Labels: , , ,

দাওয়াহ দিন বিনম্র শব্দ ব্যবহারে

●|● দাওয়াহ দিন বিনম্র শব্দ ব্যবহারে ●|●

অনেক সময়ই মানুষ উপদেশ গ্রহণ করেনা এ কারণে যে, তারা আত্মমর্যাদাবোধে পরিপূর্ণ থাকে। আমি যদি আমার কাজিন কিংবা আঙ্কেলকে কোনো উপদেশ দিতে যাই (তারা বলবেন) "বিরক্ত করো না! কেন শুধু শুধু আমার সময় নষ্ট করছো?" তাদের প্রকাশভঙ্গি এমন হবে যে তারা কথাটা শুনতে চাইছেন না। কারণ তাদের মনে কাজ করে আমি তোমাকে কেন জিতিয়ে দেব? আমাকে কেন তোমার কথা শুনতে হবে? তুমি নিজেকে কী মনে কর?
কিন্তু যখন আপনি চলে গেলেন হয়তো তারা ভাববে, "সে ঠিকই বলেছিলো। আমার ওর কথা শোনা উচিত ছিলো।" তবে তারা আপনার কাছে তা প্রকাশ করতে চাইবেন না কারণ এটা তার আত্মমর্যাদার বিষয়। তাই না? আর এতে কোনো সমস্যা নেই। 

আমাদের মানুষকে এমনভাবে দাওয়াহ দিতে হবে না যে আমাদের কথা শোনামাত্র তারা নিজেদের জীবনপদ্ধতি পাল্টে ফেলবেন। হৃদয়ের পরিবর্তন তো আমাদের হাতে নেই। তবে আমাদের কর্তব্য হলো বারবার তাদের স্মরণ করিয়ে দেয়া। এটাই সকল নবীর প্রদত্ত শিক্ষা।

নবীরা যুগের পর যুগ মানুষের মাঝে কোনো পরিবর্তন দেখতে পাননি। আর আল্লাহ আমাদের নবী (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম) কে কী উপদেশ দিয়েছিলেন?
"আপনি এর চেয়ে ভালো বক্তা পাবেন না..."
"আপনি এর চেয়ে ভালো বার্তা পাবেন না..."
"আপনি এর চেয়ে ভালো শ্রোতা পাবেন না যারা এই বার্তা সরাসরি বুঝতে পেরেছিলো…" (কুরাঈশদের মতো)।
কল্পনা করুন সেই জাতিকে যারা সর্বশ্রেষ্ঠ বার্তা শুনতে পেয়েছিলো সর্বশ্রেষ্ঠ শিক্ষকের কাছ থেকে টানা দশ বছর ধরে, তারপরেও এর মূল্যায়ন করেনি। চিন্তা করতে পারেন, কতটা একগুঁয়ে জাতি তারা। তাদের ব্যাপারে আল্লাহ তাঁর রাসূল (সা)-কে কী বলেছেন? বলেছেন, "তাদেরকে স্মরণ করিয়ে দিতে থাকুন। আপনার কাজ কেবল মনে করিয়ে দেওয়া। আন্তরিক ও সহানুভুতিশীল উপদেশ দেওয়া।"

সহানুভুতিশীল উপদেশ দেওয়ার অর্থ হলো অন্যের ভালো চাওয়া। আপনার কাজ এটা না যে আপনি শুধু তাদের বলবেন যে তারা জাহান্নামে যাচ্ছে, তারা যা করছে তা ভুল। আপনি তাদের ভালো চাইছেন। ঠিক যেমনটা আপনি নিজের সন্তানের ভালো চান, নিজের ভাইয়ের ভালো চান। আর অন্যভাবে ভেবে দেখলে তারা আপনার ভাইয়ের মতোই। কারণ আমাদের আদি পিতা একজনই... আদম (আ)। তো তারা আসলেই আপনার-আমার ভাই-বোন। এটা বুঝানোর জন্যেই আল্লাহ বলেছেন আমরা একই বাবা-মা এর কাছ থেকে এসেছি… যেন আমরা একে অপরকে নিজের পরিবারের সদস্য মনে করি।

তাই উপদেশ দিতে হবে অকৃত্রিম সচেতনতার সাথে। অনেক সময়ই মানুষ যে পদ্ধতিতে উপদেশ দেয় সেটা খুবই অপমানজনক। "কী ব্যাপার বোন? আপনি হিজাব পড়ছেন না কেন? আপনি জানেন না এটা ইসলামের আদেশ? কেমন মুসলিম আপনি?" -- আপনার মা যদি হিজাব না করতেন তাহলে কি তাঁকে এভাবে উপদেশ দিতেন? মানুষের সাথে কথা বলার একটা সৌন্দর্য আছে। আর নবীরা আমাদের তা শিক্ষা দিয়ে গিয়েছেন। শুধু কী বলতে হবে সেটা না, কীভাবে বলতে হবে সেটাও।

আমাদের অনেকটা আন্তরিক থাকতে হবে আল্লাহর বানী পৌঁছে দেয়ার সময়। কারণ এই আন্তরিতাই মানুষের মনকে বিগলিত করতে পারে।
ইউটিউব লিঙ্কঃ https://youtu.be/bivxB6oqPwo

No comments:

Post a Comment