Labels: , , ,

সন্তানকে কীভাবে ইসলামের শিক্ষা দিবেন (১ম পর্ব)

আসসালামু আলাইকুম ওয়া রহমাতুল্লাহ। ‘কেমন আছেন?’ 

(২ঃ১৩২) وَوَصَّىٰ بِهَا إِبْرَاهِيمُ بَنِيهِ وَيَعْقُوبُ يَا بَنِيَّ إِنَّ اللَّهَ اصْطَفَىٰ لَكُمُ الدِّينَ فَلَا تَمُوتُنَّ إِلَّا وَأَنْتُمْ مُسْلِم ইনশাআল্লাহ আজকের সংক্ষিপ্ত আলোচনার শুরুতে আমি প্রথমেই ধন্যবাদ জানাতে চাই আমাকে এখানে আমন্ত্রণ জানানোর জন্যে। এখানে আসতে পেরে আমার বেশ ভালো লাগছে।আল্লাহ আযযা ওয়াজাল এই কমিউনিটি কে বরকত দান করুন...এখানকার মসজিদটিতে সব সময় মানুষের উপস্থিতি বজায় থাকুক...বিশেষ করে ফজর এবং ইশার সময়টিতে...এবং আল্লাহ যেন মসজিদটিতে তরুণদের উপস্থিতি দিয়ে ভরে তুলুক...সকাল আর সন্ধ্যায় । আমীন ইয়া রব! আমি আজকে আপনাদেরকে যা বলতে চাই তা হল আমি কিছু আয়াত সম্পর্কে ব্যাখ্যা করতে চাই যার উপর আমি আগেও দুরুস দিয়েছি কিন্তু আজকে একটু ভিন্ন আঙ্গিকে তা আপনাদের কাছে উপস্থাপন করার চেষ্টা করব। এছাড়াও আমি আসলে শুরুতে... কুরআনের প্রেক্ষাপটের বাইরে থেকে কথা বলব।আর তা হলো...

আমাদের সন্তানদের প্রতি যে সচেতনতা কাজ করে এটা আসলে আমাদের দ্বীনের ভিত্তি। ব্যাপারটা কোনো নতুন কিছু না যা আমরা মাত্র উপলব্ধি করতে শুরু করেছি, আমাদের ভবিষ্যৎ প্রজন্মের জন্যে যে চিন্তা কাজ করে এটা আমরা পেয়েছি আমাদের পিতা ইব্রাহীম (আ) এর কাছ থেকে। আসলে তাঁরও আগে আমরা প্রথম যেই সচেতন বাবার কথা জানতে পেরেছি তিনি ছিলেন নুহ (আ)। নুহ (আ) তাঁর সন্তানের ব্যাপারে বেশ উদ্বিগ্ন ছিলেন।তিনি আল্লাহ আযযা ওয়াজাল এর কাছে তাঁর সন্তানকে উদ্ধারের জন্যে প্রার্থনা করেছিলেন। তো আমাদের সন্তানের দ্বীনি বিষয়ে আমাদের সচেতনতা এই ধর্মের বহু পুরানো ভিত্তি। এই ধর্মের এটি একটি মৌলিক অংশ। আর আল্লাহ আযযা ওয়াজাল আমাদের একটা বিষয় শিখাতে চেয়েছেন, আমাদের বেশ কয়েকবার এমন নবীদের ব্যাপারে জানিয়ে যাঁদের নিজ সন্তানেরা সমস্যাগ্রস্ত ছিল। অনেকবার! ইব্রাহীম (আ) কে আল্লাহ অত্যন্ত নেককার দুজন সন্তান দিয়েছিলেন… তাঁকে দিয়েছিলেন ইসমাঈল এবং ইসহাক। তিনি দুজন অপূর্ব সন্তান পেয়েছিলেন...কিন্তু নুহ (আ) ...তেমন পাননি।


 ইয়াকূব (আ) … কয়েকজন অনুগত সন্তান আবার কয়েকজন সমস্যাগ্রস্ত। তবে বেশিরভাগই অবাধ্য ছিলেন, তাই না? তার মানে আমাদের নবীদের মধ্যেই এমন কয়েকজন আছেন যাঁরা সন্তানের ব্যাপারে দুশ্চিন্তায় ছিলেন। আর এ কথাটা মাথায় রাখা জরুরি কারণ যদি নবীদের তাঁদের সন্তানের ব্যাপারে সমস্যায় পড়তে হয়, তাহলে আপনি, আমি... আমরা যতই চেষ্টা করি না কেন… আমরা সন্তানের ব্যাপারে আমাদের সমস্যা কে এড়িয়ে যেতে পারব না! এটা আল্লাহর ক্বদরেরই অংশ।আল্লাহ আমাদের কয়েকজনকে অনুগত সন্তান দান করবেন, কিংবা আমাদের কিছু সন্তান হবে অনুগত আবার কিছু সন্তান আমাদের জন্যে পরীক্ষাস্বরূপ হবে।আর আমাদের সব ধরনের সন্তানকেই বড় করে তুলতে হবে।এটা আমাদের দ্বীনেরই একটা অংশ, আমাদের জীবনের অংশ।

দুটি বাচ্চা কখনোই একই রকমের হবে না।কেবল একটা সূত্র প্রয়োগ করে আপনার সব বাচ্চাকে বড় করতে পারবেন না।উদাহরণস্বরূপ ইয়াকূব (আ) এর কথাই ধরুন, আমরা এটা বিশ্বাস করি না যে তিনি ইউসূফ (আ) কে বেশি স্নেহ করেছিলেন এবং অন্যদের প্রতি কম যত্ন নিয়েছিলেন তাই তারা অমন আচরণ করেছিলো।তিনি একজন নবী ছিলেন।অবশ্যই একজন নবীর অন্যতম প্রধান কাজ হল ন্যায়নিষ্ঠ ভাবে জীবনযাপন করা।আর আপনি যদি আপনার এক সন্তানের প্রতি স্নেহশীল হন আর অন্য সন্তানের প্রতি তা না হন তাহলে তাতে সুবিচার করা হল না।আমরা ইয়াকূব (আ) এর কাছে এমনটা আশা করি না।অর্থাৎ বাবা হিসেবে যতটুকু করা সম্ভব ছিল তিনি করেছিলেন কিন্তু তারপরেও তাঁর সন্তানেরা তাঁকে পরীক্ষায় ফেলেছিলেন।আলহামদুলিল্লাহ! শেষে তারাও তাওবা করেছিলেন...আর এটা তাঁর প্রতি আল্লাহর উপহার। কিন্তু যেমনটা আমি বলেছিলাম নূহ (আ) এর ক্ষেত্রে তাঁর ছেলে শেষ পর্যন্ত তাওবা করেনি।আবার তাঁরা নবী ছিলেন দেখে আপনি হয়ত ভাবতে পারেন যে…কারও খুব ভাল চাকরি থাকলে তাতে বাড়তি সুযোগ সুবিধা থাকে।যেমন আপনাদের কেউ কেউ খুব ভালো চাকরি করেন তাই আপনার পুরো পরিবারের জন্যে আপনি হেলথ ইন্স্যুরেন্স পাচ্ছেন!তাই না? একজন নবীর চাকরি তো বেশ ভালো পদের...তিনি আল্লাহর কর্মচারী!এখানে তো তিনি কিছু সুযোগ সুবিধা পেতে পারেন… ‘


আমি অন্তত আমার পরিবারের ব্যাপারে নিশ্চিন্ত থাকতে পারি।’ কোন নবীকেই তাঁর পরিবারের নিশ্চয়তা দেওয়া হয়নি...না তাঁর স্ত্রী...না তাঁর সন্তান।এমনকি আমাদের নবী মুহাম্মাদুর রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম এর ক্ষেত্রে...একটা অভাবনীয় হাদীসে আপনারা দেখবেন যে তিনি যখন তাঁর সন্তানের সঙ্গে কথা বলছেন...কথা বলছেন উম্মুল মু’মিনীন ফাতিমা (রা)...ফাতিমা তুয যাহ্‌রা (রা) এর সঙ্গে, তিনি বলছেনঃ “ ফাতিমা, মুহাম্মাদের কন্যা! আল্লাহর ব্যাপারে সতর্ক হও, আল্লাহর ব্যাপারে সাবধান থাকো।কারণ আল্লাহর সামনে আমি তোমাকে কোন সাহায্য করতে পারব না, তোমার উপরেও আমার কোন অধিকার থাকবে না!” তিনি এই কথা বলছেন নিজের মেয়েকে! (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম) অন্য কথায় তিনি আমাদের খুবই গুরুত্বপূর্ণ কিছু শিখাতে চাইছেন।কেবল আমরা মুসলিম হয়েছি বলে, আমরা আমাদের সাধ্যমত চেষ্টা করছি বলে...আমরা এমন সন্দেহ পোষণ করতে পারিনা যে আমাদের নবীজী (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম) তাঁর সর্বোচ্চ প্রচেষ্টার চেয়ে কোন অংশে কম করেছেন। তিনি ভবিষ্যতের সকল বাবাদের জন্যে আদর্শ।বিশেষ করে কন্যা সন্তানের বাবাদের জন্যে।

আমরা যারা এখানে বসে আছি এবং আমাদের মধ্যে যাদের মেয়ে আছে আমরা তো অনুগৃহীত… আমরা সম্মানিত নবীজীর (স) সুন্নাহকে বহাল রাখতে পেরে।কারণ তিনিও ছিলেন কন্যা সন্তানের বাবা।তাঁর ছেলেও হয়েছিল কিন্তু তারা খুব অল্প বয়সেই মারা গিয়েছিল।আল্লাহ তাঁকে একাধিক মেয়ে সন্তান উপহার দিয়েছিলেন এবং তাঁদের লালন পালনের দায়িত্ব উপভোগ করতে দিয়েছেন।এটা এমন একটা দায়িত্ব যার জন্যে আমাদের সম্মানিত বোধ করা উচিত।এ কারণে মেয়ে সন্তান হওয়ার ব্যাপারে আমাদের চিন্তা ধারণা বদলে গিয়েছে।ইসলামের পূর্বে...উদাহরণস্বরূপ ইণ্ডিয়াতে মেয়ে সন্তান হওয়ার যে কালচার...ইসলামের পূর্বে... এমনকি আরব দেশেও যখন আপনার মেয়ে সন্তান হত আপনি আপনার চেহারা বিকৃত করতেনঃ এহ! এখন আমি সমাজকে মুখ দেখাব কিভাবে। 


এই যুগে এসেও মুসলিম সমাজে...আপনাদের কারও কারও পরিবারেই… আপনি আপনার স্ত্রীকে নিয়ে হাসপাতালে আছেন।সে প্রায় মরেই যাচ্ছিলো সন্তান জন্ম দিতে গিয়ে। কিন্তু সন্তান জন্মের সঙ্গে সঙ্গে আপনার মা আপনাকে টেক্সট করলেনঃ ‘ভালো খবর তো?’ এ কথার মানে কি?তিনি আসলে জিজ্ঞেস করেছেন ছেলে হয়েছে কিনা।এরপর আপনি কোনো উত্তর না দিলে তিনি আপনাকে সান্ত্বনা দিয়ে বলেনঃ অসুবিধা নেই, এর পরের বার হবে ইনশাআল্লাহ।যেন মেয়ে হওয়ার ব্যাপারটা খুবই দুঃখজনক। সুবহানাল্লাহ।কত নিচে নেমে গিয়েছি আমরা।আল্লাহ আসলে সেসব মানুষের ব্যাপারে কুরআনে অভিযোগ করেছেন যারা তাদের কন্যা সন্তানকে মর্যাদা দেয় না।যখন মেয়ে জন্ম নেয়... তার মুখ কালো হয়ে যায়।যেন কালোমেঘ তার মুখকে ঢেকে রেখেছে আর সে হতাশায় ডুবে ভাবছে আমার এই মাত্র একটা মেয়ে হয়েছে। সুবহানাল্লাহ। তো আমাদের সন্তানদের ব্যাপারে দুশ্চিন্তা করা নিয়ে কথা বলার আগে আমাদের প্রথমে ভাবা উচিত বাবা-মা হিসেবে আমরা কতটা যোগ্য।এ বিষয়টা প্রথমে খেয়ালে আনতে হবে।আর এটা আসলে বেশ বড় একটা সমস্যা।তবে এটা আমার সূচনা নয়।আমি যা বলে শুরু করতে চাচ্ছিলাম যা আমি আগে বলছিলাম যে,সন্তানের প্রতি সচেতনতা আমাদের দ্বীনেরই ভিত্তি।এই দ্বীনের একটা মৌলিক অংশ।আর এটা এমন একটা বিষয় যাতে প্রজন্মান্তরে আমরা যথেষ্ট সফল।আলহামদুলিল্লাহ।সন্তান বড় করার কাজে আমরা বেশ ভালো... যুগ যুগ ধরে।অবশ্যই পৃথিবী অনেক বদলে গিয়েছে নবীজীর (স) এর যুগের পরে।কিন্তু সন্তান লালন পালনে মুসলিমদের সফলতা অন্য কিছুর তুলনায় অনেক ভালো ছিল...বর্তমান সময়ের আগ পর্যন্ত।

আজকের দুনিয়া এতটা আকস্মিকভাবে ভাবে বদলে যাচ্ছে যে, এটা শুধু সরকার কিভাবে পরিচালিত হবে তাতে প্রভাব রাখছে না, এটা আমাদের অর্থনীতিতে, কিভাবে এক দেশ অন্য দেশের সাথে সম্পর্ক বজায় রাখছে, কিভাবে ইন্ডাস্ট্রি গড়ে উঠছে শুধু তাতেই প্রভাব বিস্তার করছে না বরং এটা আমাদের পরিবারগুলোকেও প্রভাবিত করছে।শুধু মুসলিম পরিবার নয়...সকল পরিবার।বর্তমান বিশ্ব নাটকীয়ভাবে পরিবর্তিত হয়ে যাচ্ছে।আমাদের পরিবারের এখন যেমন অবস্থা দেখতে পাচ্ছি এর আগে কখনো এমনটা ছিলো না।সন্তানদের এখন যেভাবে বড় করা হচ্ছে ইতিহাসের আর কোন যুগে কিংবা অন্য কোন সংস্কৃতিতে এমন আকার ধারণ করেনি।শুধু মুসলিম সংস্কৃতির ক্ষেত্রে নয়, সবার ক্ষেত্রেই।বিশ্বায়ন আর যোগাযোগ ব্যবস্থার বৃহৎ উন্নয়নের কারণে...তার উপর ভোগবাদের চরম পর্যায় সৃষ্টি হওয়ায়...আমি একে পুঁজিবাদ বলি না বরং বলি ভোগবাদ...আমরা পণ্যের আসক্ত ভোক্তায় পরিণত হয়েছি। আর এই মানসিকতা আমাদের ঘরের ভিতরেও প্রবেশ করে ফেলেছে।আমি একটা ছোট্ট উদাহরণ দিচ্ছি আমি যা বলছি সে ব্যাপারে।আপনাদের বাচ্চারা…যেহেতু আপনারা অনেকেই এখানে অভিভাবক...আপনাদের কাছে কি নিয়ে সবচেয়ে বেশি আবদার করে বলুন তো? তারা কিসের জন্যে সব সময় বায়না ধরে বসে থাকে?



(ক্যান্ডি!)
ক্যান্ডি? মা শা আল্লাহ, সত্যিই আপনার তো বেশ সরলমনা বাচ্চাকাচ্চা আছে, তারা আপনার কাছে কেবল ক্যান্ডি চেয়েছে!
(Nintendo!)
আচ্ছা...আরও বলতে থাকুন।
(আইপড!)
আইপড, প্লে স্টেশন…
(গাড়ি!)
গাড়ি? তারা বড় হয়ে গিয়েছে?
খেলনা… অধিকাংশ ক্ষেত্রেই তারা এসব আইপডের খবর কোথায় পায়? তারা কি স্বপ্নে দেখতে পায়, যেমন ইউসূফ (আ) দেখেছিলেন, এগারো টা তারা আর চাঁদ।তো তারা কি স্বপ্নে দেখে ফেলেছে অ্যাপেল প্রোডাক্ট? যেন, ‘আব্বু, আমি দেখেছি যে একটা আপেল একটা ফোনের উপরে...এই স্বপ্নের মানে কি?’ না, না! তারা কোথায় দেখেছে আইফোন?হয় তাদের বন্ধুর কাছে এসব আছে অথবা টিভিতে দেখেছে...তারা যখন দেখল তার অন্য বন্ধুদের এসব আছে তারা আপনাদের বলে ‘আমি ওরকম স্নিকার চাই’ ‘আমি ওরকম শার্ট চাই’ ‘আমি ওরকম খেলনা চাই’।এসমস্ত খেলনার আইডিয়া তারা কোথায় পায়?এসবের ইলহাম কোথা থেকে আসে? এগুলো এসেছে মিডিয়া থেকে।আমরা আমাদের বাচ্চাদের সামনে মিডিয়ার জগতটা উন্মুক্ত করে দেই, আর এই মিডিয়া, বাচ্চাদেরকে তারা মূলত এসব খেলনার জন্যে করজোড় বায়না করতে শিখায় যেন আমরা তাদের এসমস্ত খেলনা কিনে দেই...আর তখন আমরা এগুলো কিনি।তাছাড়া বাচ্চারাই যে এসবের একমাত্র শিকার তা কিন্তু নয়, আমরাও এর অন্তর্ভূক্ত।

আমরা যেসব ব্র্যান্ড এর জামা কাপড় পরি...আপনি আসলে নিজেকে খুব high class মানুষ ভাবতে শুরু করেন হঠাৎ করেই, যখন আপনি একটা দামি ঘড়ি পরেন।হঠাৎ যেন আপনার মনে হতে থাকে সব মানুষের ভিড়ে আপনার মান-মর্যাদা বেশি।যেই মুহূর্তে আপনি অ্যাপেল স্টোর থেকে একটা আইফোন হাতে নিয়ে বেরিয়ে আসেন হঠাৎ যেন আপনার নিজেকে খুব handsome লাগে!...কিছু একটা তো হয়েছে...আমি বুঝতে পারছি না আমি কিভাবে এত cool হয়ে গেলাম, এটা just হয়ে গেলো! আমরা আসলে ভেবে নিই মানুষ হিসেবে আমাদের মর্যাদা বেড়ে গিয়েছে...এসব পণ্যের ক্রেতা হয়েছি বলে। আর আপনি যদি কোনো ব্র্যান্ড এর কাপড় না পরেন, অথবা ওই ফোনটা যদি আপনার না থাকে কিংবা আপনার এই খেলনাটা নেই অথবা ওই খেলনা টা নেই...তাহলে আপনি মূল্যহীন।কোনো কারণে আপনি অন্যদের সমমান সম্পন্ন নন।অন্যেরা আপনার চেয়ে ভালো।শুধু এই কারণে যে তাদের হাতে যেটা আছে সেটা আপনারটার থেকে ভালো।তো আমরা, মুসলিমরা, আমারা কেমন যেন অচেতন ভোক্তায় পরিণত হয়ে গিয়েছি...এমনটাই আমাদের অবস্থা।

আমরা এই সমাজে সন্তান লালনের কথা বলার আগে আমাদের এটা বুঝতে হবে যে আমাদের চারপাশের দুনিয়াতে কি হচ্ছে।আমাদের সকলের সঙ্গে কি হচ্ছে আর সারা দুনিয়াতে কি হচ্ছে।কার্যকর উপায়ে সন্তান লালনের কথা ভাবার আগে আমাদের এসব ব্যাপার ভেবে দেখতে হবে।এটা বেশ বড় একটা সমস্যা।দ্বিতীয় বড় সমস্যাটা হল আপনার কাছে সাফল্যের মানে কি, কিসে আপনার মর্যাদা বাড়ায়। এখন তো বাচ্চাদের এই মানসিকতা দিয়ে বড় করা হচ্ছে যে তাদের মূল্য এসব প্রোডাক্ট দ্বারা নির্ধারিত হয়...যে ব্র্যান্ডের কাপড় পরছেন, যে বাসায় থাকছেন, যেই গাড়িটা চালিয়ে তাকে স্কুলে দিয়ে আসছেন, যে ব্র্যান্ডের ব্যাগ কাঁধে নিচ্ছেন...এসব ব্যাপার।এগুলোই আপনার মূল্য যাচাই করছে।আর এর সাথে যোগ হয়েছে আরও একটা সমস্যাঃ ‘জীবনে সফল হওয়া বলতে কী বুঝায়?’

(ইনশা আল্লাহ চলবে...)

No comments:

Post a Comment