Labels: ,

কোরআনের ভাষাগত সৌন্দর্য: পর্ব ৩ ইসলামে পিতা মাতার অধিকার


আমরা দেখবো কিছু গুরুত্বপুর্ন কোরআনের আয়াত যা আলোচনা করেছে দুটি খুবই গুরুত্বপুর্ন বিষয়ে যেমন-

وَقَضَى رَبُّكَ أَلاَّ تَعْبُدُواْ إِلاَّ إِيَّاهُ وَبِالْوَالِدَيْنِ إِحْسَانًا إِمَّا يَبْلُغَنَّ عِندَكَ الْكِبَرَ أَحَدُهُمَا أَوْ كِلاَهُمَا فَلاَ تَقُل لَّهُمَآ أُفٍّ وَلاَ تَنْهَرْهُمَا وَقُل لَّهُمَا قَوْلاً كَرِيمًا
তোমার পালনকর্তা আদেশ করেছেন যে, তাঁকে ছাড়া অন্য কারও ইবাদত করো না এবং পিতা-মাতার সাথে সদ্ব-ব্যবহার কর। তাদের মধ্যে কেউ অথবা উভয়েই যদি তোমার জীবদ্দশায় বার্ধক্যে উপনীত হয়; তবে তাদেরকে ‘উহ’ শব্দটিও বলো না এবং তাদেরকে ধমক দিও না এবং বল তাদের সাথে শিষ্ঠাচারপূর্ণ কথা। ১৭) সূরা বনী ইসরাঈল ( মক্কায় অবতীর্ণ ), আয়াত ২৩

একটি হল: আপনার পালন কর্তা/ প্রভু একমাত্র আল্লাহর ইবাদত করা (এই আয়াতের প্রথম অংশ ডিমান্ড করে আল্লাহর অধিকার আমাদের উপরে) আর দ্বিতীয়টি বলা হয়েছে পিতামাতার সাথে সবচেয়ে ভাল ব্যবহার করা আর এটা বলা হয়েছে আল্লাহর অধিকার সম্পর্কে বলার পরেই এতেই বুঝা যায় আল্লাহ কত গুরুত্ব দিয়ে কথাগুলো বলেছেন।

আপনি যদি প্রথম অংশ দেখেন তবে মনে হবে শুধু আল্লাহ সম্পকে বলা হয়েছে কিন্তু পুরোটা আয়াত দেখলে বুঝবেন যে বেশিরভাগই পিতা মাতা সম্পকে বলা হয়েছে।

আল্লাহ ছারা অন্য কারও এবাদত করো না এবং পিতা-মাতার সাথে সদ্ব-ব্যবহার কর। পিতা-মাতার মধ্যে কেউ অথবা উভয়েই যদি তোমার জীবদ্দশায় বার্ধক্যে উপনীত হয়; তবে তাদেরকে ‘উহ’ শব্দটিও বলো না এবং তাদেরকে ধমক দিও না এবং বল তাদের সাথে শিষ্ঠাচারপূর্ণ/ সুন্দর/ আদবের সাথে কথা।

আল্লাহ একের পর এক পিতা মাতার প্রতি দায়িত্ব তাদের প্রতি উহ শব্দটিও না বলা, ধমক না দেয়া এবং সবচেয়ে ভাল মধুর সুন্দর কথা বার্তা বলতে বলেছেন, আর শুধুমাত্র একটি বার আল্লাহ সম্পকে বাকি পিতামাতা
মানে আল্লাহ --> পিতা-মাতা-->পিতা-মাতা-->তাদেরকে--> তাদের সাথে--> ।


তবুও একটি বিষয় দেখতে হবে যে আল্লাহ তার সম্পর্কে প্রথমে বলেছেন মানে হচ্ছে আপনি আপনার পিতা মাতার প্রতি ভাল ব্যবহার উত্তম আচারন করতে পারবেন না যদি না আপনি আল্লাহর বান্দা/গোলাম না হন (মানে আল্লাহর সন্তুস্টির জন্য যদি না করেন)

তাহলে বুঝা যাচ্ছে যে আপনি যদি প্রথম অংশ ভালভাবে না মানেন তবে আপনি পরের অংশেও ঠিক মত পালন করতে পারবেন না, মানে আপনি যদি পিতামাতার সাথে ভাল ব্যবহার না করেন, তবে আপনি আল্লাহর বান্দা নন।

সবচেয়ে ভাল ব্যবহার বেস্ট বিহেভ বলতে কি বুঝায় :আল্লাহ উক্ত আয়াতে আরো বলেন ওবিল ওলিদাইনে ইহসানান وَبِالْوَالِدَيْنِ إِحْسَانً তিনি বলেন নি ওয়া ইহসানান বিল ওয়ালিদাইনি তবে অর্থ ভিন্ন হত,
ওবিল ওলিদাইনে ইহসানান মানে স্পেশালি যখন পিতামাতার ব্যপার এবং শুধুমাত্র পিতা মাতার ব্যপারে আপনাকে অবশ্যই বেস্ট বিহেভ সেরা আচরন করতে হবে


আল্লাহ জানেন আপনার পক্ষে বসের কাছে ভাল/সেরা আচরন করা ইজি হবে কারন নাইলে চাকরি থাকবেনা, আপনার পক্ষে স্যার/প্রফেসরে কাছে ভাল/সেরা আচরন করা ইজি হবে কারন নাইলে আপনি পাস করতে পারবেন না বা নম্বর কম পাবার সম্ভাবনা থাকে, আপনার পক্ষে বন্ধু / প্রমিকা/প্রেমিকের কাছে ভাল/সেরা আচরন করা ইজি হতে পারে কারন আপনাকে সে ছেরে চলে যেতে পারে কিন্তু যখন পিতা মাতার ব্যপার আসে আপনি গুরুত্ব দেননা আপনি মনে করেন তারা আর কি ইত্যাদি

ধরুন আপনি যখন ফোনে কথা বলছেন বা কম্পিউটারে গেম খেলছেন আপনার আম্মা আপনাকে খাবারের জন্য ডাকলে আপনি কি বলেন আসছি , কি? দারাও, ধুর পরে খাব ইত্যাদি এজন্যই আল্লাহ বলেন ওবিল ওলিদাইনে ইহসানান وَبِالْوَالِدَيْنِ إِحْسَانً মানে যখনই তারা আপনাকে ডাকবে তাদের জন্য দুনিয়াবি সবকিছু বাদ দিয়ে তাদের ডাকে সারা দিতে।

দ্বিতীয়ত বলা হয়েছে যখন তারা বার্ধক্যে উপনীত হবেন এজন্যই যে যখন তারা বার্ধক্যে উপনীত হবেন তখন আপনি পুর্ন যুবক বা নিজে স্বাবলম্বি থাকবেন এবং তখন আপনি মনে করেন আপনি আপনার নিজের ডিসিশন নিতে পারবেন নিজের পরসোনাল জীবন আছে ইত্যাদি আর তারা আপনাকে এখনো ছোট মনে করে তারা বুঝে না ইত্যাদি তাদের প্রতি আপনি মনে মনে নালিশ করেন/ বিলাপ করেন/অভিযোগ করেন অথবা বন্ধুদের সাথে বলেন আপনার পিতা মাতা আপনাকে কস্ট দিচ্ছে ইত্যাদি

আল্লাহ তাই বলেন স্পেশালি যখন তারা বার্ধক্যে উপনীত হবেন , যখন তাদের ডিমান্ড বেশি থাকে, তাদের আচরন শিশুদের মত হয়ে যায়, যখন তারা একা হয়ে যায় তখন আরো বেশি কেয়ার নিতে তাদের প্রতি উফ করতে না, আর এটা অবশ্যই একটা কঠিন কাজ।

তাই যদি আপনি প্রথমত আল্লাহর এবং দ্বিতীয়ত আপনার পিতামাতার জন্য তাদের দিকে সুনজরে না তাকান তাদের প্রতি বেস্ট ব্যবহার না করেন তবে এটা আপনার কাছে অনেক কঠিনই মনে হবে, এজন্যই আল্লাহ বন্দাদের মনে করিয়ে দেন আল্লাহর কছে ফিরে যেতে হবে আল্লাহর জন্য হলেও আপনি যেন পিতা মাতার প্রতি ভাল ব্যবহার করেন।

পরের আয়াতে আল্লাহ বলেন وَاخْفِضْ لَهُمَا جَنَاحَ الذُّلِّ مِنَ الرَّحْمَةِ وَقُل رَّبِّ ارْحَمْهُمَا كَمَا رَبَّيَانِي صَغِيرًا
তাদের সামনে ভালবাসার সাথে, নম্রভাবে মাথা নত করে দাও এবং বলঃ হে পালনকর্তা, তাদের উভয়ের প্রতি রহম কর, যেমন তারা আমাকে শৈশবকালে লালন-পালন করেছেন। ১৭) সূরা বনী ইসরাঈল ( মক্কায় অবতীর্ণ ), আয়াত ২৪

আল্লাহ এখানে নম্রভাবে মাথা নত করে দাও বলেছেন এজন্যই কারন আমাদের পিতা মাতা আমাদের কিছু বল্লে আমরা অনেকে সেটা শুনি না , তাদের থেকে মুখ ঘুরিয়ে নেই (আমাদের লজ্জা হওয়া উচিৎ) আমরা ভুলে যাই আমরা আমাদের মা কে কত কস্ট দিয়েছি তার গর্ভে থাকতে তার অবস্থাটা চিন্তা করুন আপনার জন্য তাকে প্রত্যেক আধা ঘন্টায় বমি করার মত অবস্থা আর দশ মাস আপনাকে লালন পালন করে যখন আপনি দুনিয়াতে আসেন তখনো তার কলিজায় লাথি মেরে বের হন যখন তার জান যায় যায় অবস্থা শুধু মাত্র আপনার জন্য , তাই আপনি যদি ঈমানদার নাও হন অন্তত আপনার মার জন্য তো অবশ্যই সবসময় আপনা মাথা নত করা উচিৎ। তাই আল্লাহ আমাদের মনে করিয়ে দেন যেমন তারা আমাকে শৈশবকালে লালন-পালন করেছেন সুবহানাল্লাহ।

শেষে আল্লাহ বলেন তাদের উভয়ের প্রতি রহম কর: মিনার রহমা মুলত বুঝায় :

১। তাদের প্রতি নম্র হতে যদিও আপনার এবিলিটি/সুযোগ আছে নম্র না হওয়ার কিন্তু আপনার করা আবশ্যিক কারন তারা সেই বয়সে যখন আপনার দয়া/ অনুগ্রহ /রহম তাদের দরকার/প্রয়োজন।

২। তারা তাদের দয়া/ অনুগ্রহ /রহম আপনাকে দেখিয়েছেন যখন আপনি ছোট ছিলেন আর যখন বড় হয়েছেন তখন তারা আপনাকে লিস্ট করে বিল হিসেবে দেয়নি যে তারা আপনার জন্য কি কি করেছে। তাই তারা আপনাকে যেমন দয়া/ অনুগ্রহ /রহম দেখিয়েছে তাদেরও অধিকার রয়েছে ঠিক সেই রকম দয়া/ অনুগ্রহ /রহম পাওয়ার।

৩। পরিশেষে আপনি যদি আল্লাহন দয়া/ অনুগ্রহ /রহম পেতে চান তবে আপনার পিতা মাতাকে দয়া/ অনুগ্রহ /রহম করুন।

আপনি হয়ত আমাকে বলবেন আপনি বুঝেন না , আপনি জানেন না আমার অবস্থা, আমার পিতা মাতা ঠিক নন, আমার ব্যপার ভিন্ন/ এক্সসেপশনাল , তবে আমি বলব শুনুন সবাই মনে করে তারটা ভিন্ন বিষয় তারটা এক নয় তার অবস্থা সবার মত নয়, সবাই ভাবে এটা আমার জন্য না এটা অন্যর জন্য, কেউ ভাবে না এটা তাদের প্রতি বর্তায় আল্লাহ সবার জন্যই বলেছেন আপনি আলাদা কেউ নন সকল মানুষের দায়িত্ব তার পিতা মাতার জন্য সমান, সবাই ভাবে এটা অন্যের জন্য যার অবস্থা নরমাল আমারটা ভিন্ন তবে শুনে রাখুন আল্লাহ জানেন তিনি কি বানিয়েছেন আমাদেরকে তিনি ভালভাবেই জানেন, তিনি আমাদের সৃস্টিকর্তা, আমাদেরকে তিনি সবচেয়ে ভাল জানেন (আমাদের সকল গোপন বা বাহ্যিক বিষয় সম্পর্কে তিনি জানেন ) তাই তিনি বার বার সবধান করে দিয়েছেন।

আপনি যখন নীচের আয়াত গুলো খেয়াল করবেন দেখবেন যতবার একটি আয়াতে আল্লাহ পিতা মাতার কথা বলেছেন ঠিক সেই আয়াতে তিনি তার কথাও স্মরন করিয়েছেন যাতে আমরা আমাদের পিতা মাতার অধিকারের গুরুত্ব বুঝতে পারি।

আরো দেখুন কোরআনের আলোকে:

وَاعْبُدُواْ اللّهَ وَلاَ تُشْرِكُواْ بِهِ شَيْئًا وَبِالْوَالِدَيْنِ إِحْسَانًا وَبِذِي الْقُرْبَى وَالْيَتَامَى وَالْمَسَاكِينِ وَالْجَارِ ذِي الْقُرْبَى وَالْجَارِ الْجُنُبِ وَالصَّاحِبِ بِالجَنبِ وَابْنِ السَّبِيلِ وَمَا مَلَكَتْ أَيْمَانُكُمْ إِنَّ اللّهَ لاَ يُحِبُّ مَن كَانَ مُخْتَالاً فَخُورًا
আর উপাসনা কর আল্লাহর, শরীক করো না তাঁর সাথে অপর কাউকে। পিতা-মাতার সাথে সৎ ও সদয় ব্যবহার কর এবং নিকটাত্নীয়, এতীম-মিসকীন, প্রতিবেশী, অসহায় মুসাফির এবং নিজের দাস-দাসীর প্রতিও। নিশ্চয়ই আল্লাহ পছন্দ করেন না দাম্ভিক-গর্বিতজনকে। ৪) সূরা আন নিসা ( মদীনায় অবতীর্ণ ), আয়াত ৩৬

وَوَصَّيْنَا الْإِنسَانَ بِوَالِدَيْهِ إِحْسَانًا حَمَلَتْهُ أُمُّهُ كُرْهًا وَوَضَعَتْهُ كُرْهًا وَحَمْلُهُ وَفِصَالُهُ ثَلَاثُونَ شَهْرًا حَتَّى إِذَا بَلَغَ أَشُدَّهُ وَبَلَغَ أَرْبَعِينَ سَنَةً قَالَ رَبِّ أَوْزِعْنِي أَنْ أَشْكُرَ نِعْمَتَكَ الَّتِي أَنْعَمْتَ عَلَيَّ وَعَلَى وَالِدَيَّ وَأَنْ أَعْمَلَ صَالِحًا تَرْضَاهُ وَأَصْلِحْ لِي فِي ذُرِّيَّتِي إِنِّي تُبْتُ إِلَيْكَ وَإِنِّي مِنَ الْمُسْلِمِينَ
আমি মানুষকে তার পিতা-মাতার সাথে সদ্ব্যবহারের আদেশ দিয়েছি। তার জননী তাকে কষ্টসহকারে গর্ভে ধারণ করেছে এবং কষ্টসহকারে প্রসব করেছে। তাকে গর্ভে ধারণ করতে ও তার স্তন্য ছাড়তে লেগেছে ত্রিশ মাস। অবশেষে সে যখন শক্তি-সামর্থেøর বয়সে ও চল্লিশ বছরে পৌছেছে, তখন বলতে লাগল, হে আমার পালনকর্তা, আমাকে এরূপ ভাগ্য দান কর, যাতে আমি তোমার নেয়ামতের শোকর করি, যা তুমি দান করেছ আমাকে ও আমার পিতা-মাতাকে এবং যাতে আমি তোমার পছন্দনীয় সৎকাজ করি। আমার সন্তানদেরকে সৎকর্মপরায়ণ কর, আমি তোমার প্রতি তওবা করলাম এবং আমি আজ্ঞাবহদের অন্যতম। ৪৬) সূরা আল আহক্বাফ ( মক্কায় অবতীর্ণ ), আয়াত নং ১৫

قُلْ تَعَالَوْاْ أَتْلُ مَا حَرَّمَ رَبُّكُمْ عَلَيْكُمْ أَلاَّ تُشْرِكُواْ بِهِ شَيْئًا وَبِالْوَالِدَيْنِ إِحْسَانًا وَلاَ تَقْتُلُواْ أَوْلاَدَكُم مِّنْ إمْلاَقٍ نَّحْنُ نَرْزُقُكُمْ وَإِيَّاهُمْ وَلاَ تَقْرَبُواْ الْفَوَاحِشَ مَا ظَهَرَ مِنْهَا وَمَا بَطَنَ وَلاَ تَقْتُلُواْ النَّفْسَ الَّتِي حَرَّمَ اللّهُ إِلاَّ بِالْحَقِّ ذَلِكُمْ وَصَّاكُمْ بِهِ لَعَلَّكُمْ تَعْقِلُونَ
আপনি বলুনঃ এস, আমি তোমাদেরকে ঐসব বিষয় পাঠ করে শুনাই, যেগুলো তোমাদের প্রতিপালক তোমাদের জন্যে হারাম করেছেন। তাএই যে, আল্লাহর সাথে কোন কিছুকে অংশীদার করো না, পিতা-মাতার সাথে সদয় ব্যবহার করো স্বীয় সন্তানদেরকে দারিদ্রেøর কারণে হত্যা করো না, আমি তোমাদেরকে ও তাদেরকে আহার দেই, নির্লজ্জতার কাছেও যেয়ো না, প্রকাশ্য হোক কিংবা অপ্রকাশ্য, যাকে হত্যা করা আল্লাহ হারাম করেছেন, তাকে হত্যা করো না; কিন্তু ন্যায়ভাবে। তোমাদেরকে এ নির্দেশ দিয়েছেন, যেন তোমরা বুঝ। ৬) সূরা আল আন-আম ( মক্কায় অবতীর্ণ ), আয়াত ১৫১

وَوَصَّيْنَا الْإِنسَانَ بِوَالِدَيْهِ حُسْنًا وَإِن جَاهَدَاكَ لِتُشْرِكَ بِي مَا لَيْسَ لَكَ بِهِ عِلْمٌ فَلَا تُطِعْهُمَا إِلَيَّ مَرْجِعُكُمْ فَأُنَبِّئُكُم بِمَا كُنتُمْ تَعْمَلُونَ
আমি মানুষকে পিতা-মাতার সাথে সদ্ব্যবহার করার জোর নির্দেশ দিয়েছি। যদি তারা তোমাকে আমার সাথে এমন কিছু শরীক করার জোর প্রচেষ্টা চালায়, যার সম্পর্কে তোমার কোন জ্ঞান নেই, তবে তাদের আনুগত্য করো না। আমারই দিকে তোমাদের প্রত্যাবর্তন। অতঃপর আমি তোমাদেরকে বলে দেব যা কিছু তোমরা করতে। (২৯) সূরা আল আনকাবুত ( মক্কায় অবতীর্ণ ), আয়াত: ৮

وَوَصَّيْنَا الْإِنسَانَ بِوَالِدَيْهِ حَمَلَتْهُ أُمُّهُ وَهْنًا عَلَى وَهْنٍ وَفِصَالُهُ فِي عَامَيْنِ أَنِ اشْكُرْ لِي وَلِوَالِدَيْكَ إِلَيَّ الْمَصِيرُ
আর আমি মানুষকে তার পিতা-মাতার সাথে সদ্ব্যবহারের জোর নির্দেশ দিয়েছি। তার মাতা তাকে কষ্টের পর কষ্ট করে গর্ভে ধারণ করেছে। তার দুধ ছাড়ানো দু বছরে হয়। নির্দেশ দিয়েছি যে, আমার প্রতি ও তোমার পিতা-মতার প্রতি কৃতজ্ঞ হও। অবশেষে আমারই নিকট ফিরে আসতে হবে। ৩১) সূরা লোকমান ( মক্কায় অবতীর্ণ ), আয়াত: ১৪

وَإِن جَاهَدَاكَ عَلى أَن تُشْرِكَ بِي مَا لَيْسَ لَكَ بِهِ عِلْمٌ فَلَا تُطِعْهُمَا وَصَاحِبْهُمَا فِي الدُّنْيَا مَعْرُوفًا وَاتَّبِعْ سَبِيلَ مَنْ أَنَابَ إِلَيَّ ثُمَّ إِلَيَّ مَرْجِعُكُمْ فَأُنَبِّئُكُم بِمَا كُنتُمْ تَعْمَلُونَ
পিতা-মাতা যদি তোমাকে আমার সাথে এমন বিষয়কে শরীক স্থির করতে পীড়াপীড়ি করে, যার জ্ঞান তোমার নেই ; তবে তুমি তাদের কথা মানবে না এবং দুনিয়াতে তাদের সাথে সদ্ভাবে সহঅবস্থান করবে। যে আমার অভিমুখী হয়, তার পথ অনুসরণ করবে। অতঃপর তোমাদের প্রত্যাবর্তন আমারই দিকে এবং তোমরা যা করতে, আমি সে বিষয়ে তোমাদেরকে জ্ঞাত করবো।
৩১) সূরা লোকমান ( মক্কায় অবতীর্ণ ), আয়াত: ১৫

হাদীস (সিহাহ সিত্তাহ) আলোকে:
হাদীস গুলো নেয়া হয়েছে এই ব্লগ থেকে:
Click This Link

১. এক ব্যক্তি নবীজীর স. কাছে এসে বলল, সদ্ব্যবহার পাওয়ার অধিকার বেশি কোন মানুষের? তিনি বললেন, তোমার মা। লোকটা বলল, এরপর কে? তিনি বললেন, এরপরও তোমার মা। লোকটা বলল, এরপর কে? তিনি বললেন, এরপরও তোমার মা। লোকটা বলল, এরপর কে? তিনি বললেন, এরপর তোমার বাবা। -বুখারী, মুসলিম, তিরমিযী

২.এক ব্যক্তি নবীজীর স. কাছে এসে জিহাদের জন্য অনুমতি চাইল। নবীজী স. বললেন, তোমার পিতা-মাতা জীবীত নাকি? লোকটা বলল,হ্যাঁ। তিনি বললেন, তাহলে তাদের জন্যই পরিশ্রম করো (এতেই তুমি জিহাদের সওয়াব পাবে)। -বুখারী, মুসলিম

৩.এক ব্যক্তি নবীজীর স. কাছে এসে বলল, আমি আল্লাহর কাছে সওয়াবের আশায় আপনার হাতে হিজরত ও জিহাদের ব্যাপারে শপথ করছি। নবীজী স. বললেন, তোমার পিতা-মাতার কোনো একজন জীবীত নাকি? লোকটা বলল,হ্যাঁ, বরং উভয়ই। তিনি বললেন, তুমি তো আল্লাহর কাছে সওয়াব আশা করো। লোকটা বলল, হ্যাঁ। তিনি বললেন, তাহলে তোমার পিতা-মাতার কাছে ফিরে যাও এবং তাদের সাথে সদ্ব্যবহার করো। - মুসলিম

৪.একদা নবীজী স. বললেন, ধ্বংস হোক। ধ্বংস হোক। পুনরায় ধ্বংস হোক। বলা হলো, ইয়া রাসূলাল্লাহ! কার কথা বলছেন? তিনি বললেন, যে তার পিতা-মাতা উভয়কে বা কোনো একজনকে বৃদ্ধাবস্থায় পেয়েছে, অথচ এরপরও সে (তাদের খিদমত করে) জান্নাতে যেতে পারে নি। -মুসলিম

৫.নবীজী স. বলেছেন, সর্বোত্তম কাজ হলো, পিতার সৃহৃদদের (বন্ধু-বান্ধব, আত্মীয়স্বজন) সাথে সম্পর্ক রাখা। বুখারী, মুসলিম

৬.নবীজী স. বলেছেন, পিতা-মাতার সন্তুষ্টিতে আল্লাহ সন্তুষ্ট হন, আর পিতা-মাতার অসন্তুষ্টিতে আল্লাহ অসন্তুষ্ট হন। -তিরমিযী

৭.আবু দারদা রা. বলেন, আমি নবীজীকে স. বলতে শুনেছি, পিতা-মাতা জান্নাতের মাঝের দরজা। যদি চাও, দরজাটি নষ্ট করে ফেলতে পারো, নতুবা তা সংরক্ষণও করতে পারো। - তিরমিযী

৮.রাসূলুল্লাহ স. বলেন, আমি কি তোমাদেরকে সবচেয়ে বড় কবীরা গোনাহ কোনগুলো তা বলব না? সাহাবাগণ বললেন, অবশ্যই ইয়া রাসূলাল্লাহ। তিনি বললেন, আল্লাহর সাথে কাউকে শরীক করা, পিতা-মাতার অবাধ্য হওয়া। বর্ণনাকারী বলেন, এতটুকু বলে নবীজী স. বসে পড়লেন, এতক্ষণ তিনি হেলান দিয়ে ছিলেন। অত:পর নবীজী স. বললেন, মিথা সাক্ষ্য দেয়া। এ কথাটি তিনি এতবার বলতে থাকলেন যে আমরা মনে মনে বললাম, আর যদি না বলতেন! –তিরমিযী

৯.রাসূলুল্লাহ স. বলেন, অন্যতম কবীরা গোনাহ হলো, ব্যক্তি তার পিতা-মাতাকে গালমন্দ করা। সাহাবাগণ বললেন, পিতা-মাতাকেও কি কেউ গালমন্দ করে? নবীজী স. বললেন, হ্যাঁ। কেউ কারো পিতাকে গালি দিলে সেও তার পিতাকে গালি দেয়। আবার কেউ কারো মাকে গালি দিলে, সেও তার মাকে গালি দিলে। (এভাবে অন্যের পিতা-মাতাকে গালমন্দ করলে প্রকারান্তরে নিজের পিতা-মাতাকেই গালমন্দ করা হয়।) –তিরমিযী

১০.রাসূলুল্লাহ স. বলেন, তিন রকম দোয়া নি:সন্দেহে কবুল হয়। মজলুমের দোয়া, মুসাফিরের দোয়া আর সন্তানের জন্য পিতা-মাতার দোয়া। -তিরমিযী

১১.রাসূলুল্লাহ স. বলেন, সন্তান কোনো ভাবেই পিতা-মাতাকে প্রতিদান দিতে পারে না। তবে যদি পিতা-মাতা গোলাম হয়, তখন তাকে ক্রয় করে আজাদ করে দিলে হয়ত প্রতিদান হয়। -তিরমিযী
১২. নবী করিম (সাঃ) বলেছেন- তোমাদের পিতা মাতার নিকট হতে ফিরিয়া যাইওয়া। যে পিতা মাতার নিকট হইতে ফিরিয়া যায় সে কাফেরে গন্য।

১৩. হজরত আবু উমামা রাঃ থেকে বর্ণিত। ‘এক ব্যক্তি জিজ্ঞেস করলেন, হে আল্লাহর রাসূল! সন্তানের ওপর পিতা-মাতার কি হক রয়েছে? উত্তরে তিনি বললেন, তারা দু’জন তোমার জান্নাত ও জাহান্নাম’।

আমরা বায়েজীদ বোস্তামির ঘটনাটাই মনে করি না কেন! যে ঘটনাতে ছিল মাতৃভক্তির এক উজ্জ্বল দৃষ্টান্ত। যে বায়েজীদ সারারাত পানির গ্লাস হাতে নিয়ে মায়ের মাথার কাছে দাঁড়িয়ে ছিল। ফজরের আযান হল। মা ঘুম থেকে জাগ্রত হলেন। তিনি দেখতে পেলেন বায়েজীদ পানির গ্লাস হাতে নিয়ে দাঁড়িয়ে। মা বললেন হে বায়েজীদ! তুমি এখানে এ অবস্থায় কেন? বায়েজীদ বলল, মা তুমি গভীর রাতে পানি চেয়েছিলে। কিন্তু পানি ঘরে না থাকায় অনেক দূর থেকে পানি এনেছিলাম তোমার জন্য। কিন্তু এসে দেখি তুমি ঘুমিয়ে পড়েছ। তাই যতণ না তুমি ঘুম থেকে উঠবে ততণ আমিএই পানির গ্লাস নিয়ে তোমার মাথার কাছে দাঁড়িয়ে রইলাম। এ কথা শুনার সাথে সাথে বায়েজীদের মা বায়েজীদকে বিছানায় কম্বল দিয় শুইয়ে দিল। আর ফজরের নামায শেষে মা বায়েজীদের জন্য এই বলে দোয়া করলেন যে, হে আল্লাহ আজকে বায়েজীদ আমার জন্য যা করেছে তার জন্য আমার কলিজা ঠান্ডা হয়ে গেছে। হে আল্লাহ আমি তার মা হয়ে দোয়া করি, তুমি তাকে সুলতানুল আরেফীন বানাইয়া দিও। আর সেই দোয়া শেষ পর্যন্ত মঞ্জুর হয়ে গেল।

* আল্লাহ পাক বলেছেন- “তোমার ইবাদতের পরই হচ্ছে তোমার পিতা-মাতা. তাই তোমরা পিতা-মাতাকে সম্মান কর।”

আসুন মা এর সম্মান নিয়ে হযরত আবু হোরায়রা (রাঃ) এর ঘটনা পড়ি।
একদিন হযরত আবু হোরায়রা (রাঃ) রাসুল (সাঃ) এর নিকট এসে কাঁদছেন। রাসুল (সাঃ) জিজ্ঞেস করলেন, হে আবু হোরায়রা তুমি কেন কাঁদছ? আবু হোরায়রা বললেন, আমার মা আমাকে মেরেছেন। রাসুল (সাঃ) বললেন, কেন তুমি কি কোন বেয়াদবী করেছ? আবু হোরায়রা বললেন, না হুজুর কোন বেয়াদবী করিনি। আপনার দরবার হতে বাড়ি যেতে আমার রাত হয়েছিল বিধায় আমার মা আমাকে দেরির কারণ জিজ্ঞেস করায় আমি আপনার কথা বললাম। আর আপনার কথা শুনে মা রাগে আমাকে মারধর করল আর বলল, হয়ত আমার বাড়ি ছাড়বি আর না হয় মুহাম্মদ (সাঃ) এর দরবার ছাড়বি। আমি বললাম, ও আমার মা। তুমি বুড়ি মানুষ। তোমার গায়ে যত শক্তি আছে তত শক্তি দিয়ে মারতে থাকো। মারতে মারতে আমাকে বাড়ি থেকে বের করে দাও। তবুও আমি আমার রাসুলকে ছাড়তে পারবো না। তখন রাসূল (সাঃ) বলেছেন, তোমার মা তোমাকে বের করে দিয়েছেন আর এজন্য আমার কাছে নালিশ করতে এসেছ? আমার তো এখানে কিছুই করার নেই। হযরত আবু হোরায়রা (রাঃ) বললেন, হে রাসূল (সাঃ) আমি আমার মায়ের জন্য এখানে নালিশ করতে আসি নাই। রাসুল (সাঃ) বললেন, তাহলে কেন এসেছ? আবু হোরায়রা বললেন, আমি জানি আপনি আল্লাহর নবী। আপনি যদি হাত উঠিয়ে আমার মায়ের জন্য দোয়া করতেন, যাতে আমার মাকে যেন আল্লাহ হেদায়েত করেন। আর তখনই সাথে সাথে রাসুল (সাঃ) হাত উঠিয়ে আল্লাহর দরবারে দোয়া করলেন, হে আল্লাহ! আমি দোয়া করি আপনি আবু হোরায়রার আম্মাকে হেদায়েত করে দেন।” রাসুল (সাঃ) দোয়া করলেন আর আবু হোরায়রা বাড়ির দিকে দৌড়ে যাচ্ছেন। পিছন থেকে কয়েকজন লোক আবু হোরায়রার জামা টেনে ধরল এবং বললো, হে আবু হোরায়রা! তুমি দৌড়াচ্ছ কেন? তখন আবু হোরায়রা বললেন, ওহে সাহাবীগণ তোমরা আমার জামা ছেড়ে দাও। আমাকে দৌড়াতে দাও। আমি দৌড়াইয়া বাড়িতে গিয়ে দেখতে চাই আমি আগে পৌঁছলাম নাকি আমার নবীজির দোয়া আগে পৌঁছে গেছে। হযরত আবু হোরায়রা দরজায় নক করতে লাগলো। ভিতর থেকে তার মা যখন দরজা খুললো তখন আবু হোরায়রা দেখলেন তার মার সাদা চুল বেয়ে বেয়ে পানি পড়ছে। তখন মা আমাকে বললেন, হে আবু হোরায়রা! তোমাকে মারার পর আমি বড় অনুতপ্ত হয়েছি, অনুশোচনা করেছি। মনে মনে ভাবলাম আমার ছেলে তো কোন খারাপ জায়গায় যায়নি। কেন তাকে মারলাম? আমি বরং লজ্জায় পড়েছি তোমাকে মেরে। হে আবু হোরায়রা! আমি গোসল করেছি। আমাকে তাড়াতাড়ি রাসুল (সাঃ) এর দরবারে নিয়ে চল। আর তখনই সাথে সাথে আবু হোরায়রা তার মাকে রাসুল (সাঃ) এর দরবারে নিয়ে গেলেন। আর তার মাকে সেখানেই কালিমা পাঠ করে মুসলমান হয়ে গেলেন।

ঘটনা গুলো নেয়া হয়েছে এই ব্লগ থেকে:
Click This Link

ধনী হোক কি গরিব,পিতা মাতার প্রতি আসদাচরনের অন্যতম কারণ হচ্ছে আমাদের মাঝে প্রকৃত শিক্ষার অভাব। মনুষ্যত্ব, নৈতিকতা ও মূল্যবোধের অভাব। দিন দিন আমরা আত্মকেন্দ্রিক ও অসামাজিক হয়ে উঠছি। আমাদের জীবনের প্রধান লক্ষ্য হয়ে উঠছে- কিভাবে সমাজে আর্থিকভাবে প্রতিষ্ঠিত হব। আমরা এতই ব্যস্ত যে, নিজের জীবনের অসহায় অবস্থা থেকে বর্তমান অবস্থা পর্যন্ত চিন্তা করারও সময় নেই। মা-বাবার নিঃস্বার্থ সংগ্রাম-সাধনা, অক্লান্ত পরিশ্রমকে আজ বড় হয়ে আমরা মূল্যায়ন করি না। সত্য হলো, তারা আমাদের মুখ থেকে শুধু মূল্যায়নই শুনতে চান। পরিবারের ঐক্য তিনি কামনা করেন। অথচ আমরা লক্ষ করছি- যে বয়সে তাদের যত্নের প্রয়োজন, পারিবারিক সহায়তা ও আন্তরিকতার প্রয়োজন, সেই বয়সেই জীবন বাঁচাতে কেউ ভিক্ষা করছেন এবং অন্যের বাড়ি থাকছেন। অপর দিকে কেউ টাকা পেলেও অসহায়, নিঃসঙ্গ জীবন যাপন করছেন।

একটা শিশুর প্রাথমিক শিক্ষা শুরু হয় তার পরিবার থেকে। তারপর শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান থেকে। তাই পিতামাতার কর্তব্য, তারা যেন সন্তানদের সময় দেন, ধর্মীয় শিক্ষার আলোকে নৈতিক শিক্ষা তথা মূল্যবোধ গড়ে তোলেন; যাতে পরবর্তীকালে সন্তানদের থেকেই তার সুফল পেতে পারেন।
সন্তান হিসেবে আমাদের কাছে সবচাইতে বড় জিনিস হচ্ছে মা বাবা।

মাওলানা সাহেবের দোয়া, পীর সাহেবের দোয়া, কবুল হতেও পারে, নাও হতে পারে। ৫০-৫০। কিন্তু মা বাবার দোয়া কবুল হবে, ১০০% নিশ্চিত।

“প্রত্যেক মা-ই নারী। কিন্তু প্রত্যেক নারী ‘মা’ নন। মা হওয়া আল্লাহ-প্রদত্ত অনুগ্রহ। তাই এর শুকরিয়া আদায়ের লক্ষ্যে তার দায়িত্বানুভূতির আলোকে স্বীয় কর্তব্য পালনে এগিয়ে আসতে হবে। মায়ের যেমন মর্যাদা বেশি, তেমনি মায়ের দায়িত্বও বেশি। মায়ের কাজ হলো মানব বাগানে ফুল প্রস্ফুটিত করা, মানব বংশ সম্প্রসারণ সংরক্ষণ ও প্রসূত সন্তানের জীবনকে সুন্দর পরিপাটি ও পরিমার্জিত করে গড়ে তোলা। ভবিষ্যৎ প্রজন্মকে সাচ্চা মুসলিম, সচ্চরিত্রবান, সৎ ও যোগ্যতম সুনাগরিক এবং আদর্শ দেশপ্রেমিক হিসেবে গড়ে তোলা।

একটি শিশুর সুষ্ঠু প্রতিপালনের ওপর নির্ভর করে তার ভবিষ্যৎ। যে প্রজন্মের ওপর রাষ্ট্রভার থেকে শুরু করে সমাজের প্রতিটি গুরুদায়িত্ব অর্পিত হবে, তাদের লালন-পালন যদি সুষ্ঠু, সুন্দর ও আদর্শিক না হয়, তাহলে ভবিষ্যৎ প্রজন্মই শুধু বিনষ্ট নয়, সুখী-সমৃদ্ধশালী ও কল্যাণকর সমাজ উপহার দেয়ার স্বপ্ন স্বপ্নই থেকে যাবে।


কাজেই আল্লাহর সৃষ্টির উদ্দেশ্য সার্থক করতে ‘মা’ তার দায়িত্ব পালন করবেন। আর সন্তানরা মায়ের অধিকার আদায়ে তার ভরণ-পোষণ, সেবা-যত্ন, দেখাশোনাসহ যাবতীয় হক আদায়ে দিবানিশি সজাগ দৃষ্টি পালন করবেন। জীবিত অবস্থায় যেমন তার সুখী জীবন ও কল্যাণ কামনা করতে হবে, তেমনি তার মৃত্যুর পরও সুখী জীবন ও কল্যাণ কামনার দোয়া করতে হবে।

আল্লাহপাক এ দোয়ার পদ্ধতি শিখিয়ে দিয়ে বলেছেন¬ বলুন! " হে প্রভু, আমার মাতাপিতাকে দয়া ও রহমত কর, যেরূপ আমার শৈশবে তারা আমাকে করেছে।

No comments:

Post a Comment