Labels: , ,

উগ্রবাদিতার স্থান ইসলামে নেই

একটা ঘটনা বলি। ঘটনাটি বিখ্যাত ইসলামিক স্কলার ওস্তাদ নোমান আলী খানের নিজ কন্ঠ থেকে আমার শোনা। তাঁর গল্পে বিশ্বাস করাই যায়।

নবীজি(সঃ) তখন পূর্ণোদ্দমে ইসলাম প্রচার করছেন। দিকে দিকে সাহাবীদের দিয়ে শাহাদাতের বাণী পাঠিয়ে দিয়েছেন। মসজিদে নববীতে তাঁর অফিস।

শেষ নবীর আবির্ভাবের খবর পেয়ে একদল খৃষ্টান পুরোহিত তাঁর সাথে দেখা করতে এলো। দেখা করতে আসার মূল উদ্দেশ্য আসলে ঠিকমত যাচাই বাছাই করে দেখা যে ইনিই কি তাঁদের বাইবেলে বর্ণিত 'আসল নবী' কিনা।
নবীজি(সঃ) তাঁদের স্বানন্দে অভ্যর্থনা জানালেন। তিনি তাঁদের থাকার ব্যবস্থা মসজিদে নববীতেই করলেন। এখানে point to be noted, তাঁর সাথে দেখা করতে আসা বেশিরভাগই কিন্তু খৃষ্টান পুরোহিত। মানে তাঁরা সবাই যীশুর (ঈসা (আঃ)) পূজা করেন। তাঁদের মসজিদে নববীতে স্থান দেয়ার মানে তাঁরা মসজিদের ভিতরেই পূজা করবে।
এমন সর্বনাশা অনুমতি কে দিলেন?

স্বয়ং হযরত মুহাম্মদ, সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম।
আরেকটা ঘটনা বলি। এইটি আরেকজন ইসলামিক স্কলার, মুফতি মেঙ্কের কাছ থেকে শোনা। ইনি এতই বড় স্কলার যে স্বয়ং নোমান আলী খানও তাঁর ভক্ত। তাঁর রেফারেন্সের উপরে নিঃসন্দেহে ভরসা করা যায়।
একবার নবীজি(সঃ) ও সাহাবীদের আলোচনাকালে এক বেদূইনের পেশাবের বেগ পেল। আরব বেদূইনরা জংলি কিসিমের হয়ে থাকে। ভদ্রতার ধার ধারে না।

সে আলোচনা থেকে উঠে গিয়ে মসজিদের ভিতরেই এক কোণে গিয়ে পেশাব করতে শুরু করে দিল।
সাহাবীরা হায় হায় করে উঠলেন। মসজিদে নববীতে পেশাব মানেতো ইসলামের অপমান! তাঁরা তেড়ে গেলেন বেদূইনকে মারতে। হযরত মুহাম্মদ (সঃ) সাথে সাথে তাঁদের বাঁধা দিলেন। তিনি বেদূইনকে অভয় দিয়ে বললেন, সে যেন তাঁর কাজ শেষ করে।

প্রাকৃতিক ডাক এমন একটা বিষয় যা মাঝপথে উঠে আসা সম্ভব নয়। বেদূইন ঘাবড়ে গিয়েছিল। নবীজির(সঃ) অভয়বাণীতে আশ্বস্ত হয়ে সে ধীরে সুস্থে তাঁর প্রাকৃতিক কর্ম সম্পাদন করে।
তাঁর কাজ শেষ হলে নবীজি(সঃ) সাহাবীদের বলেন পানি এনে স্থানটি ভাল মত ধুয়ে ফেলতে।
তারপর তিনি বেদূইনকে বুঝালেন যে মসজিদ মুসলমানদের জন্য একটি পবিত্র স্থান। এখানে পেশাব পায়খানা করা যায় না।

Another point to be noted, নবীজির (সঃ) উপস্থিতিতেই একজন মসজিদে পেশাব করলো। নবীজি তাঁকে বিন্দুমাত্র শাস্তি দিলেন না। বরং ধৈর্যের সাথে তাঁর অজ্ঞতা দূর করলেন।
এখন আসি মূল প্রসঙ্গে।
বাংলাদেশে কয়েকটা ঘটনা সিজনালি(মৌসুমী) ঘটে।
শীতকালে শৈতপ্রবাহে গরীব মানুষ মরে।
বর্ষায় দেশ বন্যায় ডুবে যায়।
ক্রিকেট টুর্নামেন্টে বাংলাদেশ দলের ভরাডুবির ঘটে।
তেমনি পূজার মৌসুমে মন্দির ভাংচুর হয়।

এখন উপরের দুই ঘটনা পড়ার পর আমাদের মনে কী প্রশ্ন জগতে পারে?
যারা মন্দির ভাংচুর করে, তারা কী নিজেদের নবীজির (সঃ) চাইতেও বেশি ধার্মিক মনে করে?
উগ্রবাদিতার স্থান ইসলামে নেই। আল্লাহ নিজেই বলেছেন কেউ যদি অন্য ধর্মের অনুসারী হয়ে থাকে, তাকে তার মত ছেড়ে দিতে।

এরা দেখি আল্লাহর কথাকেও পাত্তা দেয় না!
নবীজি(সঃ) এদের ব্যপারেই বারবার সাবধান করে বলেছিলেন, "কাফিররা ইসলামের যত না ক্ষতি করবে, তারচেয়ে বেশি ক্ষতি এরা করবে।"

আরেকটি হাদিসে নবীজি(সঃ) এদের বৈশিষ্ট্য বর্ণনা করতে গিয়ে বলেছিলেন, "ওদের দেখলে তোমাদের মনে হবে এরা বিরাট ধার্মিক, আসলে তারাই পথভ্রষ্ট।"

যারা ধ্বংসের মাধ্যমে 'শান্তির' পথ খুঁজে, তাদের জন্যই আজকে বিশ্বে মুসলমানদেরকে 'সন্ত্রাসী' বলা হয়ে থাকে। অ্যামেরিকান এয়ারপোর্টে কারও নামের আগে পিছে 'আহমদ' বা 'মোহাম্মদ' থাকলে তাঁদেরকে একটু বেশি সুক্ষ্মভাবে সিকিউরিটি চেক করা হয়। সে যেই হোক না কেন। নবীজির (সঃ) নামের এই বদনামের জন্য শুধু এবং শুধুমাত্র এইসব মাথামোটা ছাগলগুলাই দায়ী।

বাংলাদেশে যে এখন দলে দলে মানুষ ইসলাম ত্যাগ করছে, তাদের জন্য নাস্তিকদের গালাগালি না করে এইসব উগ্রবাদীদের ধরে পেটানো উচিৎ।

লতিফ সিদ্দিকীর আজাইরা প্রলাপে আমাদের যেমন হৃদপিন্ড কাঁপে, ঠিক তেমনি মন্দির ভাংচুরে হিন্দুদেরও কলিজা ছিড়ে যায়।

একটি পিপড়ার মনেও কষ্ট দিলে যেখানে আল্লাহ শাস্তির ওয়াদা করেছেন - সেখানে এরা মানুষের মন ছিন্নভিন্ন করে!
আফসোস! যদি এদের একটুও জ্ঞান হতো!

Post written by:মঞ্জুর চৌধুরী

No comments:

Post a Comment