শুরু করছি আল্লাহর নামে যিনি পরম করুণাময়, অতি দয়ালু

যাবতীয় প্রশংসা আল্লাহ তা' আলার যিনি সকল সৃষ্টি জগতের পালনকর্তা।

মুহাম্মদ (সাঃ)-আল্লাহর রাসূল

মুহাম্মদ (সাঃ)-সকল মানুষের জন্য উদাহরন, সর্বশ্রেষ্ঠ মানুষ, ও আল্লাহর রাসুল

আল কোরআন - মহান আল্লাহ প্রদত্ত কিতাব

এ সেই কিতাব যাতে কোনই সন্দেহ নেই। পথ প্রদর্শনকারী পরহেযগারদের জন্য,

আমাদেরকে সরল পথ দেখাও

আমরা একমাত্র তোমারই ইবাদত করি এবং শুধুমাত্র তোমারই সাহায্য প্রার্থনা করি।

আল্লাহ নিতান্ত মেহেরবান ও দয়ালু

সে সমস্ত লোকের পথ, যাদেরকে তুমি নেয়ামত দান করেছ। তাদের পথ নয়, যাদের প্রতি তোমার গজব নাযিল হয়েছে এবং যারা পথভ্রষ্ট হয়েছে।

Labels:

আর্ন্তজাতিক মাতৃ ভাষা দিবস- অমর একুশে এবং বিশ্ব

ভাষাকে নিয়ে মানুষের হৃদয় লালিত পালিত ও বিকশিত, ভাষার জন্য বলা যায় মানুষ আজ সভ্য আজ এত উন্নত এবং সৃস্টির সেরা জীব। ভাষাই মানুষকে দিয়েছে মনের ভাব প্রকাশ করার, ভাল মন্দ প্রকাশ করার শক্তি যা আমাদের করেছে সামাজিক এবং সেই সাথে করেছে একে অন্যয়ের সহায়ক। মা, মাতৃভাষার সাথে নাড়ির টান ও সর্ম্পক অবিচ্ছেদ্য।


আর্ন্তজাতিক মাতৃভাষা দিবস চলে আসছে ২০০০ সাল হতে যখন বাংলাদেশ সরকার অফিসিয়ালি ইউনেসকোতে আবেদন করে এবং  ১৯৯৯ সালে ১৭ নভেম্বরে ইউনেস্কোর সাধারন কনফরেন্সে সবসম্মতি ক্রমে গৃহীত হয়  যেখানে ২১ এ ফেব্রুয়ারীকে "আর্ন্তজাতিক মাতৃ ভাষা দিবস" হিসেবে ঘোষনা করা হয়। এই ঘোষণার ফলে আমাদের একুশের গৌরবোজ্জল  ইতিহাস বিশ্ব দরবারে ছড়িয়ে  গেছে । ২০০০ সালের একুশে ফেব্রুয়ারি প্রথম আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবস হিসেবে পালন হওয়া এতে নতুন মাত্রা যোগ করেছে। আমাদের মত জাতিসংঘের ১৮৮টি সদস্য দেশেও উদযাপিত হয়ে থাকে  এই আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবস ।

এটা বাংলাদেশের জন্য এক অবিস্বরনীয় অর্জন বলাযায় মুক্তিযুদ্ধের মাধ্যমে স্বাধীনতা অর্জনের পর এটিই সবচেয়ে বড় অর্জন। আর্ন্তজাতিক মাতৃভাষা দিবস শুধু বাংলাদেশের জন্য নয় বরং এটি সকল মানুষের সকল ভাষার সারা বিশ্বের জন্য গৈরবের, সকলের ভাষাকে ভালবাসার জানার এবং উন্নয়নের জন্য ভাবার দিন। তাসত্বেও বাংলাদেশই সবচেয়ে গর্বিত আর্ন্তজাতিক মাতৃভাষা দিবসের জন্য কারন বাংলাদেশের এবং ভাষা শহীদদের জন্যই আজ আমাদের সারা বিশ্বের মানুষের এ পাওয়া।

এবার একটু ফিরেদেখা আর্ন্তজাতিক মাতৃ ভাষা দিবসের ইতিহাস: আমরা বাঙালি ,বাংলা আমাদের মাতৃভাষা । বিশ্বের প্রায় ৩০কোটি মানুষের মাতৃভাষা বাংলা । মাইকেল , বঙ্কিমচন্দ্র ,রবীন্দ্রনাথ ,নজরুল ,জীবনান্দ,শরতচন্দ্রসহ অসংখ্য সাহিত্যকর্মী ও ভাষাপ্রেমী মনীষীর কর্মপ্রয়াসে বাংলা ভাষা উন্নীত হয়েছে আন্তর্জাতিক মানে ।

২১শে মার্চ ১৯৪৮ সালে  তৎকালীন পাকিস্তানের গভর্নর জেনারেল মোহাম্মদ আলী জিন্নাহ ঘোষনা দেন যে উর্দু এবং শুধুমাত্র উর্দুই হবে পাকিস্তানের একমাত্র রাস্ট্র ভাষা। তখন পাকিস্তান দুভাগে ছিল এক পশ্চিম ও পুর্ব পাকিস্তান( যা বর্তমানে বাংলাদেশ)। এ ঘোষনার পর পুর্ব পাকিস্তান( যা বর্তমানে বাংলাদেশ) এর জনগন যাদের মাতৃভাষা বাংলা সবাই প্রতিবাদ করে।
১৯৫২ সালের ২১শে ফেব্রুয়ারী ,ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের কলাভবনের ঐতিহাসিক আমতলায় হাজার হাজার ছাত্রছাত্রী একত্র হয়েছিলেন সেই উদ্দীপ্ত তরুণদের মধ্যে তুমুল উত্তেজনা চলছিল । রাষ্ট্রভাষা বাঙলা চাইব -এই দাবিতে এক অদ্ভুত চঞ্চলতা চলছিল । তারা সেইদিন পাকিস্তানি শাসকগোষ্ঠীর সব ধরনের নিপীড়নের বিবরুদেদ্ধ রুখে দাড়াতে যূথবদ্ধ হয়ছিলেন । তারা সেদিন বজ্রদীপ্ত কন্ঠে ১৪৪ ধারা ভাংগার পক্ষে রায় দিয়েছিলেন । তার পর দলে দলে বিভক্ত হয়ে ছাত্রছাত্রীরা মিছিল বের করলে পুলিশ তাদের উপর লাঠিপেটা করে ,কাদানে গ্যাসের শেল ছোড়ে ,গুলি করে হত্যা করে সালাম,বরকত,রফিক, শফিক ,জব্বারসহ অরো নাম না জানা অনেককে ।

কিন্তু সেই নৃশংস হত্যাকান্ড অমিত প্রাণের কল্লোল থামাতে পারে না । আন্ন্দোলন ছড়িয়ে পড়ে গোটা শহরে ,সারা দেশে । তারপরদিন প্রথম শহীদ দের স্মরণ করে ঢাকায় শহীদ মিনার তৈরী করা হয় যা পাক শাসক ভেংগে ফেলে।

সময়টা ছিল ১৯৫২ সালের ২১শে ফেব্রুয়ারীর বিকেলে তিনটা ২০ থেকে ৫০ মিনিট । সেই বিকেলের ৩০ মিনিটে তারা নির্ধারণ করে দিয়েঠছলেন আমাদের জাতি আর মাতৃভাষার ভবিষ্যতকে । এই সেই ৩০ মিনিট যখন পুলিশ সতর্কবাণী  না উচ্চারণ করেই নির্বিচারে গুলি চালিয়েছিলেন    । এই সেই ৩০ মিনিট যা প্রতিবাদী তরুণ তরুণীদের সমবেত শক্তিকে অরো বহুগুণ বাড়িয়ে দিয়েছিল , তাদের সংকল্প আরো অটল করে তুলেছিল । তারা গুলির সামনে বুক পেতে দেওয়ার সাহস দেখিয়েছিলেন । সেই ৩০ মিনিটই নির্ধারণ করে দিয়েছিলেন আমাদের মহান মাতৃভাষার আর জাতির ভাগ্য ,যা কিনা স্ফুলিংগ  হিসেবে কাজ করছে । সেই স্ফুলিংগ দাবানলের মত ছড়িয়ে পড়েছিল শহর থেকে  গ্রামে , প্রতিটি জনপদে ।

এরপর একটি তারিখ ২১শে ফেব্রুয়ারী ,একটি বছর ১৯৫২ সাল আমাদের অত্ত্যন্ত আপন হয়ে আমাদের হৃদয়ে চিরকালের জন্য ঠাই পেয়ে গেছে । আমাদের ভাষা বাংলাকে আমরা নিজের করে পেয়েছি । আমরা একটি দেশ পেলাম যার নাম বাংলাদেশ । আর একটি দিবস পেলাম যাকে সারা বিশ্ব স্বীকৃতি দিল আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবস হিসেবে ।

মাতৃভাষার ধর্মীয় প্রভাব ইসলাম কি বলে:  মানুষের চিন্তা চেতনা ও মনের ভাব প্রকাশের সর্বোত্তম উপার হলো মাতৃ ভাষার মাধ্যমে  তাই মাতৃভাষার গুরুত্ব ইসলামে অপরিসীম। মানুষের জন্য ভাষা আল্লাহর পক্ষ হতে নিয়ামত স্বরুপ আল্লাহ সুরা আর রহমানে বলেন  সূরা নং ৫৫ আয়াত ৩-৪ "আল্লাহ সৃষ্টি করেছেন মানুষ, তাকে শিখিয়েছেন ভাষা"

আল্লাহ মানুষকে হেদায়াতের জন্য অনেক নবী রাসুল পাঠিয়েছেন বিভিন্ন দেশে বা জাতির কাছে । সেই সকল নবী রাসুল গন তাদের জাতির কাছে আল্লাহর বানী প্রচার করেছেন তাদের মাতৃভাষার মাধ্যমে আল্লাহ বলেন সুরা ইবরাহিম সুরা নং১৪  আয়াত নং ৪  " আমি সব পয়গম্বরকেই তাদের স্বজাতির ভাষাভাষী করেই প্রেরণ করেছি, যাতে তাদেরকে পরিষ্কার বোঝাতে পারে। অতঃপর আল্লাহ যাকে ইচ্ছা, পথঃভ্রষ্ট করেন এবং যাকে ইচ্ছা সৎপথ প্রদর্শন করেন। তিনি পরাক্রান্ত, প্রজ্ঞাময়। "

আর আমাদের পবিত্র কোরআনও নাযীল হয় আমাদের মহানবী রাসুল (সঃ) এর কাছে ওনার মাতৃভাষায় যা ছিল আরবী দেখুন সুরা ১২) সূরা ইউসূফ  আয়াত ২ "আমি একে আরবী ভাষায় কোরআন রূপে অবতীর্ণ করেছি, যাতে তোমরা বুঝতে পার। "         

এবং ১৯) সূরা মারইয়াম আয়াত ৯৭ এ  "আমি কোরআনকে আপনার ভাষায় সহজ করে দিয়েছি, যাতে আপনি এর দ্বারা পরহেযগারদেরকে সুসংবাদ দেন এবং কলহকারী সম্প্রদায়কে সতর্ক করেন।"

এবং ২০) সূরা ত্বোয়া-হা , আয়াত ১১৩ "এমনিভাবে আমি আরবী ভাষায় কোরআন নাযিল করেছি এবং এতে নানাভাবে সতর্কবাণী ব্যক্ত করেছি, যাতে তারা আল্লাহভীরু হয় অথবা তাদের অন্তরে চিন্তার খোরাক যোগায়।"

এছারাও ইসা আলাইহিস সালাম এই উপর ইনজিল কিতাব নাযিল হয় যা ছিল ওনার মাতৃভাষায় হিব্রুতে।

ভাষার ভিন্নতাই হচ্ছে আল্লাহর মহিমা/মর্যাদা/গৌরব/ঐশ্বর্য  ৩০) সূরা আর-রূম  আয়াত নং ২২ শে আল্লাহ  বলেন "তাঁর আর ও এক নিদর্শন হচ্ছে নভোমন্ডল ও ভূমন্ডলের সৃজন এবং তোমাদের ভাষা ও বর্ণের বৈচিত্র। নিশ্চয় এতে জ্ঞানীদের জন্যে নিদর্শনাবলী রয়েছে।"    


বাংলাদেশের ভাষা: বাংলাদেশ একটি বহু জাতি, বহু ধর্ম এবং বহু ভাষার দেশ। এ দেশে প্রধান ভাষা বাংলা হলেও শতকরা দুই ভাগেরও অধিক ভিন্ন ভাষাভাষী মানুষ বাস করে। এদের মধ্যে উর্দুভাষী বিহারি, তেলেগুসহ ৩০ লাখ বা তারও বেশী আদিবাসী বা নৃতাত্ত্বিক জাতিগোষ্ঠী বাস করে। যদিও সরকারি হিসাবে এই সংখ্যা এর অর্ধেক। বাংলাদেশে বাঙালি ছাড়াও  প্রায় ৪৫ টি আদিবাসী  জনগোষ্ঠী রয়েছে। বাংলাদেশে বসবাসকারী আদিবাসীদের ভাষা বিশে­ষণ করে দেখা যায় যে, পৃথিবীর চারটি প্রধান ভাষা-পরিবারের প্রায় ৩০টি ভাষা তারা ব্যবহার করে । এর মধ্যে কিছু ভাষা পৃথক বৈশিষ্ট্যসম্পন্ন হলেও অনেক ভাষাই পরস্পর এতটা ঘনিষ্ঠ যে এগুলোকে উপভাষাই বলা যায় যেমন তনচঙ্গা মূলত চাকমা ভাষার উপভাষা। অনুরুপভাবে রাখাইন মারমা ভাষার, লালং বা পাত্র গারো ভাষার এবং বিষ্ণুপ্রিয়া মণিপুরি ও হাজং বাংলার উপভাষা। সে ক্ষেত্রে বাংলাদেশের আদিবাসী ভাষার সংখ্যা ২৬-৩০ টি।

আর্ন্তজাতিক মাতৃ ভাষা দিবস কিভাবে পালন করা হয়:?  বাংলাদেশের মানুষের কাছে আর্ন্তজাতিক মাতৃ ভাষা দিবসের গুরুত্ব অপরিসীম , এই দিনে জাতিয় পতাকা অর্ধ নিমিত রাখা হয় সকল সরকারী ও বেসরকারী অফিসে সেই সকল ভাষা শহীদদের স্বরনে। সারাদেশ হতে মানুষ ঢাকার কেন্দীয় শহীদ মিনারে আসেন তাদের শ্রদ্ধা জানাতে এবং প্রধান মন্ত্রী ও রাস্ট্রপতীর মাধ্যমে প্রথম প্রহরে শ্রদ্ধা নিবেদন শুরু হয় যা টিভি ও বেতারে সরাসরি সম্প্রচারিত হয়ে থাকে এবং সকল জেলাতেও জেলার শহীদ মিনার গুলো মানুষে ভরপুর হয়ে থাকে। এই দিনে তারা শহীদ মিনারে ফুল প্রদান করেন শ্রদ্ধা হিসেবে, সারা দেশের সকল জেলা ও পাড়া মহল্লাতেও অস্থায়ী শহীদ মিনার বানানো হয় যেখানে ছোট ছেলে মেয়ে থেকে যুবক বৃদ্ধ সবাই শ্রদ্ধা প্রদর্শন করে।


সারা বিশ্বেও একই ভাবে যেখানে শহীদ মিনার  রয়েছে বা অস্থায়ী ভাবে তৈরী করে ফুলের শ্রদ্ধা প্রদর্শন ও ভাষা বিষয়ক আলোচনা এবং সংস্কৃতিক অনুস্ঠানের মাধ্যমে এই দিন পানল করা হয়ে থাকে।


এ পৃথিবীর জন্য আর্ন্তজাতিক মাতৃ ভাষা দিবস :
সারা বিশ্বে অনুমানিক ৬০০০ ভাষায় কথা বলা হয়ে থাকে এর মধ্য ৬০% থেকে ৮০% রয়েছে ঝুকির মধ্যে  যার মানে এই ৬০-৮০% ভাষা গুলো ১০০ বছর পরে আর প্রচলিত থাকবেনা যা বিশ্ব ঐতিহ্যের প্রতি হুমকি, মানবতার প্রতি হুমকি।

আমার মত আরো যারা প্রবাসে রয়েছেন তাদের আর্ন্তজাতিক মাতৃ ভাষা দিবসে পালনের জন্য এক্সট্রা কিছু রয়েছে যা আমরা প্রতিদিনই করতে পারি, আমাদের প্রতিদিনের কাজের ফাকে কখনো কি দেখছি আমার সহকর্মী কোন ভাষায় কথা বলে তাদের ঐতিহ্য কি? 

আমার উদাহরনই দেই এখানে অস্ট্রেলিয়ায় বিশ্বের সকল দেশের মানুষ অভিবাসি হয়ে থাকতে আসে সবার ভাষা ভিন্ন এমনকি এ দেশের আদিবাসীদের ভাষাও ভিন্ন ইংরেজী নয়। তাই রাস্তায় বাসে ট্রেনে বা রেস্টুরেন্টে বা অফিসে কত মানুষের সাথে প্রতিদিন দেখা হচ্ছে, যদি সুযোগ ও সময় থাকে সাহস করে তাদের সবার অরিজিন বা মাতৃভাষা সম্পকে যদি জানতে চেয়ে একটি কথা বলা শুরু করি দেখবেন সেই মানুষটা আপনাকে কত আগ্রহ নিয়ে মুখে কতটা হাসি নিয়ে আপনাকে তার ভাষায় কথা শোনাচ্ছে এই হচ্ছে মাতৃভাষা আর আমরা বাংলাদেশি হিসেবে তাদের কে মনে করিয়ে দিতে পারি আর্ন্তজাতিক মাতৃ ভাষা দিবসের কথা।

এবার একটু খারাপ খবরটাও দেই অস্ট্রেলিয়ার নর্দান টেরিটরি যেখানে শত শত স্কুলের শিক্ষার্থিরা যারা তাদের মাতৃভাষায় কথা বলে (ইংরেজি নয়) তারা মাতৃভাষায় শিক্ষা হতে বন্চিত হচ্ছে আর সরকারী সহায়তা ও কম পাচ্ছে তাদের ভাষায় কারন সরকারের পলিসির জন্য যা কিনা তাদের মাতৃভাষায় শিক্ষা প্রদান ব্যন করে রেখেছে যদিও অস্ট্রেলিয়া সাপোর্ট করে ইউনাইটেড নেশনের ডিক্লারেশন যা আদিবাসি দের মাতৃভাষায় শিক্ষার সমঅধিকার নিশ্চিত করে এটা আমাকে মনে করিয়ে দেয় আমাদের পাহাড়ী অন্চলের লোকদের কথা যদিও তাদের আদিবাসি মানতে আমি নারাজ তবে তাদের ভাষা রক্ষায় আমি একশত ভাগ সাপোর্ট করবো।

তবে এ দিবসের তাৎপর্য ও গুরুত্ব সর্ম্পকে বলা যায় এখন হতে আগামিতে এই বিশ্বে যারাই কোন ভাষা বা ঐতিহ্যের প্রতি কোন প্রকার বিরুপ আচরন করবে বা করার চিন্তার করবে তার আগে একশ বার ভাববে তার পরিনতির কথা। আর্ন্তজাতিক মাতৃ ভাষা দিবস প্রতি বছর আমাদের স্বরন করিয়ে দেয় এই দিবস পৃথিবীর সকল ভাষার সুরক্ষার জন্য উদাহরন স্বরুপ যা একটি ওয়াচ ডগ হিসেবে কাজ করছে কারন কেহ কোন ভাষার প্রতি মানুষের প্রতি জুলুম করে যে পার পাবেনা এই দিন আমাদের সেটাই স্বরন করিয়ে দেয়। এখান থেকে সামনে এগিয়ে যাওয়া শুধু ভাষার প্রতি শ্রদ্ধা, এটা একটি ব্যতিক্রমি ও গুরুত্বপুর্ন উপহার সারা বিশ্বকে সকল মানুষ কে একটি ছোট্র গরিব দেশের মানুষের পক্ষ হতে।

আর আমাদের জন্য আর্ন্তজাতিক মাতৃ ভাষা দিবস বর্তমানটা চেক করে দেখি: ২১শে ফেব্রুয়ারী এলেই আমরা শোক পালনের অভিনয় করি । রাস্ট্র প্রধান থেকে শুরু করে সাধারন মানুষ পর্যন্ত যে যার মতো শোক পালনের অভিনয়ে অংশ গ্রহন করে নিজেদের ধন্য মনে করি ।

২১ শে ফেব্রুয়ারী মধ্যরাত থেকে শুরু করে সন্ধ্যা পর্যন্ত যতো কোটি টাকার ফুল দেওয়া হয় শহীদ মিনার একটি বছর যদি ফুল না দিয়ে সে টাকাটা শহীদদের স্মৃতি সংরক্ষনে ব্যয় করা হতো তা হলে হয়তো বাংলাদেশের ইতিহাস অন্যরকম হতো ।

২১ শে ফেব্রুয়ারী এলেই সপ্তাহ জুরে ধুয়ে মুছে পরিস্কার করা হয় শহীদ মিনার অথচ শহীদদের কবর পরিস্কার করা প্রয়োজন মনে করে না সরকার সরকার । সালাম,বরকত,রফিক,জব্বার আরো নাম না জানা কতো শহীদ যে অবহেলায় অপমানে মুখ গুজে পরে আছে কবরে তার খোজ রাখার কোন দ্বায়িত্ব যেন নেই রাস্ট্রের, সালাম, বরকত,রফিক ,জব্বারের পরিবারের সদস্যরা এখনও পায়নি সরকারের তরফ থেকে কোন সাহায্য সহযোগীতা । যা সত্যিই দু:খজনক।

২১ শে ফেব্রুয়ারী ঘটা করে ফুল দেবার অভিনয় করার পর ২২শে ফেব্রুয়ারী চলে ঘটা করে দৈনিক গুলোতে এবং টিভি চ্যানেল গুলোতে নিজের ছবি দেখা, স্মৃতি চারন সহ আরো কতো কি । যা সত্যিই হাস্যকর। মুখেই শুধু গেয়ে যাই —আমার ভাইয়ের রঙে রাঙ্গানো একুশে ফেব্রুয়ারী — আর মনে আচরন করি বিমাতাসুলভ ।

আর তরুন থেকে শুরু করে বর্তমান প্রজন্মের অবস্থা জানতে এটাই যথেস্ট যেখানে দেখানো হয়েছে তরুন হতে আধুনিক মা সবাই জানেনা ২১শে ফেব্রুয়ারী কি হয়েছিল। এর চেয়ে লজ্জার আর কিছু আছে কি? আমার জানা মতে নেই।



এবারের ফেব্রয়ারীতে সবাই সচেতন হই বাংলা হোক হিন্দি আগ্রাসন মুক্ত, ডোরেমনের প্রভাব শিশুদের মাঝে দেখেছি এবং তা বন্ধ করাতে সাধুবাদ কিন্তু বড়রা যে সিরিয়ালে আসক্ত এবার তা থেকে মুক্তির জন্য সবাই কাজ করে যাই।
 
আর যারা আধুনিকতার নামে হিন্দিতে কথা বলে ইংলিশে ভাব মারে এবং বাংলাটা ঠিকভাবে বলতে পারে না তাদের জন্য কবি - আবদুল হাকিম তার বঙ্গবাণী কবিতায় যথার্থই বলেছেন-
যে সবে বঙ্গেত জন্মি হিংসে বঙ্গবাণী।
সে সব কাহার জন্ম নির্ণয় ন জানি॥
দেশী ভাষা বিদ্যা যার মনে ন জুয়ায়।
নিজ দেশ তেয়াগী কেন বিদেশ ন যায়॥"


আমাদের আশা  আর্ন্তজাতিক মাতৃ ভাষা দিবসে: বাংলা ভাষার চরম প্রকাশও পূর্ণ বিকাশ ঘটেছে বিশ্ব মাতৃভাষা দিবসের মাধ্যমে বাংলা ভাষার  সংরক্ষণের জন্য ১৯৫২ সালে বুকের তাজা রক্ত ঢেলে দিয়েছিল এদেশের অকুতোভয় সন্তানেরা । তাদের আত্মত্যাগ আজ আন্তর্জাতিক পরিসরে মর্যাদা লাভ করেছে ।

বিশ্বের বিভিন্ন মানুষ তাদের আত্মত্যাগ কে স্মরণ করবে । আমাদের গৌরবদীপ্ত জীবনকাহিনী বিশ্ববাসী শ্রদ্ধাভরে স্মরণ করবে । আর আমাদের  জাতীয় জীবনে বাংলা ভাষার সমৃদ্ধি এ উন্নতি ত্বরান্বিত করতে হবে । আর তা সম্ভব আমাদের ভাষাকে ভালবাসার মাধ্যমে এই ইতিহাস জানার মাধ্যমে একে সবার কাছে ছরিয়ে দেয়ার মধ্যমে। আশাকরি আমার এ পোস্টের মাধ্যকে সবাই একটু হলেও আমাদের এই মহান ভাষাকে ভালবেসে সবার মাঝে ছরিয়ে দিবো সেই শুভকামনায়


আমার ভাইয়ের রক্তে রাঙানো-

A Tribute to International Mother Language Day (21st February) by ZANALA Bangla

---------------------------------------------------------------------
এই পোস্ট লিখতে যে সকল সুত্রের ও পোস্টের সাহাজ্য নেয়া হয়েছে:
০। আমার গত বছরের ইংরেজি ব্লগ International Mother Language Day- ফায়সাল হাসান http://www.maximusit.net/p/international-mother-language-day.html
১। ১৯৫২ এর ২১শে ফেব্রুয়ারী... ফিরে দেখা... সুরঞ্জনা - http://www.somewhereinblog.net/blog/Suronjona/29327977
২। সামুতে প্রকাশিত ২১শে ফেব্রুয়ারী নিয়ে প্রকাশিত উল্লেখযোগ্য পোষ্ট -নষ্ট কবি http://www.somewhereinblog.net/blog/architect_rajib/29325939
৩। যে আগুন ছড়িয়ে গেলো সবখানে ... রাগিব হাসান http://www.somewhereinblog.net/blog/ragibhasanblog/28770489
৪। উইকিপিডিয়া http://en.wikipedia.org/wiki/Bengali_Language_Movement
৫।২১শে ফেব্রুয়ারি এলেই আমরা শোক পালনের অভিনয় করি -মুহাম্মদ সাখাওয়াত হোসেন  http://blog.bdnews24.com/ShakhawatBabon/69140
৬। আমাদের মাতৃভাষা- http://www.dcnaogaon.gov.bd/index.php?option=com_content&view=article&id=80&Itemid=90
৭। Importance of mother language in Islam-    Prof. Hasan Abdul Quayyum http://www.daily-sun.com/details_yes_15-02-2013_Importance-of-mother-language-in-Islam_410_2_33_1_1.html
------------------------------------------------------------------------

লিখেছেন ফয়সাল হাসান -faysal2005@gmail.com

লেখাটির বিষয়বস্তু(ট্যাগ/কি-ওয়ার্ড): আর্ন্তজাতিক মাতৃ ভাষা দিবসএকুশে ফেব্রুয়ারী২১ শে ফেব্রুয়ারীভাষা দিবস১৯৫২ভাষা শহীদভাষা সংগ্রামবাংলা ভাষা৮ই ফাল্গুনবাংলাদেশমাতৃভাষাপ্রথম প্রহরএকুশেমহান একুশে

0 comments
Labels:

বাংলাদেশে সাউথ ইস্ট এশিয়ার প্রথম মসজিদ

বাংলাদেরশের উত্তর দিকে রংপুরের রামজাপুরের এই মসজিদটিই হতে পারে সাউথ ইস্ট এশিয়ার প্রথম মসজিদ যা কিনা ৭০০ শতাব্দিতে তৈরি। যার মানে ১৩০০ বছর আগের !!! যা বাংলাদেশের ইসলামের ইতিহাসের এক গুরুত্বপুর্ন স্থান বলে বিবেচিত হতে পারে।

টিম স্টিল একজন বৃটিশ সৌখীন প্রত্নতত্ববীদ এই মসজিদ টি পুরাতন বলে আবিস্কার করেন, মনেকরা হচ্ছে যে মসজিদ টি ৭০০ শতাব্দিতে তৈরি। যা হজরত মুহাম্মদ (সঃ) মৃত্যুর মাত্র ৫০-১০০ বছরের মধ্যে তৈরি হয়। প্রচলিত আছে যে মোহাম্মদ (সঃ) এর সময়কার দুটি মসজিদ আছে এই সাউথ ইস্ট এশিয়ায় এক কেরেলা ইন্ডিয়াতে আর একটি চায়নাতে তবে তাদের কোন প্রত্নতাত্বীক প্রমান নেই যেটা বাংলাদেশের এই মসজিদের আছে।

রংপুর থেকে মহাসড়ক ধরে কুড়িগ্রামের দিকে এক কিলোমিটার দক্ষিণে লালমনিরহাট জেলার সদর উপজেলার পঞ্চগ্রাম ইউনিয়নে এ প্রাচীন মসজিদটির অবশিষ্টাংশ এখনো আছে। তবে এর ওপর নতুন একটি মসজিদ নির্মাণ করেছেন স্থানীয়রা। নতুন মসজিদটির ভেতরে পুরনো মসজিদের অবশিষ্টাংশ- যার অনেকটাই এখনো মাটিচাপা- তা অক্ষত রাখা হয়েছে। স্থানটির নাম ‘মজদের আড়া’। আঞ্চলিক ‘আড়া’ শব্দের অর্থ বন-জঙ্গলে ঢাকা স্থান। ৯৩’ সালেই জঙ্গল পরিষ্কার করার সময় ফুলের নকশা আঁকা কিছু পুরনো ইটের স্তুপ বেরিয়ে আসে। পরে মাটি সরালে একটি মসজিদের ভিত ও নকশা দেখা যায়। সেখানে পাওয়া যায় আরবি ভাষায় ‘লা-ইলাহা-ইল্লাল্লাহু মুহাম্মদুর রাসুলুল্লাহ, হিজরী সন ৬৯’ লেখা একটি বস্তুখণ্ড।


এর আগে মনে করা হত ইসলাম এদেশে আসে ১২০০ শতাব্দির দিকে কিন্তু এই মসজিদের ধংসবাশেষ প্রমান করে যে আরবরা এ দেশে হজরত মুহাম্মদ (সঃ) মৃত্যুর মাত্র ৫০-১০০ বছরের মধ্যেই এসেছিল। এই মসজিদের পাশের ছোট নদী প্রমান করে যে এখান কার নদী গুলো ছিল আগেরকার দিনের হাইওয়ে যার মাধ্যমে আরবের ব্যবসায়িরা চায়নাতে ব্যবসার পাশাপাশি ইসলাম প্রচারের জন্য যেত।

গ্রামবাসিরা এই মসজিদটি সংস্কারের সময় পুরাতন ইট ও কোরআনের লিখা সম্বলিত পাথর পায়। তারা আরো জানান যে এর পর কর্তৃপক্ষ এগুলো নিয়ে যায় এর পর আর কর্তৃপক্ষের কাছ থেকে কিছু জানা যায়নি। স্থানীয় যাদুঘরে খোজ নিলে কর্তৃপক্ষ কোন উত্তর দেননি এবং ভিতরেও প্রবেশ করতে দেয়নি ওয়েবে সার্চ করে বিষয় টা পরিস্কার হয় কেন , মসজিদের পুরাতন নির্দশন গুলো অনলাইনে বিক্রি হচ্ছে যেমন এই ওয়েব সাইটটিতে গিয়ে বাংলাদেশ লিখে সার্চ দিন http://www.lotussculpture.com/NewArrivals.html দেখবেন আমাদের দেশ থেকে কত কিছু চুরি করে বিক্রি করছে যার একটি ছোট্ট বাটির দামও ৩০০-৪০০ ডলার যা বাংলাদেশে ২৫০০০-৩০০০ হাজার টাকার মত।

কালচার মিনিস্টারকে ফোন দিয়ে ও অনেক অনুরোধ করেও ইন্টার ভিউর জন্য পাওয়া যায়নি যাতে এবিষয়ে তাদের জানানো যায় যে জাতীয় সম্পদ কেমন করে পাচার হচ্ছে আর কেন সংরক্ষন করা হচ্ছে না।

পাচারের আরেক টি কারন হচ্ছে আমাদের দেশের লোকজন গরীব আর অশিক্ষিত বেশি তারা এসকল প্রত্নতাত্বীক পুরাতন নির্দশন গুলোর মুল্য ও কিভাবে এটি টুরিস্ট স্পট হয়ে তাদের অর্থনৈতিক উন্নয়নে সহায়ক হতো সে সম্পর্কে জানে না।

আশার খরব এই যে গ্রামবাসিরা আশাবাদি যে এই মসজিদের নীচে ও আশে পাশে আরো প্রত্নতাত্বীক পুরাতন নির্দশন রয়েছে তারা আর কর্তৃপক্ষকে বিশ্বাস করে না। এশিয়ান ডেভলোপমেন্ট ব্যংক বাংলাদেশকে
১২ মিলিয়ন ডলার অনুদান দিয়েছে এসকল প্রত্নতাত্বীক পুরাতন নির্দশনকে সংরক্ষন ও প্রচারের জন্য কিন্তু কতটাকা খরচ হচ্ছে বা কাজ কতটুকু হচ্ছে সেটা দেখার যেন কেউ নেই। গ্রামবাসিদের একটাই আশা তারা যেন জানতেপারে এই মসজিদটা কত আগের আর যেন এটাকে রক্ষা করা হয় প্রত্নতাত্বীক নির্দশন হিসেবে।

আর আমাদের ব্লগারদের কাছে একটাই অনুরোধ প্রচার করুন আর নিজ স্থান থেকে যতটুকু পারুন মানুষকে সচেতন করুন ও নিজেও এসকল দেশের গুরুত্বপূর্ন সম্পদ সংরক্ষনে সচেস্ট হোন।



সুত্র:আল জাজিরা: Click This Link
মুল রিপোর্ট নিকোলাস হক আল জাজিরা টিভি
অনুবাদ: ব্লগার মেলবোর্ন

0 comments
Labels: ,

জ্যোতিষ বাবাদের কাহিনী- নারী পুরুষ সবাই সবাধান



মার এক বন্ধুর দোকানে গিয়েছিলাম একটা কাজে। কিন্তু সে দোকানে না থাকায় সময় কাটানোর জন্য দোকানে রাখা ম্যাগাজিন পড়তে লাগলাম। ম্যাগাজিনের নাম "মৌচাকে ঢিল"। সংখ্যা জুলাই ২০১২। ওটা একটা বিশেষ সংখ্যা ছিলো যার নাম ছিলো "প্রতারণা ২"। পৃষ্ঠা উল্টাতে গিয়ে একটি লেখায় গিয়ে চোখ আটকে গেলো। লেখাটির শিরোনাম ছিলো “সাইকী”। কৌতুহলবশত লেখাটি পড়তে শুরু করি।

এটা একজন মহিলার কাহিনী যিনি বিবাহিত জীবনে তার স্বামী ও শ্বশুড় বাড়ির লোকজনের মানসিক নির্যাতনের শিকার । তিনি এর থেকে মুক্তি পেতে চাইছিলেন। একবার এক ডেন্টিস্টের চেম্বারে বসে বসে অপেক্ষা করার সময় এক ম্যাগাজিনের একটা বিজ্ঞাপণ তাকে আকর্ষণ করে। যেখানে কোনো এক জ্যোতিষীর ঠিকানা দেয়া ছিলো এবং বলা হয়েছিলো যে ঐ জ্যোতিষী স্বামীকে বশ করা, পারিবারিক অশান্তি দূর করা ইত্যাদি সমস্যা দূর করতে পারেন। মহিলা বিজ্ঞাপনে দেয়া নম্বরে ফোন করলে তাকে আশ্বস্ত করা হয় এবং ঢাকার শান্তিনগরের “সাইকী” ভবনে আসতে বলা হয়। তো মহিলা একদিন ওখানে গেলেন। বেশ পবিষ্কার ঝকঝকে সাজানো গোছনো ঘর।

শেলফে অনেকগুলো বই চমৎকারভাবে সাজানো। দেখে মনে হচ্ছিলো কোনো বড় লেখক কিংবা আইনজীবির বাসায় তিনি এসেছেন। ওখানে একটা বিশেষ ধরনের সোফা ছিলো যেটার সুইচে টিপ দিলে সেটি সাথে সাথে বিছনায় রুপান্তরিত হয়। ঐ জ্যেতিষী ভদ্রমহিলাকে নাস্তা খেতে দিলো, তাদের কথাবার্তা শুরু হলো। কিন্তু দেখা গেলো ঐ লোকটা সমস্যা শোনার চাইতে মহিলার শরীর, যৌনতা এসব নিয়ে কথা বলতে বেশী আগ্রহী! এক পর্যায়ে ঐ মহিলা অজ্ঞান হয়ে পড়েন এবং জ্ঞান ফেরার পর নিজেকে সম্পূর্ণ বিবস্ত্র অবস্থায় ঐ বিশেষ ধরনের সোফায় (বিছানায়) আবিষ্কার করেন। তিনি চিৎকার করে কান্নাকাটি শুরূ করেন এবং পুলিশকে সবকিছু বলবেন বলে চিৎকার করতে থাকেন। কিন্তু লোকটার গায়ে লাগছিলোনা। সে মহিলাকে দেখালো যে অজ্ঞান অবস্থায় সে ঐ মহিলার সাথে যা কিছুই করেছে তার সবটুকু সিলিং ফ্যানের কাছে রাখা ক্যামেরায় ভিডিও করা হয়েছে। তাই সে যা বলবে মহিলা তা করতে বাধ্য থাকবেন নইলে সে ঐ ভিডিও গুলো ইন্টারনেটে ছেড়ে দেবে। এভাবে ব্ল্যাকমেইল করায় মহিলা ঐ লোকটির কথা শুনতে বাধ্য হন এবং লোকটি নানাভাবে উনার উপর যৌন নির্যাতন চালাতে থাকে। তিনি নিরুপায় হয়ে ঐ লোককে টাকা পয়সা, বিয়ের গহনা দিয়ে সর্বস্বান্ত হয়েছেন! এই ঘটনা ২০০৯ সালের। কিন্তু পরে এসব জানাজানি হয়। তার স্বামী তাকে চরিত্রহীনা উপাধি দিয়ে অনত্র ঘর বেধেছে। একটি কন্যা সন্তান সহ সমাজ সংসার তাকে ত্যাগ করেছে। এখন ২০১২ সাল।

কিন্তু যে অংশটি পড়ে আমার গা শিউরে উঠলো তা হলো ঐ লোকটি এখনও উনার উপর সমানতালে যৌন নির্যাতন চালিয়ে যাচ্ছে! উনি আত্নহত্যা করতে চান কিন্তু সন্তানের মুখের দিকে তাকিয়ে সেটা সম্ভব হচেছ না! লেখাটির নিচে লেখা ছিলো ”নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক” এবং তাতে কোনো ঠিকানা ছিলো না। লেখাটি পড়ে এতোটাই অসস্তিতে পড়েছিলাম যে ঐ দিন আর ভাতই খেতে পারিনি! আমি যেনো মনে মনে ঐ মহিলার সাথে কথা বলছিলাম--- আপনি চুপ করে আছেন কেনো? কেনো আপনি কোনো ব্যবস্থা নিচ্ছেন না? যে লোকটা আপনার জীবন ধ্বংস করে দিলো! আপনাকে গৃহহারা স্বামীহারা করলো! নিজে নিকৃষ্ট কাজ করে তার দায়ভার আপনার উপর চাপিয়ে দিয়ে সমাজের সামনে আপনাকে নিকৃষ্ট হিসেবে উপস্থাপন করলো! তাকে আপনি এমনি এমনি ছেড়ে দিবেন! এই দেশের নারীরা কি এতোই অসহায়??

এ ব্যপারে আরো জানার জন্য আমি “সাইকি ভবন” লিখে গুগোল সার্চ দিই। আমার সামনে অনেকগুলো লিংক আসে যার থেকে আমি জানতে পারি যে সাইকি ভবনের ঐ জ্যেতিষীর নাম জীবন চৌধুরী। প্রতারণার অভিযোগে র‌্যাব জীবন চৌধুরীকে গ্রেপ্তার করে ২০০৮ সালের ৩০শে জুন। জীবনের আখড়া সাইকি ভবন থেকে উদ্ধার করা হয় নানা ধরনের গোলক, বিভিন্ন রঙের পাথর, ছদ্মবেশ ধরার কাজে ব্যবহৃত বিশেষ ধরনের আলখাল্লা, মাদকদ্রব্য। সেই সঙ্গে জীবন চৌধুরীর ব্যক্তিগত মোবাইল ফোন থেকে উদ্ধার করা হয় অর্ধশতাধিক পর্নো ভিডিও। যেগুলোতে বিভিন্ন নারীর সঙ্গে যৌনকাজে লিপ্ত দেখা যায় জীবন চৌধুরীকে। পরে র‌্যাবের জিজ্ঞাসাবাদে জীবন স্বীকার করে তার সব অপরাধ। জীবন চৌধুরীকে সোপর্দ করা হয় পল্টন থানায়। পরে ১ মাস জেল খেটে জামিনে বেরিয়ে আসে। এখন সে আবারও ওই ব্যবসা শুরু করেছে। একবার চিন্তা করে দেখেন এইসব জীবন চৌধুরিদের হাত কত লম্বা যে এত জঘন্য অপরাধ করেও মাত্র ১ মাস জেল খাটতে হয় এবং জেল থেকে বের হয়েও তারা ঐ একই জায়গায় বসে একই ধান্দাবাজির কাজ করে! তাদের পালানোর বা ভয় পাবার প্রয়োজনই পরে না! শুধু নারী নয়, পুরুষরাও নানাভাবে এদের দ্বারা প্রতারণার শিকার হচ্ছেন।

আমার মতে, সাধারণ মানুষের সচেতনতার জন্য এসব ঘটনা হাইলাইট হওয়া উচিত। এদের কাছ থেকে সাবধান হউন। কোনো মানুষ কখনও অন্য মানুষের ভাগ্য বদলাতে পারে না! একইভাবে গোলক, বিভিন্ন রঙের পাথর এগুলোও মানুষের ভাগ্যের পেছনে কোনো ভূমিকা রাখে না! আপনি যদি আস্তিক হন তবে সৃষ্টিকর্তার উপর ভরসা রাখুন এবং নিজের সাধ্যমত চেষ্টা চালিয়ে যান। অনেক বড় বড় কথা বললাম। জানিনা ঐ মহিলার জায়গায় আমি হলে কি করতাম। আসল পরিস্থিতি কেমন ছিলো বোঝা কষ্টকর। তবুও সবশেষে ঐ ক্ষতিগ্রস্থ মহিলা ও তার সন্তানের মঙ্গল কামনা করছি। (লিখেছেনঃ- অভিনন্দা ইসলাম সারা)

এবার দেখি ইসলাম এবং রাশিচক্রের ভবিষ্যদ্বাণী: বাংলাদেশ বিশ্বের তৃতীয় বৃহত্তম মুসলিম রাষ্ট্র। এ দেশের প্রায় ৯০ শতাংশ লোক মুসলিম। ইসলাম ধর্মের মূল বা সারবস্তু হলো আকিদা বা বিশ্বাস। এর ওপরই গোটা দীন বা জীবনব্যবস্থার ভিত্তি রচিত। আকিদা বা বিশ্বাসের মধ্যে ত্রুটি থেকে গেলে যাবতীয় কাজের মধ্যে তার ক্ষতিকর প্রভাব প্রতিফলিত হতে বাধ্য। আকিদার মধ্যে ত্রুটি থাকলে মুসলিমরা কখনোই সমীহ আমল করতে সক্ষম হবেন না, আমলের ক্ষেত্রে যতই শ্রম দেন না কেন, সমীহ আকিদার অভাবেই আজকের মুসলিমরা ইসলামী সংস্কৃতি বর্জন করে বিজাতীয় বা পশ্চিমা সংস্কৃতির দিকে বেশি ঝুঁকে পড়ছে।

আকিদার ত্রুটির কারণেই মুসলিমদের মাঝে বিচিত্র ধরনের শিরক ও বিদআত ছড়িয়ে পড়েছে। যার মধ্যে অন্যতম হলো রাশিচক্রে বিশ্বাস। ‘পার্থিব বিষয়াদি জ্যোতিষ্কমণ্ডলী দ্বারা প্রভাবান্বিত এবং এদের গতিবিধি পর্যবেক্ষণ করে ভবিষ্যত্ ঘটনাবলী আগাম বলা সম্ভব।’ এই বিশ্বাসই জ্যোতিষশাস্ত্র নামে পরিচিত। যতদূর জানা যায়, ঈসা (আ.)-এর জন্মের তিন হাজার বছর আগে মেসোপটেমিয়ায় এর সূচনা হয় এবং গ্রিস সভ্যতাবলয়ে তা পূর্ণতা লাভ করে। ইসলামে জ্যোতিষশাস্ত্র চর্চা ও বিশ্বাস হারাম। বিশ্বাস নিয়ে জ্যোতিষীর কাছে যাওয়া, তার ভবিষ্যদ্বাণী শোনা, জ্যোতিষশাস্ত্রের বই কেনা—সবকিছুই নিষেধ। কারণ এর মাধ্যমে জ্যোতিষবিদ দাবি করেন, ভবিষ্যত্ জ্ঞান তার কাছে রয়েছে। অথচ কোরআন মাজিদে আল্লাহ বলেছেন :

‘অদৃশ্যের কুঞ্জি তাঁরই কাছে রয়েছে, তিনি ছাড়া অন্য কেউ তা জানে না’ (সূরা আন’আম : ৫৯)।

‘বল আল্লাহ ছাড়া আকাশমণ্ডলী ও পৃথিবীতে কেউই অদৃশ্য বিষয়ের জ্ঞান রাখে না’ (সূরা আন-নামল : ৬৫)।

জ্যোতিষের কথায় বা জ্যোতিষশাস্ত্রের বইয়ে বিধৃত রাশিচক্রে প্রদত্ত ভবিষ্যদ্বাণী বিশ্বাস করা কোনোভাবেই সঠিক নয়। কারণ রাসুলুল্লাহ (সা.) বলেছেন : ‘যে জ্যোতিষশাস্ত্রের একটি শাখা সম্পর্কে শিক্ষা গ্রহণ করল সে জাদুবিদ্যার একটি শাখার শিক্ষা গ্রহণ করল’ (আবু দাউদ ও ইবন মাযাহ)।

উম্মুল মুমিনীন হজরত হাফসা (রা.) বর্ণনা করেন, রাসুল (সা.) বলেছেন : ‘যে গণকের কাছে যায় এবং কোনো বিষয়ে জিজ্ঞাসা করে, তার ৪০ দিন ও রাতের সালাত গ্রহণযোগ্য হবে না’ (সহীহ মুসলিম)।

সুতরাং ইসলামে জ্যোতিষশাস্ত্র চর্চা করা, বিশ্বাস করা ও প্রচার করার সুযোগ নেই। রাশিচক্র বা রাশিফলে বিশ্বাস করা পরিষ্কারভাবে ইসলামের শিক্ষা ও বিশ্বাসবিরোধী। অজ্ঞ লোকেরা মনে করে, তারা যদি জানে ভবিষ্যতে তাদের ভাগ্যে কী রয়েছে তাহলে তারা পূর্বপ্রস্তুতি নিয়ে তার অমঙ্গল এড়াতে সক্ষম হতে পারে এবং মঙ্গল নিশ্চিত করতে পারে। অথচ আল্লাহ তাঁর রাসুলকে বলেছেন :

‘বল, আল্লাহ যা ইচ্ছা করেন তা ছাড়া আমার নিজের ভালোমন্দের ওপরও আমার কোনো অধিকার নেই। আমি যদি অদৃশ্যের খবর জানতাম, তবে তো আমি প্রভূত কল্যাণই লাভ করতাম এবং কোনো অকল্যাণই আমাকে স্পর্শ করত না’ (সূরা আল-আ’রাফ:১৮৮)।

অতএব, যারা নিজেদের সত্যিকার মুসলিম বলে দাবি করে তারা যেন রাশিচক্রে বিশ্বাস না করে এবং নিজের রাশি জানার জন্য জ্যোতিষের কাছে না যায়। এগুলোতে বিশ্বাস করা শিরক। কেননা এতে আল্লাহর পাশাপাশি অন্যরাও ভবিষ্যত্ জানে বলে বিশ্বাস করা হয়। যে জ্যোতিষীর ভবিষ্যদ্বাণী ব্যবহার করে তার ভবিষ্যত্ কার্যপরিকল্পনা গ্রহণ করে, তার উচিত আল্লাহর নিকট তওবা করা, ভবিষ্যতে তা না করার দৃঢ়সংকল্প করে ঈমানকে নবায়ন করা।

ফেসবুক হতে অপ্রিয় যত সত্য সহ্য করার ক্ষমতা আছে কি ? পেইজ হতে প্রাপ্ত। সবার সচেতনতার জন্

0 comments
Labels: , ,

ঈদে মিলাদুন্নবী মানা ফরযে আইন না কি উদ্দেশ্য প্রনোদিত?

ইদে মিলাদুন্নবী সর্ম্পকে আমার রাজারবাগী ভাইয়েরা যেই যুক্তি দিয়েছেন তা পর্যালোচনা করে দেখি যদিও পোস্ট টা একটু বড় তবে সঠিক তথ্য তুলে ধরার জন্য সব দিকে আলোচনা করা হয়েছে যা পাঠকের বিরক্তির কারন হবেনা বলে আশা করছি।

আমরা এখানে যৈক্তিক ভাবে আলোচনার মাধ্যমে তাদের এই পোস্টের Click This Link যুক্তি প্রমান সমুহ আবার পর্যবেক্ষন করবো

প্রথমত ওনারা এই আয়াতের কথা বলেন : আল্লাহ পাক তিনি কুরআন শরীফ সূরা মারইয়াম-এর ১৫ নম্বর আয়াত -এ হযরত ইয়াহইয়া আলাইহিস সালাম উনার শানে ইরশাদ ফরমান " তার প্রতি শান্তি-যেদিন সে জন্মগ্রহণ করে এবং যেদিন মৃত্যুবরণ করবে এবং যেদিন জীবিতাবস্থায় পুনরুত্থিত হবে।"

এবং অনুরূপ হযরত ঈসা আলাইহিস সালাম উনার নিজের বক্তব্য উল্লেখ করে কালামুল্লাহ শরীফ-এ ইরশাদ হয়েছে সূরা মারইয়াম-এর 33নং আয়াতে " আমার প্রতি সালাম যেদিন আমি জন্মগ্রহণ করেছি, যেদিন মৃত্যুবরণ করব এবং যেদিন পুনরুজ্জীবিত হয়ে উত্থিত হব।"

ভালকথা আমরা ইয়াহিয়া (আঃ) এবং ইসা (আঃ) এর জন্মদিন সম্পকে কোরআনে পেলাম মোহাম্মদ (সঃ) এর জন্মদিন সম্পকে কোরআনে আছে কি?

এরপর ওনারা বলছেন এই আয়াতের কথা :--- আল্লাহ পাক তিনি কুরআন শরীফ-এ সূরা ইউনূস-এর ৫৮ নম্বর আয়াত পাক-এ ইরশাদ ফরমান-
قل بفضل الله وبرحمته فبذلك فليفرحوا هو خير مما يجمعون .
অর্র্থ: “হে হাবীব ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম! আপনি উম্মাহকে জানিয়ে দিন, আল্লাহ পাক তিনি স্বীয় অনুগ্রহ ও রহমত হিসেবে উনার হাবীব ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনাকে পাঠিয়েছেন। সে কারণে তারা যেনো খুশি প্রকাশ করে। এই খুশি প্রকাশ করাটা সেসব কিছু থেকে উত্তম, যা তারা দুনিয়া ও আখিরাতের জন্য সঞ্চয় করে।”----- উপরের এই বোল্ড করা অংশটা তাদের নিজের যোগ করা আসল টা দেখে নিন লিংক সহ

সূরা ইউনুস আয়াত 57-58 "হে মানবকুল, তোমাদের কাছে উপদেশবানী এসেছে তোমাদের পরওয়ারদেগারের পক্ষ থেকে এবং অন্তরের রোগের নিরাময়, হেদায়েত ও রহমত মুসলমানদের জন্য। বল, আল্লাহর দয়া ও মেহেরবাণীতে। সুতরাং এরই প্রতি তাদের সন্তুষ্ট থাকা উচিৎ। এটিই উত্তম সে সমুদয় থেকে যা সঞ্চয় করছ।" Click This Link

ঈদে মিলাদুননবীর জন্য আরো যে আয়াত দেন ওনারা সেটি হলো
---মহান আল্লাহ পাক তিনি কুরআন শরীফ-এ সূরা ফাতহ-এর ৮-৯ নম্বর আয়াত পাক-এ ইরশাদ ফরমান- অর্থ: “হে হাবীব ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম! আমি আপনাকে প্রেরণ করেছি সাক্ষ্যদাতা, সুসংবাদদাতা ও ভয়প্রদর্শনকারীরূপে। অতএব, তোমরা আল্লাহ পাক ও উনার হাবীব হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার প্রতি ঈমান আনো এবং উনার খিদমত করো, তা’যীম-তাকরীম করো সকাল-সন্ধ্যা অর্থাৎ দায়িমীভাবে উনার ছানা-ছিফত প্রশংসা করতে থাকো।”

হে ঈমানদার বান্দা-উম্মাহ! বর্ণিত আয়াত শরীফ-এ পরিষ্কারভাবে বলা হয়েছে যে, হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনাকে পেয়ে আমরা যাতে উনার যথাযথ তা’যীম-তাকরীম, সম্মানসহ সদা-সর্বদা উনারই ছানা-ছিফত বর্ণনা করতে থাকি। এখন এই আয়াত শরীফ-এর আদেশ মুতাবিক যদি উম্মাহরা হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার মুবারক শানে-সম্মানে পবিত্র ঈদে মীলাদুন নবী ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উদযাপন করতঃ তা’লীমী মাহফিল মজলিসের আয়োজন করে, সেটা কোন দলীলের ভিত্তিতে নাজায়িয প্রমাণ করা যাবে? আল্লাহ পাক তিনি যা হালাল করেছেন সেটাকে হারাম-বিদয়াত বলে কোনো ঈমানদার কি কখনো খোদাদ্রোহী ফিরআউনের ক্বায়িম-মাক্বাম হতে চায়?

এবার আসল আয়াতের অর্থ দেখুন ৪৮) সূরা আল ফাতহ আয়াত নং 8-9 "আমি আপনাকে প্রেরণ করেছি অবস্থা ব্যক্তকারীরূপে, সুসংবাদদাতা ও ভয় প্রদর্শনকারীরূপে, যাতে তোমরা আল্লাহ ও রসূলের প্রতি বিশ্বাস স্থাপন কর এবং তাঁকে সাহায্য ও সম্মান কর এবং সকাল-সন্ধ্যায় আল্লাহর পবিত্রতা ঘোষণা কর।" ওনাদের আয়াতের অর্থ দেখুন আর আসল অর্থ দেখুন কেমন পরিবর্তন। Click This Link

নীচে মোহাম্মদ (সঃ) সর্ম্পকে কোরআনের কিছু আয়াত দিলাম দেখেন কোথাও কি ঈদে মিলাদুন্নবীর কথা বলা আছে?

কোথাও কি মোহাম্মদ (সঃ) এর জন্মের কথা বলা আছে? নাই ,আছে শুধু ওনার গুনাবলীর প্রশংসা দেখুন

১। وَمَا أَرْسَلْنَاكَ إِلَّا كَافَّةً لِّلنَّاسِ بَشِيرًا وَنَذِيرًا وَلَكِنَّ أَكْثَرَ النَّاسِ لَا يَعْلَمُونَ
আমিত তোমাক সমগ্র মানব জাতির প্রতি সুসংবাদ দাতা ও সতর্ককারীরুপে প্রেরণ করিয়াছি অধিকাংশ মানুষ জানেনা (৩৪ সুরা সাবাঃ২৮)

২।وَالْيَوْمَ الْآخِرَ وَذَكَرَ اللَّهَ كَثِيرًا রসুলাল্লাহর ভিতর রয়েছে উত্তম আদর্শ ( সুরা আল-আহযাবঃ২১)

৩।আমতো তোমাকে বিশ্বজগতের প্রতি রহমত স্বরুপ প্রেরন করেছি (সুরা আম্বিয়াঃ১০৭)

৪।“রসুলাল্লাহর মধ্যে রয়েছে উত্তম আদর্শ(৩৩-২১)

৫।“আমি তো তোমাকে বিশ্বজগতের প্রতি কেবল রহমত স্বরুপ প্রেরন করেছি”(২১-১০৭)

৬।“তুমি অবশ্যই মহৎ চরিত্রের উচ্চতম স্তরে অধিষ্টিত”(৬৮-৪)

৭।“দেখছেন, তারা আপনাকে দেখছে অথচ দেখছে না( অর্থাৎ চিনতে পারছেনা)(৭-১৯৮)

৮।আমিতো তোমাদের মতই একজন সাধারন মানুষ, আমার প্রতি প্রত্যাদেশ হয় যে, তোমাদিগের ইলাহ, একমাত্র ইলাহ”(১৮-১১০)

৯। “বল, আমি তো নতুন রসুল নহি। আমি জানি না, আমার ও তোমাদিগের ব্যাপার কি করা হবে। আমি আমার প্রতি যা প্রত্যাদেশ হয় কেবল তারই অনুসরণ করি। আমি একজন স্পষ্ট সতর্ককারী মাত্র” (৪৬-৯)

কোরআনে সুরা মোহাম্মদ নামে একটি সুরাও রয়য়েছে সেখানেও ঈদে মিলাদুন্নবী সম্পকে কিছু বলা নেই বরং বলা আছে

10. হে মুমিনগণ! তোমরা আল্লাহর আনুগত্য কর, রসূলের (সাঃ) আনুগত্য কর এবং নিজেদের কর্ম বিনষ্ট করো না। Sura Muhammad Sura number 47- Ayat 33

এখানে আল্লাহর আনুগত্য মানে কোরআনের নিদেশিত পথে এবং রাসুলের আনুগত্য মানে ওনার দেখানো পথে জীবন পরিচালনা করা ওনি যেহেতু এটা পালন করেন নি বা সাহাবারাও করেননি আমরা নিশ্চই সাহাবাদের চেয়ে বেশি ঈমানদার নই আর যদি করেন তবে ঐ আয়াতের শেষে বলা আছে "নিজেদের কর্ম বিনষ্ট করো না"

আরো দেখুন মোহাম্মদ (সঃ) জন্মের তারিখ সম্পকে সঠিক তারিখ জানা যায় না তবে দিন যে সোমবার সেটা নিয়ে মোটামুটি অনেক প্রমান আছে

আবু কাতাদা আনসারি বলেন যে মোহাম্মদ (সঃ) বলেছেন " ওনাকে একবার সোমবারে রোজা রাখা সম্পকে জিগ্গেস করলে ওনি বলেন এটি সেই দিন যেদিন আমি জন্মেছিলাম এবং যেদিন আমার প্রতি ওহি নাযিল হয়েছিল" - সহিহ বোখারি- কিতাব আস সাউমে পাবেন

ইসলামিক হিস্টোরিয়ান রা ১২ তারিখ নিয়েএকমত হতে পারেন নি আর গুগুলে “prophet muhammad exact date of birth” দিয়ে সার্চ করুন পেয়ে যাবেন আমি একটি সাইট থেকে কিছু তথ্য যোগ করলাম দেখুন বলাহয়েছে

কারো মতে, তাঁর জন্ম তারিখ অজ্ঞাত, তা জানা যায় নি, এবং তা জানা সম্ভব নয়। তিনি সোমবারে জন্মগ্রহণ করেছেন এটুকুই শুধু জানা যায়, জন্ম মাস বা তারিখ জানা যায় না। এ বিষয়ে কোন আলোচনা তারা অবান্তর মনে করেন।

কারো কারো মতে, তিনি মুহাররম মাসে জন্মগ্রহণ করেছেন।অন্য মতে, তিনি সফর মাসে জন্মগ্রহণ করেছেন। কারো মতে, তিনি রবিউল আউআল মাসের ২ তারিখে জন্মগ্রহণ করেন। দ্বিতীয় হিজরী শতকের অন্যতম ঐতিহাসিক ও মাগাযী প্রণেতা মুহাদ্দিস আবু মা‘শার নাজীহ ইবন আব্দুর রহমান আস-সিনদী (১৭০হি) এই মতটি গ্রহণ করেছেন।

*অন্য মতে, তাঁর জন্ম তারিখ রবিউল আউআল মাসের ৮ তারিখ। আল্লামা কাসতাল্লানী ও যারকানীর বর্ণনায় এই মতটিই অধিকাংশ মুহাদ্দিস গ্রহণ করেছেন। এই মতটি দুইজন সাহাবী ইবনে আববাস ও জুবাইর ইবন মুতয়িম রাদিয়াল্লাহু আনহু থেকে বর্ণিত। অধিকাংশ ঐতিহাসিক ও সীরাতুন্নবী বিশেষজ্ঞ এই মতটি গ্রহণ করেছেন বলে তারা উল্লেখ করেছেন। প্রখ্যাত তাবেয়ী ইমাম মুহাম্মাদ ইবনে মুসলিম ইবনে শিহাব আয-যুহরী (১২৫হি) তাঁর উস্তাদ প্রথম শতাব্দীর প্রখ্যাত মুহাদ্দিস ও নসববিদ ঐতিহাসিক তাবেয়ী মুহাম্মাদ ইবনে জুবাইর ইবনে মুতয়িম (১০০হি) থেকে এই মতটি বর্ণনা করেছেন।

* কাসতালানী বলেন: ‘‘মুহাম্মাদ ইবনে জুবাইর আরবদের বংশ পরিচিতি ও আরবদের ইতিহাস সম্পর্কে অভিজ্ঞ ছিলেন। রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামের জন্ম তারিখ সম্পর্কিত এই মতটি তিনি তাঁর পিতা সাহাবী জুবাইর ইবন মুতয়িম থেকে গ্রহণ করেছেন। স্পেনের প্রখ্যাত মুহাদ্দিস ও ফকিহ আলী ইবনে আহমদ ইবনে হাযম (৪৫৬হি) ও মুহাম্মাদ ইবনে ফাতুহ আল- হুমাইদী (৪৮৮হি) এই মতটিকে গ্রহণযোগ্য বলে মনে করেছেন।

*স্পেনের মুহাদ্দিস আল্লামা ইউসূফ ইবনে আব্দুল্লাহ ইবনে আব্দুল বার ( ৪৬৩ হি) উল্লেখ করেছেন যে, ঐতিহাসিকগণ এই মতটিই সঠিক বলে মনে করেন। মীলাদের উপর প্রথম গ্রন্থ রচনাকারী আল্লামা আবুল খাত্তাব ইবনে দেহিয়া (৬৩৩ হি) ঈদে মীলাদুন্নবীর উপর লিখিত ‘‘আত-তানবীর ফী মাওলিদিল বাশির আন নাযীর’’ গ্রন্থে এই মতটিকেই গ্রহণ করেছেন।

*অন্য মতে রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামের জন্ম তারিখ ১০ই রবিউল আউয়াল। এই মতটি ইমাম হুসাইনের পৌত্র মুহাম্মাদ ইবন আলী আল বাকের (১১৪হি) থেকে বর্ণিত। দ্বিতীয় শতাব্দীর প্রখ্যাত মুহাদ্দিস আমির ইবন শারাহিল আশ শা‘বী (১০৪হি ) থেকেও এই মতটি বর্ণিত। ঐতিহাসিক মুহাম্মাদ ইবন উমর আল-ওয়াকেদী (২০৭হি ) এই মত গ্রহণ করেছেন। ইবনে সা‘দ তার বিখ্যাত ‘‘আত-তাবাকাতুল কুবরা’’-য় শুধু দুইটি মত উল্লেখ করেছেন, ২ তারিখ ও ১০ তারিখ [8]।

* কারো মতে, রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামের জন্ম তারিখ ১২ রবিউল আউয়াল। এই মতটি হিজরী দ্বিতীয় শতাব্দীর প্রখ্যাত ঐতিহাসিক মুহাম্মাদ ইবনে ইসহাক (১৫১হি) গ্রহণ করেছেন। তিনি বলেছেন: ‘‘রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম হাতীর বছরে রবিউল আউয়াল মাসের ১২ তারিখে জন্মগ্রহণ করেছেন” [9]। এখানে লক্ষণীয় যে, ইবনে ইসহাক সীরাতুন্নবীর সকল তথ্য সাধারণত: সনদ সহ বর্ণনা করেছেন, কিন্তু এই তথ্যটির জন্য কোন সনদ উল্লেখ করেন নি। কোথা থেকে তিনি এই তথ্যটি গ্রহণ করেছেন তাও জানান নি বা সনদসহ প্রথম শতাব্দীর কোন সাহাবী বা তাবেয়ী থেকে মতটি বর্ণনা করেন নি। এ জন্য অনেক গবেষক এই মতটিকে দুর্বল বলে উল্লেখ করেছেন [10]।

* অন্য মতে রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামের জন্ম তারিখ ১৭ই রবিউল আউয়াল।
* অন্য মতে তাঁর জন্ম তারিখ ২২ শে রবিউল আউয়াল।
* অন্য মতে তিনি রবিউস সানী মাসে জন্মগ্রহণ করেছেন।
* অন্য মতে তিনি রজব জন্মগ্রহণ করেছেন। ।
* অন্য মতে তিনি রমযান মাসে জন্মগ্রহণ করেছেন। ৩য় হিজরী শতকের প্রখ্যাত ঐতিহাসিক যুবাইর ইবনে বাক্কার (২৫৬ হি) থেকে এই মতটি বর্ণিত। তাঁর মতের পক্ষে যুক্তি হলো যে, রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম সর্বসম্মতভাবে রমযান মাসে নবুয়ত পেয়েছেন। তিনি ৪০ বৎসর পূর্তিতে নবুয়ত পেয়েছেন। তাহলে তাঁর জন্ম অবশ্যই রমযানে হবে [11]। সুত্র: Click This Link

The only way we could have been absolutely sure about it was if Prophet Muhammad would have told us that himself, which he actually didn’t. If we consider this fact we would be forced to leave all bid’aat (innovations) attached with 12th of Rabi ul Awwal. Click This Link

পরিশেষে এক তো আমরা মুহাম্মদ (সঃ) এর জন্মদিন সম্পকে নিশ্চিত জানি না শুধু সোমবার রবিউল আউয়াল মাস জানি। আর ওনার জন্মদিনের যখন সঠিক তারিখই পেলাম না সেখানে কি করে ওনার মৃত্যু দিবসে আমরা ঈদ পালন করবো?

এবং আমরা দেখেছি ইয়াহিয়া (আঃ) এবং ইসা (আঃ) এর জন্মদিন সম্পকে কোরআনে পেলাম কিন্তু মুহাম্মদ (সঃ) এর জন্মদিন সম্পকে কোরআনে নাই কেন? আল্লাহ যদি এতই গুগুত্বপুর্ন মনে করতেন তবে অন্য নবীদের জন্মদিন সম্পকে কোরআনে নির্দেশ করতে পারলে মহানবী সম্পকে কেন নয়? আর তাদের আয়াতের ভুল ব্যখ্যাও প্রমান করলাম।

এই হাদিসটি একটু দেখুন "হুজুর (সা.) হিজরত করে মদিনায় আসার পর দেখলেন, মদিনার লোকেরা বছরে দু দিন আনন্দ-উৎসবের দিন হিসেবে আমোদফূর্তি এবং খেলাধুলায় লিপ্ত হয়। এটি ছিলো ইসলামপূর্ব জাহিলিয়াত যুগের রীতি। হুজুর (সা.) সাহাবীদেরকে এটি করতে নিষেধ করলেন এবং বললেন যে, আল্লাহ তায়ালা এ দু দিনের পরিবর্তে এর চেয়েও উত্তম দুটি দিন তোমাদিগকে দান করেছেন- ঈদুল আজহার দিন এবং ঈদুল ফিতরের দিন (মেশকাত: আবু দাউদ)" এখানে ঈদে মিলাদুন্নবী বা অন্য কোন ইদের কথা বলা হয় নি।

আর ঈদে মিলাদুন্নবীর ইতিহাস সর্ম্পকে দেখুন : শায়খ আলী মাহফুজ -রাহিমাহুল্লাহ- বলেন : “সর্বপ্রথম এ দিনটি উদযাপন করা হয় মিসরের কায়রোয় : ফাতেমি খলিফারা চতুর্থ শতাব্দীতে এর প্রচলন আরম্ভ করে। তারা ছয়টি মীলাদ বা জন্ম উৎসব প্রবর্তন করে : মীলাদুন্নবী, মীলাদে আলী -রাদিআল্লাহু আনহু-, মীলাদে ফাতেমাতুজ জোহরা- রাদিআল্লাহু আনহা-, মীলাদে হাসান ও হুসাইন- রাদিআল্লাহু আনহুমা- এবং বর্তমান খলিফার মীলাদ। সেই থেকেই তাদের দেশে এ মীলাদগুলো (জন্মানুষ্ঠান) যথারীতি পালন করা হচ্ছিল। অবশেষে এক সময়কার সেনাবাহিনী প্রধান আফজাল এসব মীলাদ রহিত করে দেন। খলিফা আমের বিআহকামিল্লাহ নিজ শাসনকালে পুনরায় এসব মীলাদ চালু করেন, অথচ মানুষ এসব মীলাদ ভুলতে আরম্ভ করেছিল। সপ্তম শতাব্দীতে “ইরবিল” শহরে সর্বপ্রথম এ মীলাদ আরম্ভ করেন বাদশাহ আবু সাঈদ, সেই থেকে আজ পর্যন্ত চলে আসছে তা, বরং তাতে আরও বৃদ্ধি ও সংযোজন ঘটেছে। তাদের রিপু ও প্রবৃত্তির চাহিদা মোতাবেক সব কিছু তারা এতে যোগ করেছে। তাদেরকে এর প্রত্যাদেশ করেছে মানব ও জিন শয়তানেরা”। “আল-ইবদা ফি মাদাররিল ইবতেদা” (পৃষ্ঠা নং: ২৫১)

এবং: শায়খুল ইসলাম ইবন তাইমিয়্যাহ -রাহিমাহুল্লাহ- বলেছেন : “অনুরূপ কতক লোকের (মীলাদুন্নবী) আবিষ্কার, তারা হয়তো নাসারাদের অনুকরণে, অধিকন্তু তার জন্মের নির্দিষ্ট তারিখ সম্পর্কে দ্বিমত তো রয়েছেই। যেমন তারা ঈসা আলাইহিস সালামের জন্মানুষ্ঠান পালন করে, অথবা রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের মহব্বত ও সম্মানের খাতিরে, আল্লাহ তাদের এ মহব্বত ও সম্মানের প্রতি সাওয়াব দিতেও পারেন, তবে রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের জন্মদিনকে ঈদ হিসেবে পালন করার জন্য নয়,কারণ আমাদের পূর্বসূরি ও আদর্শ মনীষী কেউ এটা পালন করেননি, অথচ তখনো এর দাবি বিদ্যমান ছিল, কোন বাঁধা ছিল না, যদি এটা কল্যাণকর হতো অথবা ভাল হতো, তাহলে আমাদের পূর্বসূরিগণই এর বেশী হকদার ছিলেন। রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের মহব্বত আমাদের চেয়ে তাদের মধ্যে বেশী ছিল। তারা তাকে আমাদের চেয়ে অধিক সম্মান করতেন। আমাদের চেয়ে তারা কল্যাণের ব্যাপারে অগ্রগামী ছিলেন। বস্তুত রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের পরিপূর্ণ মহব্বত ও সম্মানের পরিচয় হচ্ছে, তার আনুগত্য ও অনুসরণ করা, তার নির্দেশ পালন করা এবং প্রকাশ্যে ও অপ্রকাশ্যে তার সুন্নত জীবিত করা, তার আনিত দ্বীন প্রচার করা এবং এ জন্য অন্তর-হাত ও মুখ দ্বারা জিহাদ করা, কারণ এটাই আমাদের পূর্বসূরি মুহাজির, আনসার ও তাদের যথাযথ অনুসারীদের নীতি ও আদর্শ ছিল”। ইকতেদাউস সিরাত : (পৃষ্ঠা: ২৯৪-২৯৫)

এবার আসুন জানি কেন তারা পালন করতে চাইছে তার আসল উদ্দেশ্য :
টাকা দিলে বেহেস্তের টিকেট: মুজাদ্দিদে আ’যম হযরত মুর্শিদ ক্বিবলা আলাইহিস সালাম-উনার ক্বওল শরীফ মহান আল্লাহ পাক তিনি ইরশাদ মুবারক করেন, ‘আমি তোমাদেরকে যে রিযিক দিয়েছি তা থেকে তোমরা খরচ করো।’ নূরে মুজাসসাম, হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি ইরশাদ মুবারক করেন, ‘সখী‘ বা দানশীল হচ্ছে ‘হাবীবুল্লাহ’।’ সাইয়্যিদুল আ’ইয়াদ, সাইয়্যিদে ঈদে আ’যম, সাইয়্যিদে ঈদে আকবর পবিত্র ঈদে মীলাদুন নবী ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উপলক্ষে যে ব্যক্তি এক দিরহাম খরচ করবে সে ‘হযরত ছিদ্দীক্বে আকবর আলাইহিস সালাম’ উনার সাথে জান্নাতে থাকবে, পবিত্র বদর ও পবিত্র হুনাইন জিহাদে শরীক থাকার ফযীলত পাবে, উহুদ পাহাড় পরিমাণ স্বর্ণ দান করার ফযীলত লাভ করবে। সুবহানাল্লাহ!
তাই সকলের জন্য দায়িত্ব ও কর্তব্য হচ্ছে- সাইয়্যিদুল আ’ইয়াদ শরীফ উপলক্ষে সাধ্য সামর্থ্য অনুযায়ী খরচ করা বা খিদমতের আঞ্জাম দেয়া। দেখুন ওদের ওয়েব সাইটে http://al-ihsan.net/

তার মানে ওরা এই আয়াতকে অস্বীকার করছে না? আমার তো তাই মনে হয় যেখানে সুস্পস্ট বলা আছে :"“বল, আমি তো নতুন রসুল নহি। আমি জানি না, আমার ও তোমাদিগের ব্যাপার কি করা হবে। আমি আমার প্রতি যা প্রত্যাদেশ হয় কেবল তারই অনুসরণ করি। আমি একজন স্পষ্ট সতর্ককারী মাত্র” (৪৬-৯)"

ওদের ঐ পোস্টে জামিল হাসান বলেছেন: উৎসব বা অন্যান্য আনন্দ দিবসে প্রচুর টাকা খরচ করতে হয় টাকা খরচ আসলে হয়ে যায় । আল্লাহ্‌র রসূল সল্লালহআলাইহিসসালাম এর মৃত্যু দিবসে ঈদ ঘোষণা করা এটা পেট পূজারী ভণ্ড পীরদের টাকা ইনকাম করার একটা উপায় কেননা এটা ত ঈদ ।আর ঈদের দিন বকশিস হাদিয়া দেয়া ত বাংলাদেশে কালচার । ভক্তরা ত ভণ্ড পীরের পায়ে অনেক বকশিশ দিবে আর পীর মাল কামাবে তাই না কি বলেন?

আর রাসুল কে যারা ভালবাসে তারা যদি পাচ ওয়াক্ত নামাজ পড়ে ওনার দেখানো পথে জীবন চালায় তবেই তিনি বেশি খুশি হবেন কারন নামাজে আপনি দুরুদ পরেন আর ওনার জীবন ফলো করে সৎ ও ভালো থাকবেন সেটাইতো মুল উদ্দেশ্য তাই নয় কি। এর জন্যই তো আমাদের মহানবী (সঃ) এত কস্ট সয়েছিলেন মানুষকে ঠিক পথে রাখান জন্য আর সেই মানুষ যদি ওনার জন্মদিনের নামে টাকা পীরের দরবারে ঢালতে থাকে তবে সবচেয়ে অপমান মোহাম্মদ (সঃ) কেই করা হচ্ছে

পাচ ওয়াক্ত নামাজের মধ্যমে আপনি পাচ বার দুরুদ পরছেন মহান আল্লাহর সাথে মিলিত হচ্ছেন সে হিসেবে প্রতিদিনই তো খুশির দিন তাই না?আফসোস! আমরা তাও নিজেদের ইচ্ছামত আনন্দের দিন বানিয়ে নেই


এবং

আর আমরা সেইকথা কি করে ভুলে যাই যে আবু বকর মোহাম্মদ (সঃ) এর মৃত্যুর পর বলেন ": এখন যারা মোহাম্মদ (সঃ) কে উপাসনা করতে জেনে নাও তিনি মৃত্যু বরন করেছেন আর যারা আল্লাহর উপাসনা করে জেনে রাখ তিনি সদা বিদ্যমান এর পর তিনি সূরা আল ইমরান আয়াত ১৪৪ পাঠ করেন "আর মুহাম্মদ একজন রসূল বৈ তো নয়! তাঁর পূর্বেও বহু রসূল অতিবাহিত হয়ে গেছেন। তাহলে কি তিনি যদি মৃত্যুবরণ করেন অথবা নিহত হন, তবে তোমরা পশ্চাদপসরণ করবে? বস্তুতঃ কেউ যদি পশ্চাদপসরণ করে, তবে তাতে আল্লাহর কিছুই ক্ষতি-বৃদ্ধি হবে না। আর যারা কৃতজ্ঞ, আল্লাহ তাদের সওয়াব দান করবেন। "

ইদে মীলাদুন্নবী (সঃ) যে ফরজে আইন নয় তার প্রমান হিসেবে ভিডিও: https://www.youtube.com/watch?v=yE9gX1JIKS4

1.



2. Fighting over Maulid/the Birthday of the Prophet PBUH? https://www.youtube.com/watch?v=Pfp3f6Bumm0

3.Celebrating Mawlid un Nabi innovation (Eid Milad un Nabi) Prophets Birthday-
https://www.youtube.com/watch?v=PhbXXuJ6grA




4. Is Celebrating Birthdays or Anniversaries forbidden (HARAM) in Islam Dr Zakir Naik 


আমার পোস্টের মুল কথা : ঈদে মিলাদুননবী রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের মহব্বত ও সম্মানের খাতিরে পালন করতে সমস্যা দেখিনা , আল্লাহ আমাদের এ মহব্বত ও সম্মানের প্রতি সাওয়াব দিতেও পারেন তবে এটি নিশ্চই নামাজের মত ফরযে আইন নয় সে বিষয়ে আপনারাও একমত হবেন?

আর যখন আমরা পালন করবো তো কি ভাবে পালন করলে সবচেয়ে ভাল হয়, হাদীস অনুযায়ী বলাযায় এই দিনে রোজা রাখা যায় আর আবু লাহাব যেমন করে দাসী কে ছেরে দিয়েছিলেন খুশিতে তেমনি এইদিনে আমরা গরীব দের কে সাহাজ্য করতে পারি সমাজ ও রাস্ট্রের উন্নয়নে পরিস্কার পরিচ্ছন্নতা কর্মসুচী নিতে পারি বা মসজিদে মুহাম্মদ (সঃ) জীবনী নিয়ে আলোচনা করতে পারি , বাচ্চাদের ওনার সম্পকে জানাতে পারি তাই না। কোন এক নিদ্দিস্ট পীরের কাছে যেতে হবে কেন?

এবং উপরোক্ত কাজ সমুহ করতে আমার কোনই দ্বিমত নাই সমস্যা হলো যখনই এই ব্যপারটাকে ফরজে আইন বলা হচ্ছে যা ঠিক না আর তাদের দরবার শরীফে যেতে তারা ওনার সীরাত করারও বিরোধি তাইলে এইটা সুস্পস্ট ধান্দাবাজি করছে না?

আমি সত্য সবার সামনে তুলে ধরার জন্য যথা সম্ভব চেস্টা করেছি সঠিক তথ্য দিতে তবে আমারও ভুল হতে পারে ভুল হলে ধরিয়ে দিবেন যাতে শুধরে নিতে পারি তবে যৈক্তিক ভাবে তা তুলে ধরবেন আর ওনাদের জবাব জানতে চাইলে দেখতে পারেন যা নাকি ওনাদের দাঁতভাঙ্গা জবাব তো যারা জবাব পেয়ে দাত খুয়াইতে চান এখানে গুতা মারেন Click This Link আমার দাত সহিহ সালামতে ঠিক আছে তাই এই পোস্টের অবতারনা

অরো জানতে এখানে দেখুন ইসলামে ঈদে মীলাদুন্নবী পালনের বিধানের উপর কিছু ফাইল http://www.quraneralo.com/miladunnabi-files/ এবং এখানে Click This Link
আল্লাহ সবাইকে বোঝার তৈফিক দিন। আর আমার ভুল গুলো ক্ষমা করুন। আমিন

লিখেছেন-  ফয়সাল হাসান

0 comments
Labels: , , ,

নারী ও ইসলাম- আসুন দেখি সত্যের চোখে


নারী বিষয়ে ইসলাম কি বলে তা নিয়ে অনেকে ইসলামকে দোষারপ করেন তাদের মুল কথা গুলো এই যে তারা বলে ---কোরআনে আছে “ তোমাদের স্ত্রীগণ তোমাদের জন্য শস্যক্ষেত্র। একসাথে চার বিয়ে করাও বৈধ, নারী পুরুষের অর্ধেক সম্পত্তি পাবে। আল্লার পরে কেউ যদি এবাদতের দাবীদার হয় সে হবে স্বামী। নারীদের মস্তিস্ক নাকি পুরুষের মস্তিস্কের থেকে ছোট, এ কারণে নারী অধস্তন। নারীদের জন্য সব কালা আইন, নারীর রোম দেখলো পুরুষ- গুনাহ হোলো নারীর, পুরুষের লোলুপ চোখ নারীদেহের বিভিন্ন জায়গায় বিচরণ করলো-পাপ হোলো নারীর। নারী শব্দটাই শাস্ত্রের কাছে একটি পাপবাচক শব্দ। এই পাপ থেকে দূরে রাখার জন্য এই শ্রেণী বৈষম্য। উচ্চবিত্ত থেকে নিম্নবিত্ত কোথাও বৈষম্যের ঘাটতি নেই, শুধু রঙ রূপের কিছুটা ভিন্নতা।

এ বিষয়ে কিছুটা আলোচনা শুরু করা যাক ---

১। অনেক নারীবাদী অভিযোগ করে ইসলাম নারীদের অধিকার হরণ করছে। সেক্ষেত্রে তারা যেসব উদাহণ দেয় তার মধ্যে অন্যতম হচ্ছে, ইসলামে নারীদের শস্যক্ষেত্র হিসেবে তুলনা করা হয়েছে।

এবার চলুন সেই আয়াতার দিকে দৃস্টিপাত করাযাক->>> ইসলামে নারীদের শস্যক্ষেত্র হিসেবে তুলনা করা হয়েছে এটা হচ্ছে সুরা বাকারার ২২৩ নং আয়াত দেখুন: "তোমাদের স্ত্রীরা হলো তোমাদের জন্য শস্য ক্ষেত্র। তোমরা যেভাবে ইচ্ছা তাদেরকে ব্যবহার কর। আর নিজেদের জন্য আগামী দিনের ব্যবস্থা কর এবং আল্লাহকে ভয় করতে থাক। আর নিশ্চিতভাবে জেনে রাখ যে, আল্লাহর সাথে তোমাদেরকে সাক্ষাত করতেই হবে। আর যারা ঈমান এনেছে তাদেরকে সুসংবাদ জানিয়ে দাও। "

এখানে শস্য ক্ষেত্র বলে সাবধান করে দেয়া হয়েছে যে আপনি যদি স্ত্রীর সাথে ভাল ব্যবহার না করেন তবে ভাল ব্যবহার ও ভাল সন্তান ও ভবিশ্যত প্রজন্ম আশা করতে পারেন না তাই কেমন পরিবার চান সেটা আপনার উপন নির্ভর করে ঠিক জমির মত ভাল ফসল পেতে হলে কঠোর পরিশ্রম ও পরিচর্যা করতে হয় আর যদি তা না করেন তবে ভাল ফসল পাবেন নাআর অনেক ইংরেজি অনুবাদেও পাবেন স্ত্রী , আসলে আরবীতে আছে নিসা যার বাংলা নারী স্ত্রী নয়,

এখন সেই ২২৩ নং আয়াতের ব্যখ্যাটা এমন হতে পারে"Remember that women in the society are the guardians of your future generations, just as a garden keeps the seeds and turns them into flowering plants. So, whenever you meet with women socially, treat them with respect, keeping the aforementioned principle in mind. This conduct will go a long way to insure the betterment of the future generations. Send forth good today for the sake of tomorrow. Be mindful of God and know that you will, one day, face Him. O Messenger! Give good news to the believers. [Nisaa = Women, not wives এই আয়াতে দেখুন নিসা মানে হচ্ছে নারী বউ বা স্ত্রী নয়]" নেয়া হয়েছে QXPiv (THE QUR’AN AS IT EXPLAINS ITSELF (Fourth Edition)By Shabbir Ahmed, M.D. পাবেন এখানে http://ourbeacon.com/?page_id=11605

ঐ একই আয়াতে আরো বলাআছে যে" আর নিজেদের জন্য আগামী দিনের ব্যবস্থা কর এবং আল্লাহকে ভয় করতে থাক। আর নিশ্চিতভাবে জেনে রাখ যে, আল্লাহর সাথে তোমাদেরকে সাক্ষাত করতেই হবে। আর যারা ঈমান এনেছে তাদেরকে সুসংবাদ জানিয়ে দাও। "

"আগামি দিনের ব্যবস্থা করা" মানে কি? নিশ্চই বউকে মেরে ইচ্ছামত ব্যবহার করে আগামিদিনের ভালব্যবস্থা সম্ভব নয়, আর এর পরই আল্লাহ বলেছেন "আল্লাহকে ভয় করতে থাক" কেন ভয় করবেন ? যাতে আপনি আপনার বউয়ের প্রতি জুলুম করে যে পার পাবেন না আল্লাহ সেটিই বলছেন কারন তিনি এর পরেই বলেন "আর নিশ্চিতভাবে জেনে রাখ যে, আল্লাহর সাথে তোমাদেরকে সাক্ষাত করতেই হবে।"

তার মানে নিশ্চই এই যে আপনি আপনার বউ বা নারীদের প্রতি কেমন ব্যবহার করেছিলেন সেটা আল্লাহর সাথে সাক্ষাতে বা বিচার দিনেই ফয়সালা হবে আরো কত সুন্দর কোরআন দেখুন এর পরই আল্লাহ বলেন " আর যারা ঈমান এনেছে তাদেরকে সুসংবাদ জানিয়ে দাও। "

এখানে বলা হয়েছে যারা ঈমানদার তাদের জন্য সুসংবাদ কেন জানেন কারন ঈমানদারের দায়িত্ব প্রথমত তার ময়ের সেবা করা সর্বদা তারপর স্ত্রীকে সবর্দা খুশি রাখা এবং মেয়ে হলে তাকে জ্যন্ত কবর না দিবে বা অবহেলা না করে ভাল মানুষ হিসেবে গড়ে তোলা আর সকল নারীদের সম্মান করা তাই তাদের জন্য সুসংবাদ কারন আপনি নারীদের ভাল রাখলে পরিবার ভাল হয় পরিবার থেকে সমাজ এবং সমাজ হতে দেশ ভাল হয়।

আরো একটি দৃস্টিভংগি আছে তা হলো যে অনেকে মনে করেন এই শস্যক্ষেত্র কন্সেপ্টটা এসেছে প্রাচীন কৃষি ব্যবস্থার প্রতীক হিসেবে। শস্যক্ষেত্র যেভাবে গাছপালা খাদ্য দ্রব্যাদি উৎপন্ন করতে পারে ঠিক তেমনই নারী সন্তান উৎপাদন করতে পারে, কন্সপ্টটা কিছুটা এরকম। এখানে অবশ্য কিছুটা মাতৃতান্ত্রিক সমাজ ব্যাবস্থারও ইঙ্গিত রয়েছে বলে মনেহয় (প্রাচীন মিথের চরিত্র বিশ্লেষণ করে)

এখন প্রশ্ন হচ্ছে, খৃস্টীয় ৬০০ শতকে এসে পুরুষতান্ত্রি সভ্যতায় ইসলাম এটাকে আসলে কিভাবে উপস্থাপন করতে চেয়েছে? এটা কি আদি ধর্মেরই ধারাবাহিকতা রক্ষা নাকি পুরুষতান্ত্রিক সভ্যতায় এটাকে ভিন্ন কোন দৃষ্টিকোণ থেকে উপস্থাপন করা হয়েছে ?

এর উত্তরে ব্লগার গোলাম দস্তগীর লিসানি বলেন -আসলে পুরুষতান্ত্রিক সভ্যতার উন্মেষও জৈবিক। যা জৈবিক (যৌনতা নয়) তা প্রাকৃতিক, যা প্রাকৃতিক, তাই ওইশী, বা আল্লাহর পক্ষ থেকে। ঠিক কী কারণে পুরুষতান্ত্রিক সভ্যতার উন্মেষ হল দেখা যায়।

পুরুষের আছে টেস্টাস্টেরন।টেস্টাস্টেরন পেশী গঠন করে, হাড় গঠন করে, বাড়তি শরীরজোড়া রোম গজানোর মাধ্যমে বাইরের আঘাত থেকে শরীরকে রক্ষা করার একটা ক্ষীণ 'প্যাড' এর মত সেফটি দেয়। কন্ঠ উচু করে, যা আদেশদানের মত উপযুক্ত। টেস্টাস্টেরন পুরুষকে করে অনেকটাই মনের দিক দিয়েও শক্ত, একরোখা। এসবই ঘরের বাইরে খাবার ও জীবন চালানোর বিষয়বস্তু সংগ্রহের যোগ্যতায় একটা নতুন মাত্রা আনছে।

এবার আসেন এস্ট্রোজেন ও পোজেস্টেরন এ। নারীর শরীরকে তা করে আরো বেশি কোমল। মনকে করে আরো বেশি কম্প্রোমাইজিঙ। কিন্তু নিজের জৈবস্বার্থে সে নিদারুণ শক্ত ও একগুঁয়ে। এই গুণগুলো শেষ পর্যন্ত কোথায় কাজে লাগছে? শিশুর চাই কোমলতা। শিশুর চাই ন্যায় হোক আর অন্যায় হোক, মায়ের কাছে প্রশ্রয়। তা নাহলে সিস্টেম ফল করে।

এখানে কিন্তু বেশ বিস্ময় এবং খেদের সাথে হলেও দেখতে আমরা বাধ্য যে, প্রকৃতি, যাকে মুসলিমরা বলছে আল্লাহ, তিনি অনেক বেশি নৈর্ব্যক্তিকভাবে তাঁর গড়া সিস্টেমটাকে রক্ষার জন্য কোন একটা পদ্ধতি অবলম্বন করে রেখেছেন।

আমরা চাইলে এখন, এতদিন পরে নারীকে টেস্টাস্টেরন দিতে পারি, তাতে ঠিক তার নারীত্ব বজায় থাকছে না। তার শিশুপালন এর কোমলতা বজায় থাকছে না। পুরুষকেও ইস্ট্রোজেন বা পজেস্টেরন দিতে পারি, তার ফলও শুভ হচ্ছে না। অফিসে নাম হয়ে যাচ্ছে 'সিসি টম'। ফলে সিসি টম সময় মত প্রমোশন পাবে না। সিসি টম কাজ আদায় করতে পারবে না। সিসি টম দেরিতে বেতন বাড়বে। তার পরিবার আজো, এই দেরিতে বাড়া বেতনের কারণে ভুগবে।

তবে মানে কিন্তু এই না যে, নারী সর্বত্র কাজ করতে জানে না বা নারীর কাজ শুধু সন্তান উতপাদন। এ হল আংশিক প্রতিফলন। সার্বিক নয়। মাতৃতান্ত্রিক সমাজগুলো দেখিয়েছে নারী পারে এবং তা মন্দভাবে পারা নয়।

২। একসাথে চার বিয়ে করাও বৈধ: হ্যা তবে শর্ত সাপক্ষে আর বউদের অনুমতি নিয়ে আর তখনি যখন পুরুষের তুলনার নারী বেশী বা বা নারীদের রক্ষার\সহায়তার জন্যে কেহ নেই যেমন টা হয়েছিল ওহুদের যুদ্ধে যেখানে অনেক সাহাবী শহীদ হন আর তাদের স্ত্রীরা বিধবা হয়ে পড়েন, আর আজকাল যারা করছে তারা নিছক কোন কারন ছারাই করছে শুধু ইসলামটাকে ইউজ করছে নিজের জন্য। আর পৃথিবীতে এত মুসলমান দের মধ্য চারবিয়ে করা কয় জন পাবেন এর আনুপাতিক হার কত তা জানলে বুজবেন নিশ্চই। আপনার চার পাশেই দেখুন কতজন মুসলমান চার বিয়ে করেছে?

আর অনেকে আধুনিক সমাজের সমালোচনা করেও বলেন প্রতি রাতে বা উইকেন্ডে এক নারী কে ইউজ করা থেকে চার নারীকে সামাজিক স্বীকৃতি দিয়ে তাদের কে সামাজিক ও অথনৈতিক ভাবে টেক কেয়ার করার নিশ্চয়তা দিয়ে তাদের কে বিয়ে করে বউ করাটা উত্তম নয় কি? [আমি কিন্তু একজন নিয়েই সন্তুস্ট]

৩।নারী পুরুষের অর্ধেক সম্পত্তি পাবে: কোরআনের আগে কোনো ধর্মগ্রন্থে নারী-পুরুষকে সমান-সমান সম্পত্তি দেয়া তো দূরে থাক নারীকে আদৌ কোন সম্পত্তিই দেয়া হয়নি। এমনকি মুসলিমদের মধ্যে অনেকেই তাদের নারীদেরকে পুরুষের অর্ধেক সম্পত্তিও দেয় না। এই যখন বাস্তবতা তখন ‘অর্ধাংশ’ নিয়ে হৈ-চৈ করার তো কোনো মানে হয় না। দ্বিতীয়ত, সার্বিকভাবে সবকিছু বিচার-বিবেচনা করে কোরআনে নারীকে কিছুটা কম সম্পত্তি দেয়ার পেছনে যথেষ্ট যুক্তি আছে (৪:৭, ৪:১১-১২, ৪:৭৬)। যেমন:

- কোরআনে নারী-পুরুষ উভয়কেই রোজগারের অনুমতি দেওয়া হয়েছে (৪:৩২) অথচ পরিবারের সকল প্রকার ভরণপোষণের দায়িত্ব শুধু পুরুষের ঘাড়েই চাপিয়ে দেওয়া হয়েছে (৪:৩৪)। অর্থাৎ একজন নারী যা রোজগার করবে সেটা তার নিজস্ব কিন্তু পুরুষের রোজগার থেকে সংসারের সকল প্রকার খরচ বহন করতে হবে। নারীকে কি এখানে বিশেষ সুবিধা দেয়া হলো না? পরিবারের সকল প্রকার ভরণপোষণের ভার নারীদের ঘাড়ে চাপিয়ে দেয়া হলে গোঁড়া সমালোচকদের সারা জীবনের ঘুমই হয়ত হারাম হয়ে যেত!

এটা নিশ্চই খারাপ কিছু নয় কারন সে পিতা ও স্বামির কাছ থেকেও পাচ্ছে আর তার টেককেয়ার করার জন্য প্রথমে পিতা এবং পরে স্বামির দায়িত্ব সো তার সিকুইরিটি কম কোথাও হচ্ছেনা বলে মনেকরছি।

৪। আল্লার পরে কেউ যদি এবাদতের দাবীদার হয় সে হবে স্বামী বা স্বামীর পায়ের নীচে স্ত্রীর বেহেস্ত - এটা একটি জাল হাদিস আসলটি হলো মায়ের পায়ের নীচে সন্তানের বেহেস্ত এবং কোরআনে অনেক আয়াত আছে যে আল্লাহর পড়ে পিতামাতার স্থান স্বামির নয় দেখুন কোরআনে বলে "তোমার পালনকর্তা আদেশ করেছেন যে, তাঁকে ছাড়া অন্য কারও ইবাদত করো না এবং পিতা-মাতার সাথে সদ্ব-ব্যবহার কর। তাদের মধ্যে কেউ অথবা উভয়েই যদি তোমার জীবদ্দশায় বার্ধক্যে উপনীত হয়; তবে তাদেরকে ‘উহ’ শব্দটিও বলো না এবং তাদেরকে ধমক দিও না এবং বল তাদের সাথে শিষ্ঠাচারপূর্ণ কথা।" ১৭) সূরা বনী ইসরাঈল ( মক্কায় অবতীর্ণ ), আয়াত ২৩.

৫।নারীদের জন্য সব কালা আইন, নারীর রোম দেখলো পুরুষ- গুনাহ হোলো নারীর, পুরুষের লোলুপ চোখ নারীদেহের বিভিন্ন জায়গায় বিচরণ করলো-পাপ হোলো নারীর এর জন্য দেখুন সুরা নং ২৪ সূরা আন-নূর আয়াত নং ৩০ ই যথেস্ট:"মুমিনদেরকে বলুন, তারা যেন তাদের দৃষ্টি নত রাখে এবং তাদের যৌনাঙ্গর হেফাযত করে। এতে তাদের জন্য খুব পবিত্রতা আছে। নিশ্চয় তারা যা করে আল্লাহ তা অবহিত আছেন।"

যারা নারীর পোশাকের দোষ দেয় তাদের জন্য কোরআনে আগে ছেলেদের কে সাবধান হতে বলা হয়েছে তার পর নারীদের পর্দার আয়াত সো আগে ছেলেদের দৃষ্টি নত রাখতে শিখান পরে মেয়েরা খালি গায়ে ঘুরলেও কেহ ধর্ষন করবেনা যদি সে প্রকৃত মুমিন হয়। কারন সে জানে -নিশ্চয় তারা যা করে আল্লাহ তা অবহিত আছেন।

৬। নারী শব্দটাই শাস্ত্রের কাছে একটি পাপবাচক শব্দ
"নারী অমংলজনক" প্রশ্নে কোরআনে আমার জানা মতে কোথাও নারীদের অমংগলজনক বলা হয়নি বরং কোরান মহিলাদেরও অন্তর্ভুক্ত করে এভাবে যেমন বিশ্বাসী মানুষ এবং বিশ্বাসী মহিলা - - সম্মানিত পুরুষ এবং সম্মানিত মহিলা।

The Quran declared: O’ Men & Women! You have a common origin. [4:1]হে মানব সমাজ! তোমরা তোমাদের পালনকর্তাকে ভয় কর, যিনি তোমাদেরকে এক ব্যক্তি থেকে সৃষ্টি করেছেন এবং যিনি তার থেকে তার সঙ্গীনীকে সৃষ্টি করেছেন; আর বিস্তার করেছেন তাদের দু’জন থেকে অগণিত পুরুষ ও নারী (৪) সূরা আন নিসা আয়াত নং ১

“… All of you, men and women, belong to the same single stock.” [49:13]হে মানব, আমি তোমাদেরকে এক পুরুষ ও এক নারী থেকে সৃষ্টি করেছি এবং তোমাদেরকে বিভিন্ন জাতি ও গোত্রে বিভক্ত করেছি, যাতে তোমরা পরস্পরে পরিচিতি হও। নিশ্চয় আল্লাহর কাছে সে-ই সর্বাধিক সম্ভ্রান্ত যে সর্বাধিক পরহেযগার। নিশ্চয় আল্লাহ সর্বজ্ঞ, সবকিছুর খবর রাখেন। (৪৯) সূরা আল হুজরাত আয়াত ১৩

The believers, both men and women, are colleagues one of another. [9:71]আর ঈমানদার পুরুষ ও ঈমানদার নারী একে অপরের সহায়ক। তারা ভাল কথার শিক্ষা দেয় এবং মন্দ থেকে বিরত রাখে। নামায প্রতিষ্ঠা করে, যাকাত দেয় এবং আল্লাহ ও তাঁর রসূলের নির্দেশ অনুযায়ী জীবন যাপন করে। এদেরই উপর আল্লাহ তা’আলা দয়া করবেন। নিশ্চয়ই আল্লাহ পরাক্রমশীল, সুকৌশলী।(৯) সূরা আত তাওবাহ আয়াত নং ৭১

"Women have rights unto you as you have rights unto them." [2:187]তারা তোমাদের পরিচ্ছদ এবং তোমরা তাদের পরিচ্ছদ।(২) সূরা আল বাক্বারাহ আয়াত ১৮৭

"Every person will be rewarded according to one's actions, male or female." [4:32]আর তোমরা আকাঙ্ক্ষা করো না এমন সব বিষয়ে যাতে আল্লাহ তা’আলা তোমাদের একের উপর অপরের শ্রেষ্ঠত্ব দান করেছেন। পুরুষ যা অর্জন করে সেটা তার অংশ এবং নারী যা অর্জন করে সেটা তার অংশ। আর আল্লাহর কাছে তাঁর অনুগ্রহ প্রার্থনা কর।নিঃসন্দেহে আল্লাহ তা’আলা সর্ব বিষয়ে জ্ঞাত। (৪) সূরা আন নিসা আয়াত ৩২

তাদের সামনে ভালবাসার সাথে, নম্রভাবে মাথা নত করে দাও এবং বলঃ হে পালনকর্তা, তাদের উভয়ের প্রতি রহম কর, যেমন তারা আমাকে শৈশবকালে লালন-পালন করেছেন। ১৭) সূরা বনী ইসরাঈল ( মক্কায় অবতীর্ণ ), আয়াত ২৪

আপনি বলুনঃ এস, আমি তোমাদেরকে ঐসব বিষয় পাঠ করে শুনাই, যেগুলো তোমাদের প্রতিপালক তোমাদের জন্যে হারাম করেছেন। তাএই যে, আল্লাহর সাথে কোন কিছুকে অংশীদার করো না, পিতা-মাতার সাথে সদয় ব্যবহার করো স্বীয় সন্তানদেরকে দারিদ্রেøর কারণে হত্যা করো না, আমি তোমাদেরকে ও তাদেরকে আহার দেই, নির্লজ্জতার কাছেও যেয়ো না, প্রকাশ্য হোক কিংবা অপ্রকাশ্য, যাকে হত্যা করা আল্লাহ হারাম করেছেন, তাকে হত্যা করো না; কিন্তু ন্যায়ভাবে। তোমাদেরকে এ নির্দেশ দিয়েছেন, যেন তোমরা বুঝ। ৬) সূরা আল আন-আম ( মক্কায় অবতীর্ণ ), আয়াত ১৫১

And the exalted Prophet taught: আর মহানবী আমাদের শিক্ষা দেন যে

- Paradise lies at the feet of your mothers: "মায়ের পায়ের নীচে বেহেস্ত"---Kashf al-Khafa', no. 1078; Al-Da'ifah, no. 593.

- The best among you is the one who is best to his wife.
তোমাদের মধ্যে সেই উত্তম যে তার স্ত্রীর কাছে উত্তম

- O’ Men! You will be questioned about your treatment of women. " হে মানুষ তোমাদের কে জিগ্গেস করা হবে তোমরা নারীদের প্রতি কেমন আচরক করতে সে বিষয়ে

The Prophet said, "Whoever believes in Allah and the Last Day should not hurt (trouble) his neighbor. And I advise you to take care of the women, for they are created from a rib and the most crooked portion of the rib is its upper part; if you try to straighten it, it will break, and if you leave it, it will remain crooked, so I urge you to take care of the women." (Sahih Bukhari, Volume 7, Book 62, Number 114)

একজনের কমেন্ট তুলে ধরছি একটি ইসলামি সাইট হতে :"Men must also have in mind that a woman has her rights within the boundary of Islam. Men have to know the best of ways to treat a women well. If he does not do his rights properly, he can't force her to the bed only to fulfill his lust taking those hadith for granted. He must also fear the dangerous torments that Allah has kept for him if he does anything unjust for her. The Prophet (saw) said once "the best of you (men) are those who are best to their wives". The husband can earn good names in the community or the the family, but it will not be worth in the sight of Allah if he does not earn a good name from his wife aswell. Same goes to women. Islam has kept all rules balanced to both husband and wives. For more about. Husband wife bonds, go to youtube and search half our deen by baba Ali and watch the whole series

ইসলামে প্রথম মুসলিম নারী খাদিজা (রঃ) হজরত মোহাম্মদ (সঃ) এর প্রথম স্ত্রী যিনি সর্বদা মোহাম্মদ (সঃ) এর পাশে ছিলেন , প্রথম শহীদ নারী সুমাইয়া ইসলাম প্রচারের শুরুতে যারা রাসুলের (সাঃ) আহবানে সাড়া দিয়েছিলেন, সুমাইয়া তাদেরই একজন| সুমাইয়ার নারীদেহ ভংগুর, স্পর্শকাতর, কিন্তু আত্মা তার অজেয়| বক্ষে তার বিশ্বাস-ঈমানের দুর্জয় শক্তি ও সাহস|, সবচেয়ে বেশি হাদিস বর্ননা কারী নারী আয়েশা (রঃ)। যা দেখা যাচ্ছে ইসলামে নারীর সম্মান ও অবদান কখোনোই কম ছিলোনা আর নারীদের নিয়ে বিস্তারিত এই পোস্ট টি পরতে পারেন কোরআনের আলোকে নারী: সঠিক অবস্থান ও অভিযোগের জবাব http://www.somewhereinblog.net/blog/tondrahara/29233522

ভাবতে খুব কস্ট হয় যে কোরআনের এত সুন্দর আয়াতে যেখানে মানুষ কে নারীর প্রতি সম্মান জানানোর জন্য এভাবে বলাহয়েছে সেই আয়াতকে বিকৃত করে ইসলামেরই বিপক্ষে নারীর বিপক্ষে প্রচার করা হয়েছে আফসোস আমরা যদি কোরআনকে ও রাসুল (সঃ) এর জীবনকে ভালমত বুঝতে পারতাম। আল্লাহ আমাদের সবাইকে কোরআন বোঝার ও সেই অনুযায়ী চলার তৈফিক দিন। আমিন।


Women Of Islam ᴴᴰ Powerful Lecture 


এই পোস্ট লিখতে যে সকল পোস্ট হতে ও বই হতে সাহাজ্য নেয়া হয়েছে তার সুত্র:
১। আল কোরআন- এ সেই কিতাব যাতে কোনই সন্দেহ নেই। পথ প্রদর্শনকারী পরহেযগারদের জন্য।
২।কোরআনের আলোকে নারী: সঠিক অবস্থান ও অভিযোগের জবাব লিখেছেন এস. এম. রায়হান Click This Link
৩।ইসলাম : যে- কোন প্রশ্ন ও সংক্ষিপ্ত সময়ে পরিপূর্ণ উত্তর লিখেছেন গোলাম দস্তগীর লিসানি Click This Link
৪। QXPiv (THE QUR’AN AS IT EXPLAINS ITSELF (Fourt Edition) http://www.ourbeacon.com/wordpress/?page_id=21
৫। এই পোস্টের প্রশ্ন সমুহ জটিল বাক্যের এই পোস্ট হতে নেয়া Click This Link

 লিখেছেন-  ফয়সাল হাসান

0 comments
Labels: ,

শিক্ষা ইসলামের অন্যতম বৈশিষ্ট্য

ইসলাম একটি জীবন বিধান। শিক্ষা জাতীয় উন্নয়নের সোপান। শিক্ষা ইসলামের অন্যতম মূল ভিত্তি। শিক্ষা ছাড়া ভালো মানুষ হওয়া যায় না। শিক্ষা ছাড়া ভালো মুসলমান বা ইনসানে কামিল হওয়া যায় না। শিক্ষা ছাড়া পূর্ণাঙ্গ ঈমানদার বান্দা হওয়া যায় না। আর তাই দেখা যায় ইসলামের প্রথম বার্তা ছিল, ‘পড় তোমার প্রভুর নামে যিনি তোমাদের সৃষ্টি করছেন।’ (আলাক : ১)। রাব্বুল আলামিনের এ বার্তা থেকেই বোঝা যায়, মানবজীবনের প্রতিটি ক্ষেত্রেই রয়েছে শিক্ষার গুরুত্ব।

কোরআন কারিমে রয়েছে শিক্ষা সংক্রান্ত প্রচুর আয়াত। কোরআনেই বলা হয়েছে, ‘জিজ্ঞেস করুন, যারা জানে (আলিম ও জ্ঞানী) আর যারা জানে না (জাহিল ও মূর্খ) তারা উভয় কি সমান হতে পারে?’ (যুমার: ৯)। কোরআনে আরও বলা হয়েছে, ‘আল্লাহর বান্দাদের মধ্য থেকে একমাত্র আলিমরাই আল্লাহকে ভয়মিশ্রিত সম্মান করে।’ (ফাতির : ২৮)। আলিমদের মর্যাদা সম্পর্কে কোরআনে বলা হয়েছে, ‘যারা ঈমান এনেছে এবং যাদের ইলম (জ্ঞান) দান করা হয়েছে, আল্লাহ তাদের সুউচ্চ সম্মাননায় ভূষিত করবেন।’ (মুজাদালা : ১১)। ইলম বা জ্ঞান সম্পর্কে রয়েছে প্রচুর হাদিস। ইলম (জ্ঞান) ও আলিম (জ্ঞানী) সম্পর্কে রয়েছে রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামের প্রচুর বাণী। তিনিই বলেছেন, ‘প্রতিটি মুসলিমের (নর ও নারী) জন্য ইলম (শিক্ষা) অর্জন করা ফরজ।’ (ইবন মাজাহ)। এছাড়া যারা আল্লাহর সন্তুষ্টির উদ্দেশে শিক্ষা অর্জন করে, তাদের জন্য রয়েছে অনেক অনেক সম্মান। রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের ভাষায়, তাদের ‘নবীদের ওয়ারিস’ (উত্তরাধিকারী) বলা হয়েছে (ইবন মাজাহ)।

এখন প্রশ্ন হলো, যে কোনো শিক্ষাই কি এর অন্তর্ভুক্ত বা কোরআন ও হাদিসে বর্ণিত শিক্ষা বলতে কোন শিক্ষাকে বোঝানো হয়েছে? এ প্রশ্ন অবতারণার কারণ হলো, বর্তমানে বিশ্বজুড়েই শিক্ষা নিয়ে চলছে একরকম স্নায়ুতর্ক। শিক্ষাকে দু’ধারায় বিভক্ত করা হয়েছে—এক, ধর্মীয় শিক্ষা; দুই, জাগতিক বা আধুনিক শিক্ষা। আধুনিক শিক্ষার আওতাধীন সব শিক্ষা এর অন্তর্ভুক্ত। এ শিক্ষা কার্যক্রমকে ধর্মীয় প্রভাবমুক্ত রাখা হয়েছে। অন্য ভাষায় এ শিক্ষা কার্যক্রমকে ধর্মনিরপেক্ষ শিক্ষা কার্যক্রম বলা হয়—যাতে ধর্মীয় কোনো বিষয়ই থাকবে না। তাই এক্ষেত্রে স্বাভাবিকভাবেই ধর্মীয় শিক্ষিতজনরা ধর্মীয় শিক্ষাকেই প্রাধান্য দিচ্ছেন। তাদের হাতে রয়েছে কোরআন-হাদিসের প্রচুর প্রমাণ। আধুনিক শিক্ষিতজনরাও এর অন্তর্ভুক্ত হতে পারেন, যদি তা হয় শিক্ষার মূল ভিত্তির ওপর প্রতিষ্ঠিত। তাই বলা যায়, কোরআন ও হাদিসে শিক্ষা সম্পর্কিত যে সম্মান ও মর্যাদার কথা বলা হয়েছে, নিঃসন্দেহে তারা হবেন তাওহিদ, রিসালাত ও আখিরাতভিত্তিক শিক্ষায় জ্ঞানী। তারা সরাসরি কোরআন-হাদিসের বক্তব্য ও দাবি বাস্তবায়নে নিরলস প্রচেষ্টা চালান। তারা গবেষণা করেন কীভাবে মুসলমানরা তাদের জীবন কোরআন-হাদিস তথা শরিয়ত মোতাবেক চালাবে। তাই বলে যারা অন্যান্য বিষয়ে শিক্ষা অর্জন করেন, তারা বঞ্চিত হবেন—এমনটি বলা যাবে না।

তারাও এর অংশীদার হতে পারেন, যদি তাদের শিক্ষা হয় ইসলামের মূল ভিত্তির ওপর প্রতিষ্ঠিত; ঈমানি চেতনায় জাগ্রত। কারণ সব মানুষ আলিম, হাফিজ, মুফাসসির, মুহাদ্দিস, ফকিহ এবং মুফতি হবেন না। জীবনের সঙ্গে সংশ্লিষ্ট অন্যান্য বিষয়েও মুসলমানদের হতে হবে বিশেষজ্ঞ। যেমন তাদের মধ্যে থাকবেন বিজ্ঞানী, অর্থনীতিবিদ, রাজনীতিবিদ, সমাজবিজ্ঞানী, ডাক্তার, প্রকৌশলী, প্রশাসক ইত্যাদি। এরা হবেন সমাজের বিভিন্ন স্তরের একে অপরের পরিপূরক। যিনি যে বিষয়ে বিশেষজ্ঞ, অন্যরা সে বিষয়ে তার শরণাপন্ন হবেন। তার পরমার্শ নেবেন।

 বর্তমানে আমাদের সমাজে সমস্যা হলো, যারা ধর্মীয় শিক্ষায় শিক্ষিত, তারা আধুনিক শিক্ষায় পারদর্শী নন। অপরদিকে যারা আধুনিক শিক্ষায় শিক্ষিত, তারা ধর্মীয় জ্ঞান সম্পর্কে অবগত থাকেন। এখানেই বাধে যত গোল। আর এখান থেকেই সৃষ্টি হয় উভয়ের মাঝে দূরত্ব। একে অপরকে আমলে নেন না, গুরুত্ব দিতে চান না। আধুনিক শিক্ষিতজনরা নিজেরাই নিজেদের মতো করে ধর্মকে বিচার-বিশ্লেষণ করতে চান। এজন্য তাঁরা নিজেদের অধ্যয়ন বা গবেষণাকে যথেষ্ট মনে করেন। যদিও কোরআন-হাদিসের গভীরে যাওয়ার মতো জ্ঞান তাদের থাকে না। অপরদিকে ধর্মীয় শিক্ষাবিদরা আধুনিক শিক্ষা সম্পর্কে খুব কমই জানেন, বিধায় তাদের পক্ষে জীবনঘনিষ্ঠ অনেক বিষয়ের সমাধান দেয়া সম্ভব হয় না। তাই এখানে যদি একে অপরের পরিপূরক হিসাবে মেনে নেয়া হয়, তাহলে অনেক সমস্যার সমাধান সহজেই নিষ্পত্তি করা সম্ভব। এজন্য আধুনিক শিক্ষাকে ইসলামী মূল ভিত্তির ওপর দাঁড় করানো হলে তাদের ঈমান সুদৃঢ় হওয়ার পাশাপাশি তারাও ইসলামের আলোকে অনেক বিষয়ের সহজ সমাধান দিতে পারবেন। আর এটা কোনো কঠিন বিষয়ও নয়।

পবিত্র কোরআন ও হাদিসের আলোকে দেখা যায়, শিক্ষার মূল ভিত্তি হতে হবে তাওহিদ। অর্থাত্ শিক্ষার উত্স যিনি, তাঁর একত্ববাদই হবে শিক্ষার মূল ভিত্তি। কারণ আল্লাহ পাক পড়তে বলেছেন, খালিক অর্থাত্ স্রষ্টার নামে। তাওহিদি শিক্ষার অবিচ্ছেদ্য অংশ হিসেবে থাকবে রিসালাত ও আখিরাতের বিশ্বাস। আর তাই নির্দ্বিধায় বলা যায়, প্রতিটি শিক্ষা—ধর্মীয় শিক্ষাই হোক বা আধুনিক শিক্ষা—এর মূল ভিত্তি হতে হবে তাওহিদ, রিসালাত ও আখিরাত। তাওহিদি শিক্ষা মানুষকে সত্, নীতিবান, নেক মানুষ হিসেবে গড়ে তোলে—যাতে থাকে ভালো মানুষের প্রতিটি উপাদান। তাই প্রতিটি বিষয়কে ইসলামের মূল উত্স কোরআন ও হাদিসের সঙ্গে সম্পৃক্ত করা গেলে গোটা দেশ ও জাতি, এমনকি বিশ্ব উপকৃত হবে। কারণ কোরআনে সব বিষয়ের মূল দিক নির্দেশনা রয়েছে। গবেষণার মাধ্যমে সেগুলো উন্মোচিত করা প্রয়োজন। বিজ্ঞান নিয়ে আলোচনা করলে দেখা যায়, কোরআনের সঙ্গে বিজ্ঞানের কোনো বিরোধ নেই; বরং কোরআনে বিজ্ঞানের প্রচুর উপাদান রয়েছে, যা আজ স্বীকৃত। চিকিত্সা বিজ্ঞানেও দেখা যায় একই চিত্র। অর্থনীতি, সমাজনীতি, লোকপ্রশাসন, ভাষা-সাহিত্যসহ প্রচলিত সব বিষয়ে দিকনির্দেশনা রয়েছে কোরআন ও হাদিসে। আল্লাহ রাব্বুল ‘আলামিন কোরআন কারিমে ইরশাদ করেছেন, ‘আমি মুসলমানদের জন্য প্রত্যেক বিষয়ে সুস্পষ্ট ব্যাখ্যাস্বরূপ, হিদায়াত (দিকনির্দেশনা), রহমত ও সুসংবাদ হিসেবে আপনার প্রতি কিতাব নাজিল করেছি।’ (নাহল : ৮৯)। পশ্চিমা শিক্ষাবিদরা কোরআন থেকেই গবেষণার অনেক উপাদান গ্রহণ করেছেন এবং সেগুলো বাস্তবায়নের মাধ্যমে অনেক এগিয়ে গেছেন।

আমরা শিক্ষার উত্স সন্ধান করলেও এর বাস্তবতা উপলব্ধি করতে সক্ষম হব। পাশাপাশি এ-ও প্রমাণিত হবে, ইসলাম ও শিক্ষার পারস্পরিক সম্পর্ক অত্যন্ত গভীরে। বিশেষ করে ইসলামের মূল কথা হলো সব মুসলিমকে অবশ্যই কমবেশি শিক্ষিত হতে হবে। কারণ শিক্ষাবিহীন ইসলাম মানুষকে কুসংস্কারের দিকে ধাবিত করে। আর ইসলামবিহীন শিক্ষা মানুষকে পরিণত করে প্রাণহীন মানুষে। এর মাধ্যমে মানুষ হয়ে পড়ে স্বস্বার্থ নির্ভর। জাগতিক উত্কর্ষ সাধনে তারা বৈধ-অবৈধের তোয়াক্কা করে না। নীতি-নৈতিকতা ভুলে শুধু ভোগ-বিলাসিতায় গা ভাসিয়ে দেয়। তাই শিক্ষার উত্স সন্ধান করলে আমরা একটা মহাসত্য আবিষ্কারে সক্ষম হব। আর তা হলো শিক্ষার উত্স হলেন স্বয়ং স্রষ্টা মহাজ্ঞানী আল্লাহ। আর তাই আল্লাহ ইরশাদ করেন, ‘প্রত্যেক জ্ঞানীর ওপর আছেন এক মহাজ্ঞানী।’ (ইউসুফ : ২৬)। তিনি জ্ঞান বৃদ্ধির জন্য তাঁর কাছে দোয়া করতে বলছেন এভাবে, ‘হে আমার পরওয়ারদিগার! আমাকে জ্ঞানে সমৃদ্ধ কর।’ (ত্বাহা : ১১৬)।

বান্দার জ্ঞান হ্রাস-বৃদ্ধির ক্ষমতা একমাত্র রয়েছে তাঁরই নিয়ন্ত্রণে। শিক্ষার মহান শিক্ষক তিনিই। হজরত আদমকে তিনিই শিক্ষা দিয়েছেন। তিনি বলেন, ‘আর তিনি (আল্লাহ) আদমকে শিক্ষা দিয়েছেন যাবতীয় সব নাম’ (বাকারাহ : ৩১)। তিনি মানবজাতিকে কোরআন শিক্ষা দিয়েছেন এবং শিক্ষা দিয়েছে বর্ণনাশৈলী। তিনি ইরশাদ করেন, ‘দয়াময় (আল্লাহ), তিনিই শিখিয়েছেন কোরআন, তিনিই সৃষ্টি করেছেন মানুষ, তিনিই তাকে (মানুষ) বর্ণনাশৈলী শিখিয়েছেন। (আর-রাহমান : ১-৪)। আয়াতগুলো থেকে এটা সুস্পষ্ট, সব শিক্ষার একমাত্র তিনিই শিক্ষক। মহাবিশ্বের মহাজ্ঞানী একমাত্র খালিক আল্লাহ। মাখলুক মানুষের পক্ষে সব জ্ঞান আয়ত্ত করা কখনোই সম্ভব নয়। কোনো একটি বিষয়ে হয়তো পাণ্ডিত্ব অর্জন করা যেতে পারে। কিন্তু সে একই বিষয়ের যাবতীয় জ্ঞানে সমৃদ্ধ হওয়া সম্ভব নয়। এ জন্যই প্রস্তাবনা হলো—সব শিক্ষাকে ইসলামী ভিত্তির ওপর দাঁড় করাতে হবে। তা হলেই কেবল ভালো মানুষ গড়ার মাধ্যমে ভালো সমাজ গড়া সম্ভব হবে। আল্লাহ আমাদের সঠিক সিদ্ধান্ত নেয়ার তাওফিক দান করুন।

লেখক : আল-কোরআন অ্যান্ড ইসলামিক স্টাডিজ বিভাগ, ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়, কুষ্টিয়া
Source: http://www.amardeshonline.com/pages/details/2013/02/08/186824#.URQdFPLwBOI

0 comments
Labels: , ,

প্রতি মসজিদে সকাল-সন্ধ্যায় শুরু হোক কোরআন চর্চা


আমি যাদের কিতাব দান করেছি, তাদের যারা তা যথাযথভাবে পাঠ করে (যত গুরুত্বের সঙ্গে তা পাঠ করা উচিত), তারাই এতে বিশ্বাস স্থাপন করে। আর যারা তা প্রত্যাখ্যান করে, তারাই ক্ষতিগ্রস্ত।— (২.১২১)

যারা মুমিন, তাদের জন্য কি আল্লাহর স্মরণে এবং যে হক (কোরআন) অবতীর্ণ হয়েছে, তার কারণে হৃদয় ভক্তিবিগলিত হওয়ার সময় আসেনি? এবং যাদের আগে কিতাব দেয়া হয়েছিল, তারা যেন তাদের মতো না হয়—তাদের ওপর সুদীর্ঘকাল অতিক্রান্ত হলো, অতঃপর তাদের অন্তঃকরণ কঠিন হয়ে গেল। তাদের অধিকাংশই সত্যত্যাগী।— (৫৭.১৬)

তারা কি কোরআন নিয়ে গভীরভাবে চিন্তা-ভাবনা করে না, নাকি তাদের অন্তর তালাবদ্ধ? (৪৭.২৪) , যে ব্যক্তি দয়াময় আল্লাহর জিকির (কোরআন) থেকে অন্ধ সাজে, আমি তার জন্য এক শয়তান নিয়োজিত করি, অতঃপর সে-ই তার সঙ্গী হয়ে যায়। শয়তানরাই মানুষকে সত্ পথ হতে বিরত রাখে, অথচ মানুষ মনে করে যে, তারা সত্পথে রয়েছে। — (৪৩.৩৬-৩৭)

আল কোরআনের সঙ্গে সদাসর্বদা সম্পৃক্ত থাকা; সর্বশেষ ও চূড়ান্ত এই আসমানি বাণীর প্রতিটি আয়াত, তাতে উল্লেখিত শব্দ সব ব্যাপ্তিতে পড়া, তার মর্ম অনুধাবন করা, তার সত্য-সৌন্দর্য আর রঙে জীবনকে রাঙিয়ে তোলা; আল্লাহর কিতাব বা রজ্জুকে সুদৃঢ়ভাবে ধারণ করা ও বিচ্ছিন্ন না হওয়ার প্রয়োজনীয়তা প্রভৃতি নানা আঙ্গিকে এরকম বহু আয়াতে উদ্ধৃত হয়েছে। কোরআনে ব্যবহৃত ‘হক’, ‘জিকির’ বলতে অনেক ক্ষেত্রে পবিত্র কোরআনকেই বোঝানো হয়েছে।

পৃথিবীতে স্রষ্টার প্রতিনিধি হিসেবে দায়িত্ব পালন করণার্থে তাই সব শুভ কাজের অত্যন্ত মৌলিক ও সবচেয়ে গোড়ার কাজ আল কোরআনের ধারাবাহিক চর্চা শুরু হোক বিশ্বের প্রতিটি মসজিদে সকাল-সন্ধ্যায়, প্রতিটি দিন, প্রতিনিয়ত এবং বিরামহীন। যেমন ফজরের সালাত শেষে যদি সুরা বাক্বারার প্রথম রুকু (বা এর সমপরিমাণ) পড়া হয়, তবে মাগরিব বা এশার সালাত শেষে সকালে পঠিত প্রথম রুকু ফের একবার মশক ও আলোচনা করে দ্বিতীয় রুকু পড়া হবে। পরবর্তী ফজরের সালাত বাদ অনুরূপ দ্বিতীয় রুকুর মশক ও আলোচনা করে তৃতীয় রুকু পড়া হবে। এভাবে শুক্রবার সন্ধ্যা হতে বৃহস্পতিবার সন্ধ্যা পর্যন্ত পঠিত রুকুর আয়াতগুলো শুক্রবার সকালে অপেক্ষাকৃত দীর্ঘসময় নিয়ে পুনরালোচনা করা। একই প্রক্রিয়ায় কোরআনের ধারাবাহিক পাঠ চালু রাখা।

এর জন্য একটা প্রোগ্রামসূচি বানিয়ে নেয়া যেতে পারে। এতে কখন কোন রুকু পড়া হবে, তা পূর্বঘোষিত থাকবে, তাই আগ্রহী সবাই তার সাধ্যমত অধ্যয়ন করে কোরআনশিক্ষার এ অংশগ্রহণমূলক আসরে বসবে—যাতে ব্যয়িত সময়ের কার্যকারিতা সর্বাধিক এবং তা প্রাণবন্ত হয়। কেউই সেখানে অলস শ্রোতা হবে না, বরং সবাই হবে সক্রিয় অংশগ্রহণকারী।

আল্লাহর ঘরে আসা মুসল্লিদের কোরআনের সঙ্গে সম্পৃক্ত করতে মসজিদের ইমাম সাহেবরা বিদ্যমান ব্যবস্থাপনার মধ্যেই এ ব্যাপারে অগ্রণী ভূমিকা পালন করতে পারেন। আমজনতার কাছে কোরআনের আলো ছড়িয়ে দিতে প্রতিনিয়ত এ চর্চা তাদের মধ্যে ব্যাপক উত্সাহ ও উদ্দীপনার সৃষ্টি করবে। অন্যদিকে সম্মানিত মুসল্লিরা কোরআন শেখার প্রতি অপরিসীম আগ্রহ, উপস্থিতি এবং চেষ্টা-সাধনা প্রদর্শনের মাধ্যমে ততোধিক বড় ভূমিকা রাখতে পারেন। প্রয়োজনটা যতটা না ইমাম সাহেবের, তারচেয়ে অনেক বেশি তাদের; সুতরাং গরজ ও তাগিদটা তাদের পক্ষ থেকেই আসতে হবে।

উপস্থিত মুসল্লিদের বিভিন্নতাভেদে আলোচনার ক্ষেত্রেও বৈচিত্র্য থাকতে পারে, যাতে সবার চাহিদা পূরণের দিকে মোটামুটি ভারসাম্য রক্ষা করা যায়। একটি আয়াত তেলাওয়াত করে তার বিশুদ্ধ পাঠের প্রয়োজনে যেমন অনেকবার মশক করা দরকার; একইভাবে আয়াতের অর্থ, ব্যাখ্যা, আলোচ্য রুকুর বিষয়ের সঙ্গে আয়াতের পূর্বাপর সম্পর্ক জানাও প্রয়োজন। আয়াতের মর্ম আয়ত্ত করতে এতে উল্লেখিত শব্দ, বাক্যবিন্যাস, কোরআনের ভাষাভঙ্গি, ব্যাকরণ ও অলঙ্কার ইত্যাদি নিয়েও মাঝে মধ্যে আলোচনা হতে পারে। কোরআনের অনেক শব্দই আমাদের দৈনন্দিন জীবনে ব্যবহৃত নানা শব্দের সঙ্গে ওতপ্রোতভাবে জড়িয়ে আছে। শব্দমূল বা ক্রিয়ামূল (ইসম, মাছদার) উল্লেখ করে তার ব্যবহারগত সাযুজ্য ধরিয়ে দিতে পারলে যে কোনো কোরআনের পাঠক তাতে ব্যাপক উত্সাহ বোধ করবেন এবং সংশ্লিষ্ট আয়াতে ওই শব্দের অর্থ মনে রাখা তার জন্য সহজ হবে। পবিত্র কোরআনের সঙ্গে হৃদ্যতা বাড়বে, গভীর মমতা তৈরি হবে।

কোরআনের এই নিত্য অধ্যয়ন দিনে দিনে বোদ্ধা ও সমঝদার মুমিন-মুসলমান তৈরিতে বাস্তব ভূমিকা পালন করবে।
আল কোরআনের নিরবচ্ছিন্ন অধ্যবসায়ের মাধ্যমেই এই মহিমান্বিত গ্রন্থের, আসমান-জমিনের একমাত্র নির্ভুল দলিলের ‘হাক্কা তিলাওয়াত’ বা ‘যথাযথ পাঠে’র হক কিছুটা আদায় হতে পারে, আর কেবল সেক্ষেত্রেই আমাদের ইমান-আমল পরিশুদ্ধ হওয়ার অবকাশ পাবে। আল কোরআন সংলিপ্ততার এই ধারাবাহিকতায় আমরা তথা গোটা মানবজাতি ইহকাল-পরকালে কোরআনুল কারিমের পূর্ণ নেয়ামত লাভের যোগ্য বলে বিবেচিত হব ইনশাআল্লাহ।

লেখক : গবেষক, প্রাবন্ধিক -khan_books@yahoo.com

0 comments