَنِي عَبْدِ مَنَافٍ لاَ أُغْنِي عَنْكُمْ مَنَ اللهِ شَيْئًا يَا عَبَّاسُ بْنَ عَبْدِ الْمُطَّلِبِ لاَ أُغْنِي عَنْكَ مِنَ اللهِ شَيْئًا وَيَا صَفِيَّةُ عَمَّةَ رَسُولِ اللهِ لاَ أُغْنِي عَنْكِ مِنَ اللهِ شَيْئًا وَيَا فَاطِمَةُ بِنْتَ مُحَمَّدٍ صلى الله عليه وسلم، سَلِيني مَا شِئْتِ مِنْ مَالِي، لاَ أُغْنِي عَنْكِ مِنَ اللهِ شَيْئًا. (رواه البخاري ومسلم)

"যখন আল্লাহ সুবহানাহু ওয়াতায়ালা এই আয়াত (আপনি নিকটতম আত্মীয়দের সর্তক করে দিন) নাযিল করেন, তখন নবী করীম (স:) (নিজের আত্মীয় স্বজনকে) দাওয়াত দিতে উঠেন। তিনি বলেন, হে কোরাইশ সম্প্রদায়, নিজেকে আল্লাহর আযাব থেকে ক্রয় করিয়া ফেলো, আমি তোমাদেরকে আল্লাহর আযাব হইতে রক্ষা করতে পারবো না। হে আবদে মানাফের সন্তানরা, আমি তোমাদেরকে আল্লাহর আযাব হইতে বাঁচাতে পারবো না। হে আব্বাস বিন আব্দুল মুত্তালিব, আমি আপনাকে আল্লাহর আযাব হইতে রক্ষা করতে পারবো না। হে সাফিয়া, রাসূলের ফুফী, আমি আপনাকে আল্লাহর আযাব হইতে রক্ষা করতে পারবো না। হে ফাতেমা, মুহাম্মদের মেয়ে, আমার সম্পত্তি যাহা ইচ্ছা তুমি চাইতে পারো, কিন্তু আল্লাহর আযাব হইতে আমি তোমকে বাঁচাতে পারবো না। (সহীহ বুখারী ও সহীহ মুসলিম)

যারা এসব পীরদের পিছনে সময় নষ্ট করছেন তাদের জন্য উপেরোক্ত হাদিসটি যতেষ্ট। যেখানে রাসূল (স:) তাঁর প্রতিবেশী, নিকট আত্মীয়, চাচা, মেয়ে, ফুফী কাউকে আল্লাহর আযাব হইতে বাঁচাতে পারবে না, সেখানে পীর আপনাকে কেমন করে বাঁচাবে? এসব ভন্ডদের পিছু ছেড়ে কোরআন সুন্নাহ অনুসরণ করুন।

''পাঁচ ওয়াক্ত নামাজে কম পক্ষে ৩০ বার সূরা ফাতিহা পড়েন না? সেখানে কি মহান আল্লাহকে বলেন না, ....
”যিনি বিচার দিনের মালিক, আমরা একমাত্র তোমার'ই ইবাদত করি এবং শুধুমাত্র তোমার'ই সাহায্য প্রার্থনা করি। আমাদেরকে সরল পথ দেখাও?''


মহান আল্লাহ তায়ালা কী বারবার পবিত্র আল-কোরআনে সতর্ক করেন নাই?

"মনে রেখে যারা আল্লাহর(অলি যারা) বন্ধু, তাদের না কোন ভয় ভীতি আছে, না তারা চিন্তান্বিত হবে।"(সূরা ইউনুস, আয়াত ৬২)।(তাই বলে তাঁদের পূজা করা যাবেনা।)

"আর উপাসনা করে আল্লাহকে বাদ দিয়ে এমন বস্তুর, যা না তাদের কোন ক্ষতিসাধন করতে পারে, না লাভ এবং বলে, এরা তো আল্লাহর কাছে আমাদের সুপারিশ কারী।"(সূরা ইউনুস, আয়াত ১৮)।

"যারা আল্লাহ ব্যতীত অপরকে উপাস্য রূপে গ্রহণ করে রেখেছে এবং বলে যে, আমরা তাদের এবাদত এজন্যেই করি,যেন তারা আমাদেরকে আল্লাহর নিকটবর্তী করে দেয়।“(সূরা আল-যুমার,আয়াত ০৩)।

“আর আসমানে কত ফেরেশতাই না রয়েছে যাদের সুপারিশ সামান্যও কাজে আসবেনা যতক্ষণ না আল্লাহ যাকে ইচ্ছা সুপারিশ করার অনুমতি দেবেন, যার উপর তিনি সন্তুষ্ট থাকেন তার জন্য”(সূরা আন্-নাজম,আয়াত ২৬)।

এই যাকে ইচ্ছা অনুমতি দেবেন কথাগুলো আপনাদের পীর বাবাদের উদ্দেশ্যে বলা হয়নি।  মোফাছ্ছির গন বলেন,কাল কেয়ামতের দিন সকল নবী রাসূলরাই একের পর এক সুপারিশে অপারগতা প্রকাশ করবেন।সকলেই নিজেদের ছোট ছোট ভুলের কথা ভেবে পেরেশান থাকবেন।

[***] সম্মানিত (?) পীরগণ ও তাদের মুরিদগণ কোরআন থেকে দলিল দেন যে আদম আ: কে সিজদাহ করতে বলা হইছিল ফেরেশতাদের। কারণ কি? কারণ তিনি তাদের চেয়ে বেশী জ্ঞান সম্পন্ন ছিলেন। পাশাপাশি আদম আ: ও ফেরেশতাদের মধ্যে জ্ঞান এর প্রতিযোগীতায় তিনি জয়লাভ করেছিলেন।

তো আদম আ: এর যদি জ্ঞান বেশী থাকার কারণে ফেরেশতারা তাকে সিজদাহ করে। তাহলে পীরের জ্ঞান বেশী থাকার কারণে কেন মুরীদরা তার সিজদাহ করতে পারবে না?
শয়তান যেহেতু আদম আ: কে সিজদাহ করেনি, তাই সে জাহান্নামী। তেমনি বর্তমানে যে পীরদের সিজদাহ করবে না তারাও শয়তান, জাহান্নামী।

তাদের এই দলিল এক কথাতেই খন্ডন করা যায় যে,
: জ্ঞান বেশী থাকার কারণে যদি কাউকে সিজদা করা যেত তাহলে বিশ্ব নবী, সর্বশেষ ও চুড়ান্ত নবী, আমাদের প্রাণপ্রিয় নবী মোহাম্মদ সা: ছিলেন সেই সিজদাহ পাওয়ার সর্বপ্রথম দাবীদার এবং সবচেয়ে যোগ্য। সকল পীরের থেকেও যোগ্য।

=> কিন্তু সাহাবাগণ কি তাকে সিজদাহ করেছিলেন?
=> মহানবী সা: কি তাদের সিজদাহ করতে বলেছিলেন তাকে। নাকি এক আল্লাহকে?

আল্লাহু আকবার। সিজদাহ একমাত্র আল্লাহর প্রাপ্য। পীর নামক শয়তানগুলো আল্লাহর এই অধিকারেও হাত দিয়েছে। তাদের মতে যারা পীরকে সিজদাহ করে না তারা শয়তানের মতো জাহান্নামী। মূলত যারা পীরকে সিজদাহ করে তারা আল্লাহর ইবাদাত কে খন্ড খন্ড করে আল্লাহর পাশাপাশি মানুষের ইবাদাত এ লিপ্ত যা শিরকে আকবর

সত্য প্রকাশিত হওয়ার পরও এমনটি যে করে সে ইসলাম থেকে খারিজ হয়ে যাবে। তাই জ্ঞান লাভের বা সত্য আসার পরপরই এসব পীরপুজা, পীর সিজদাহ ছাড়ার আহবান রইল।

[***]আল্লাহর রাসুল সা: আলী রা: কে নির্দেশ দিয়েছিলেন যে, সকল উচু কবর ধ্বংস করার জন্য। আমাদেরও এখন একই কাজ সকল উচু কবর, মাজার নামের ব্যবসা ধ্বংস করে দেওয়া, মাটির সাথে সমান। আফসোসের বিষয় সেই আলী রা: এর কবরই এখন মাজারে পরিনত করছে।

মাজার শব্দের অর্থ হলো দর্শনীয় স্থান। যেটা দেখলে মন ভাল হয়। যেমন সমুদ্র সৈকত একটা মাজার বা দর্শনীয় স্থান।

সহীহ হাদিসগুলোতে আছে, কবর পাকা করা নিষেধ, কবরে বাতি দেওয়া নিষেধ, কবরের উপর ঘর নির্মাণ নিষেধ, কবরকে উৎসরেব স্থান বানানো নিষেধ, কবরে গিলাফ লাগানো নিষেধ। কিন্তু আমাদের মুসলমান নামধারীরা সবগুলো নিষেধ করা কাজই বেশী করে করে।

বলতে পারে সেগুলো পীরদের মাজার। কিন্তু প্রশ্ন হলো এই পীরগুলার অস্তিত্ব কেন সাহাবাদের যুগে নাই, কেন তাবেয়ীদের যুগে নাই। কারণ এটা একটা ব্যবসা যা মানুষের ধর্মীয় অনুভূতিকে কেন্দ্র করে গড়ে উঠে।

আল্লাহ কোরআনে বলেছেন
সূরা ফাতির-২২> হে নবী, তুমি কবরে শায়িতদের কথা শুনাতে সক্ষম না।
আর আমাদের কবরগুলোতে এমনই আক্বিদাহ পোষন করে যে কবর বাসী শুনে।

আল্লাহ কোরআনে বলেছেন
সূরা আহকাফ-৯> হে নবী, বল, আমি জানি না আমার সাথে আল্লাহ কি ব্যবহার করবেন এবং আমি জানি না আল্লাহ তোমাদের সাথে কি ব্যবহার করবেন।

বুঝার চেষ্টা করুন, নবী নিজেই যেখানে জানেন না তার সাথে কি ব্যবহার হবে, সেখানে আমাদের দেশের ৯০% মানুষ মনে করে আব্দুল কাদের জিলানী, শাহ জালাল, শাহ পরান (র:) রা জান্নাতি। তারা জান্নাতের সার্টিফিকেটই দিয়া দেয়।

অনেকে তাদের মুখে জান্নাতি না বললেও মনে মনে সেটা বিশ্বাস করে। আর ঈমান হলো সেটাই যা অন্তরে বিশ্বাস করা হয়, মুখে স্বীকার করা হয় এবং কার্য দ্বারা সম্পাদন করা হয়।

কবরপুজারী, মাজারপুজারীরা মুখে অস্বীকার করলেও তাদের অন্তর এই স্বাক্ষ্যই দেয় যে তারা জান্নাতি।
আল্লাহ আমাদের কবর পুজা, মাজার পুজা ইত্যাদি থেকে বাচার এবং কবর পুজা মাজার পুজা ধ্বংস করার তৌফিক দান করুন। আল্লাহ এই পীর পুজারী, কবর পুজারীদের হেদায়েত দান করুন। আমীন। 


আসুন আমরা সঠিক ইসলামকে জানি। বর্তমানে অধিকাংশ মানুষই দ্বীনের ১০০% গন্ডমূর্খ। যে কারনেই আমাদের ঈমান-আকীদার এই হাল। অধিকাংশ মানুষ আজ মুসলমান হওয়া সত্বেও মুশরিক।

পীর  সর্ম্পকে আরো জানতে দেখুন
http://www.banglainternet.com/islamic_pirtontro.php


কোয়ান্টাম গুরু মহাজাতক কেন কোরআনের আয়াতের ভিন্ন অর্থ এবং ব্যাখ্যা করেছেন?
http://www.somewhereinblog.net/blog/liton1970/29554433


পীর সাহেব দেওয়ানবাগী ও তাঁর কিছু ঝাকানাকা ইসলাম বিরোধী কর্মকান্ড

চরমোনাই পীর ভক্তদের বলছি- আপনাদের পীরের কৃত্তি দেখে যান।

কুতুব বাগের ভন্ড নামধারী জাকির নামক পীরের হাকীক্বত ফাঁস


অলি আউলিয়ার ব্যাপারে মানুষের ভূল আকিদাহ এবং কোরআনের আলোকে অলি আউলিয়ার প্রকারভেদ
 
 

No comments:

Post a Comment